ফ্যাসিবাদী সরকার নাগরিক অধিকার হরণ করছে: বাম জোট

সংবাদ সম্মেলনে বাম জোটের নেতারা। ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান সরকারকে 'ফ্যাসিবাদী' অভিহিত করে বাম গণতান্ত্রিক জোটের এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, সভা-সমাবেশ-মিছিলে বাধাদান করে আওয়ামী লীগ সরকার নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকারকে ক্রমাগত হরণ করে চলেছে। সরকারের দুঃশাসন ও লুটপাটের কারণে জাতীয় ও জনজীবনে সংকট সর্বগ্রাসী রূপ নিয়েছে।

আজ শুক্রবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এই সংবাদ সম্মেলন থেকে জোট নেতারা বিএনপি অফিসে হামলা, টিয়ার শেল নিক্ষেপ ও 'হত্যাকাণ্ডের' সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিচার এবং মির্জা ফখরুলসহ গ্রেপ্তার বিএনপি নেতাদের মুক্তি ও গায়েবি মামলা বন্ধের দাবি জানান। পাশাপাশি পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় নিহতের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান, আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবিও জানানো হয়।

সেইসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে 'গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের প্রতিবাদে এবং ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায়' আগামী ১৩ ডিসেম্বর দেশব্যাপী প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাম জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।

সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, 'গণতন্ত্রহীনতা ও অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশে বিদেশি শক্তি ও দেশের অভ্যন্তরের অন্ধকারের শক্তিও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ আজ অসৎ রাজনীতিবিদ, সামরিক বেসামরিক আমলা, অসৎ ব্যবসায়ী এবং টাকা পাচারকারী, ঋণখেলাপি, ব্যাংক ডাকাত ও বাজার সিন্ডিকেটের দখলে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে মানুষ যখন উদগ্রীব হয়ে রাস্তায় নামছে তখন পুলিশ দিয়ে মানুষ খুন করে, গায়েবি মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করে দমন পীড়নের পথে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে চাইছে।'

তিনি আরও বলেন, 'রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশ ও মিছিল করার অধিকার দেশের সংবিধান দ্বারা সংরক্ষিত। কিন্তু শাসক সরকার জনগণের সকল সাংবিধানিক অধিকার হরণ করে দেশকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।'

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, 'পাল্টাপাল্টি বাকযুদ্ধের পর ৮ ডিসেম্বর রাতে জনসভার স্থান নিয়ে সমঝোতায় আসার খবর শুনে মানুষ যখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছিল, তার পরপরই গভীর রাতে মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় পুনরায় জনমনে উৎকণ্ঠা বেড়ে গিয়েছে।

'দেশে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা ও জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব সরকারের। অথচ গতকাল দলীয় নেতাকর্মীদের এক সভায় দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর "যে হাত দিয়ে মারতে আসবে সে হাত ভেঙে দিতে হবে", "যে হাত দিয়ে আগুন দিতে আসবে সে হাত আগুনে পুড়িয়ে দিতে হবে"- এ ধরনের বক্তব্য সংঘাত সংঘর্ষকে উসকে দেওয়ার সামিল।'

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আব্দুস সাত্তার, বাসদের (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী, প্রমুখ।

Comments

The Daily Star  | English
BNP's stance on president removal in Bangladesh

BNP for polls roadmap in 2 to 3 months

Unless the interim government issues a roadmap to the next election in two to three months, the BNP may take to the streets in March or April next year, say top leaders of the party.

7h ago