টাকা পাচারকারী ও ঋণ খেলাপিদের তালিকা প্রকাশের দাবি সিপিবির

সোমবার রাজধানীর পল্টনে সিপিবির বিক্ষোভ মিছিল। ছবি: সংগৃহীত

টাকা পাচারকারী ও ঋণ খেলাপিদের তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।

সোমবার রাজধানীর পল্টনে এক সমাবেশে সিপিবি নেতৃবৃন্দ বলেন, 'ক্ষমতাসীনদের প্রশ্রয় ছাড়া টাকা পাচার, ব্যাংক ঋণ, ঋণ খেলাপির নামে ব্যাংক লুটের ঘটনা ঘটতে পারে না। মুক্তবাজারের নামে চলমান লুটপাটের অর্থনীতি এসবের ভিত্তি।'

এ অবস্থায় দুর্নীতি, লুটপাট প্রতিরোধে চলমান দুঃশাসনের অবসানের সঙ্গে সরকার ব্যবস্থা পাল্টাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তারা।

সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে সমাবেশে দলটির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মানবেন্দ্র দেব বক্তব্য দেন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, 'এক দিকে নানা মাধ্যমে টাকা পাচার ও খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। অন্যদিকে সমাজে বৈষম্য বাড়ছে। অসৎ আমলা, অসৎ ব্যবসায়ী আর অসৎ রাজনীতিক, এই দুর্বৃত্তায়িত চক্রই দেশ চালাচ্ছে। তার অনিবার্য পরিণতি, পর্যাপ্ত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও দেশের উন্নয়নের সুফল সাধারণ মানুষ পাচ্ছে না।'

এ সময় সিপিবি নেতৃবৃন্দ টাকা পাচারকারী ও ঋণ খেলাপিদের তালিকা প্রকাশ এবং কাদের সহায়তায়, প্রশ্রয়ে অনুমোদনে এসব ঘটনা ঘটছে তার শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানান। 

'আর সরকার ব্যর্থ হলে বামপন্থীরা টাকা পাচারকারী, ঋণ খেলাপিদের তালিকা প্রকাশ করবে,' বলেন তারা। 

নেতৃবৃন্দ বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীন দেশ পেলেও, আজও দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যায়নি, বৈষম্যের অবসান ঘটেনি। আগে সম্পদ পাচার হতো পশ্চিম পাকিস্তানে, এখন পাচার হয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। সেকেন্ড হোম ও অন্য দেশে নাগরিকত্ব নেওয়ার পরিমাণ বেড়েই চলছে।'

তারা বলেন, 'মানুষ মনে করে দুদক, বাংলাদেশ ব্যাংক কাগুজে বাঘ। এরা ক্ষমতাসীন দলের ইচ্ছে বাস্তবায়নের কাজ করে চলেছে।'

এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে দুদক ও বাংলাদেশ ব্যাংককে কার্যকরী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা ও সব তথ্য-উপাত্ত সঠিকভাবে দেশবাসীর সামনে তুলে ধরার আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ।

তারা বলেন, 'একটা গ্রুপ একটা ব্যাংক থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়। তাদের হাজার হাজার কোটি টাকার কর মওকুফ করা হয়। তারা বিদেশে সম্পদ পাচার করে বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছে। প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হচ্ছে। দেশে জমিদারতন্ত্র গড়ে তুলছে। এদের সংখ্যা বাড়ছেই। আর কয়েক হাজার টাকার জন্য কৃষককে জেলে পুরা হচ্ছে।'

নেতৃবৃন্দ বলেন, 'দেশের মানুষ আজ রাষ্ট্রের মাফিয়া আর রাস্তার মাফিয়াদের কাছে জিম্মি। এরা গণতন্ত্রহীনতা, স্বৈরতান্ত্রিকতা, ভয়ের পরিবেশ তৈরিতে সহায়তা করে তাদের স্বার্থের প্রতিনিধিদের ক্ষমতায় রাখছে।'

এসবের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন-গণসংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে সিপিবি।

Comments

The Daily Star  | English

Armed forces granted executive magistracy for another two months

Officials at the public administration ministry confirmed that this is the fifth such extension

7m ago