বিএনপি নেতাদের জিজ্ঞাসা করলে হয়, এত লাফালাফি কীসের

শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ২০০৮ সালের নির্বাচনে ভরাডুবির প্রসঙ্গ তুলে আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ক্ষমতা ওদের কাছে ভোগের বস্তু, লুটের সুযোগ, লুটের মাল।

তিনি আরও বলেন, ওরা ক্ষমতায় গেলেই নির্বাচন-মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা, এটা বিএনপির চরিত্র।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকে বিএনপি নির্বাচন নিয়ে কথা বলে। ২০০৮ এর নির্বাচন নিয়ে তো কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেনি। জাতীয়-আন্তর্জাতিকভাবে ওই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন ওঠেনি। কেউ কোনো প্রশ্ন করেনি। নির্বাচনের ফলাফল কী ছিল? অনেকে ভুলে গেছে, ওই নির্বাচন ছিল ৩০০ আসনে। বিএনপি কটি সিট পেয়েছিল? বিএনপি নেতারাও মনে হয় ভুলে গেছে, মাত্র ৩০টি সিট পেয়েছিল বিএনপি। আর জাতীয় পার্টি পেয়েছিল ২৭টি সিট। ৩টি সিট বেশি ছিল বলে খালেদা জিয়া বিরোধী দলীয় নেতা হতে পেরেছিল। জাতীয় পার্টি আর ৪টি সিট পেলে খালেদা জিয়া ২০০৮-এ বিরোধী দলীয় নেতা হতে পারতো না। এটা হলো বাস্তবতা।

বিএনপি নেতাদের জিজ্ঞাসা করলে হয়, এত যে লাফালাফি কীসের জন্য? ২০০৮-এর নির্বাচনে এই রেজাল্ট, তাহলে আর আপনারা কী নিয়ে লাফান! '১৪তে নির্বাচন করেনি, বাধা দেবে বলে। আবার শুরু করল অগ্নি সন্ত্রাস। ২০১৩-১৫ তাদের অগ্নি সন্ত্রাসে কত মানুষ...প্রায় ৩ হাজারের বেশি মানুষকে পুড়িয়ে ফেলেছে। গাড়ি-লঞ্চ পুড়িয়েছে, বলেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আমি জানি ১০ তারিখে তাদের অনেক ঘোষণা ছিল কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ ওই অগ্নি সন্ত্রাসী, ভুয়া ভোটার তালিকা করা...বিএনপির এই নির্বাচনই মানুষ প্রত্যাখ্যান করেনি, ১৯৯৬ সালে বিএনপি ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছিল। তাদের সেই নির্বাচনে কোনো মানুষ সাড়া দেয়নি, দল সাড়া দেয়নি। ভোর চুরি করে জাতির পিতার হত্যাকারী খুনি রশিদ এবং বজলুর হুদাকে পার্লামেন্টে এনে লিড অব দ্য অপজিশনের সিটে বসিয়েছিল। মানুষ সেই নির্বাচন প্রত্যাখ্যানই শুধু করেনি, এমন আন্দোলন গড়ে তুলেছিল যে, খালেদা জিয়া মাত্র দেড় মাসের মধ্যে ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন, ৩০ মার্চ পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিল। ওরা ক্ষমতায় গেলেই নির্বাচন-মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা, এটা বিএনপির চরিত্র। তার কারণ একটাই ওরা তো গণমানুষের দল না। ওরা মানুষকে পরোয়া করে না। ক্ষমতা ওদের কাছে ভোগের বস্তু, লুটের সুযোগ, লুটের মাল। আর বাংলাদেশের মানুষ তো তাদের কাছে কিছুই না। তাদেরকে তারা পরোয়াই করে না।'

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ জানে, এই আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা এনে দিয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে। তারই হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মাধ্যমে। কাজেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়। আমরা ৯৬ সালে যে রকম উন্নয়ন করেছিলাম, ২০০৮-এ নির্বাচনে এসে দেখি স্বাক্ষরতার হার আবার পৌঁছে গেছে সেই ৪৫ ভাগে। অবশ্য এটার কারণ আছে। খালেদা জিয়া একটা ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিয়েছিল। উর্দু আর অংক; এই ২ সাবজেক্টে পাস করেছিল। আর কোনোটায় পাস করেনি, ফেল। উর্দু খুব প্রিয় সাবজেক্ট তার, কারণ পাকিস্তান প্রীতি আর টাকা গোনা, তাই অংকে পাস। জিয়াউর রহমান ইন্টারমিডিয়েট পাস। তারেক জিয়া যে কী পাস তারও কোনো ঠিকানা নাই। তাদের কথা হচ্ছে, আমরা পড়িনি তো তোরা পড়বি কেন? তাই ৬৫ ভাগ থেকে আবার ৪৫ ভাগে নামিয়ে আনলো স্বাক্ষরতার হার। মানুষ সামনের দিকে যায়। বিএনপি আসলে দেশটা চলে পেছনের দিকে চলে যায়। উন্নয়ন শুধু তাদের হয়। হাওয়া ভবন-খাওয়া ভবন খুলে এই খাই খাইটাই পারে, দেশের জন্য কিছু করতে পারে না। যে কারণে বারবার জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh transition from autocracy to democracy

Transitioning from autocracy to democracy: The four challenges for Bangladesh

The challenges are not exclusively of the interim government's but of the entire political class.

12h ago