অর্থপাচারকারী, ঋণখেলাপীদের স্বার্থরক্ষায় সরকার ব্যস্ত: বামজোট

শুক্রবার টিকাটুলির রাজধানী সুপার মার্কেট থেকে জুরাইন রেলগেট পর্যন্ত পদযাত্রা ও সমাবেশ করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।

বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, রাষ্ট্র ক্ষমতায় থেকে খেলার নামে যারা বর্তমানে ও অতীতে জনগণের সঙ্গে ফাউল করেছে তাদের লাল কার্ড দেখাতে হবে। এজন্য সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, 'রাজনীতিকে যারা খেলায় পরিণত করেছে তাদের বিপরীতে সাধারণ মানুষের স্বার্থরক্ষায় নীতিনিষ্ঠ রাজনৈতিক শক্তির বিকল্প শক্তি গড়ে তোলা ছাড়া দেশের রাজনৈতিক সংকট থেকে মুক্তি নেই।'

আজ শুক্রবার বিকেল ৪টায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের আয়োজনে ঢাকার টিকাটুলির রাজধানী সুপার মার্কেট থেকে জুরাইন রেলগেট পর্যন্ত পদযাত্রা ও সমাবেশে অংশ নিয়ে রুহিন হোসেন প্রিন্স এসব কথা বলেন।

দুর্নীতি, দুঃশাসন রুখে দাঁড়ানো, ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, নিত্যপণ্যের দাম কমানো, রেশনিং ন্যায্যমূল্যের দোকান চালু, পাচারের টাকা-খেলাপী ঋণ উদ্ধার, দুর্নীতি-লুটপাটকারীদের শাস্তি, নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার ও নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে বাম জোটের চলমান কর্মসূচিতে বাম জোটের ঢাকা মহানগর নেতাকর্মীরা এই পদযাত্রা করে।

বাম গণতান্ত্রিক জোট ঢাকা মহানগরের সমন্বয়ক ডা. সাজেদুল হক রুবেলের সভাপতিত্বে এসময় জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রুহিন হোসেন প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেতা মানস নন্দী, ডা. হারুনুর রশিদ, শহীদুল ইসলাম সবুজ, জলি তালুকদার, খালেকুজ্জামান লিপন, ডা. জয়দীপ ভট্টাচার্য, বিধান দাশ, তৈমুর খান অপু, রুবেল শিকদারসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশে রুহিন হোসেন প্রিন্স আরও বলেন, 'লুটেরা ব্যবসায়ী, টাকা পাচারকারী, ঋণখেলাপী আর হুন্ডি ব্যাবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার ব্যস্ত। আর নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ। ওষুধের সীমাহীন মূল্যবৃদ্ধি জনজীবন নাকাল। এর মধ্যে আরেকবার বিনাভোটে ক্ষমতায় যেতে নানা ফন্দির চেষ্টা করছে বর্তমান সরকার।'

তিনি এখনই নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তদারকি সরকারের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা শুরুর আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'কথার মারপ্যাঁচে জনগণকে আর ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।'

বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সমালোচনা করে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, 'কাদের পরামর্শে অপ্রয়োজনীয় বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করে উৎপাদন না করেও তাদের টাকা দিতে হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। ভুল নীতি, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা দূর করুন -বিদ্যুতের দাম বাড়াতে হবে না, বরং কমানো যাবে।'

তিনি দেশের সব মেগাপ্রকল্প ও ঢাকা শহর উন্নয়নের নামে বর্তমান ও অতীত দিনের প্রকল্পসমূহের শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানান।

তিনি বলেন, 'মুক্তবাজার অর্থনীতির নামে চলমান লুটপাটের অর্থনীতিতে সম্পদ বৈষম্য বেড়েই চলেছে। অল্প সংখ্যক মানুষের হাতে সম্পদ কেন্দ্রীভূত হচ্ছে। অন্যদিকে বিত্তহীন মানুষের সঙ্গে অনেক মধ্যবিত্ত বিত্তহীনে পরিণত হচ্ছে। এই মুক্তবাজারের অর্থনৈতিক ধারা আমাদের সংবিধান সম্মত না।'

তিনি বলেন, 'এই ঢাকা শহরেই টিসিবির গাড়ির সামনে লাইন লম্বা হচ্ছে আর লুটেরার ব্যাংক উজাড় করছে।'

তিনি সারাদেশে রেশন ব্যবস্থা চালু, কর্মহীন মানুষের কাজের নিশ্চয়তার দাবি জানান।

সমাবেশে বক্তারা আগামী ২ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও পদযাত্রা সফল করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশি-বিদেশি লুটেরা ও আধিপত্যবাদীরা সাধারণ মানুষের চোখে ধুলো দিয়ে দ্বি-দলীয় ধারার মধ্যে বন্দি করতে চাইছে। এর থেকে মুক্তি পেতে দুঃশাসনের অবসান ও ব্যবস্থা বদল করতে হবে। এজন্য বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে যার যার নিজস্ব দাবিতে ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Why 1971 still casts a shadow in Bangladesh-Pakistan relations

The truth of the 1971 remains buried in denial, distortion, and evasion

2h ago