আমাদের এখন আরও বিপদ: শেখ হাসিনা

শেখ হাসিনা
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

সবাইকে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের এখন আরও বিপদ।

আজ শনিবার দুপুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলের ২২তম জাতীয় সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচন কী ছিল? নির্বাচন মানেই ১০টা হুন্ডা, ২০টা গুন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা। এই নির্বাচনী সংস্কার; আওয়ামী লীগ, ১৪ দল মহাজোট মিলে আমরা একটা প্রস্তাব দিয়েছিলাম। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর যে কাজই করুক, আমাদের জেল খাটাক, যা-ই করুক, তারা অন্তত সে প্রস্তাবের কিছু কাজ বাস্তবায়ন করে গেছে। খালেদা জিয়া ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার তালিকা করেছিল, সেটা বাদ দিয়ে ছবিসহ ভোটার তালিকা করা হয়েছে, যাতে কেউ ভুয়া ভোট দিতে না পারে। সিল মেরে আগেই ব্যালট বাক্স ভরবে, সেটা যেন না পারে সে জন্য স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স চালু করা হয়েছে। আমাদেরই—আওয়ামী লীগের স্লোগান ছিল, আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো। ভোট দেওয়ার যে সাংবিধানিক অধিকার, সেই অধিকার আওয়ামী লীগই নিশ্চিত করেছে।

আমি জানি, এই ভোট অনেকে বিতর্কিত করতে চায়। অনেকে অনেক কথা বলে কিন্তু আমরা সেটা করেছি। আমরা নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আইন করে দিয়েছি। সেই আইন মোতাবেক রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটি করে নির্বাচন কমিশন গঠন করছে। সেখানে আমরা—আওয়ামী লীগ কোনো হস্তক্ষেপ করি না। নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ স্বাধীন করে দিয়েছি। আগে নির্বাচন কমিশনের আর্থিক সক্ষমতা নিজস্ব ছিল না, সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রী দপ্তরে রাখা ছিল। আমরা তাদেরটা তাদের হাতে দিয়ে দিয়েছি। বাজেট থেকে সরাসরি তাদের টাকা দেওয়া হয়। যাতে স্বাধীনভাবে তারা কাজ করতে পারে, সেই ব্যবস্থা করেছি। আমরা ভোটার আইডি কার্ড করে দিয়েছি। ইভিএম কিছু কিছু চালু হয়েছে। সেখানে কিন্তু কারচুপি করার কোনো সুযোগ আছে বলে আমরা জানি না। ২০২২ সালের ২৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২ আমরা পাস করে দিয়েছি। আমাদের যদি জনগণের ভোট চুরির দুরভিসন্ধি থাকতো তাহলে আমরা সেটা কেন করবো! খালেদা জিয়ার মতো আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশন আমরা করতাম। তা তো আমরা করিনি! আমাদের জনগণের ওপর আস্থা-বিশ্বাস আছে। সেই বিশ্বাস নিয়েই আমরা চলি, বলেন তিনি।

পদ্মা সেতু নিয়ে আমাদের ওপর দুর্নীতির অভিযোগ এসেছিল। দুর্নীতি করে টাকা বানাতে আসিনি। আমার বাবা রাষ্ট্রপতি ছিলেন, প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। আর আমি চার-চার বার প্রধানমন্ত্রী। আমাদের পরিবার দুর্নীতিই যদি করতো তাহলে দেশের মানুষকে কিছু আর দিতে পারতাম না। আমরা দেশের মানুষকে দিতে এসেছি। মানুষের জন্য করতে এসেছি। এ কারণে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে এটা অন্তত আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মেয়ে মেনে নিতে পারি না, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমরা সব সময় চাই বাংলাদেশ এগিয়ে যাক। আমাদের এখন আরও বিপদ। করোনার সময় যেটা আমরা ধরে রাখতে পেরেছি, এই যুদ্ধে কারণে আরও সমস্যা দেখা দিয়েছে।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের তরুণরা যত বেশি ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার শিখবে আমরা তত দ্রুত দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো। সব মন্দা কাটিয়ে উঠে আমরা দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি। একটাই বাধা করোনা আর যুদ্ধ। এ জন্য আমার আহ্বান, আমরা যুদ্ধ চাই না, নিষেধাজ্ঞা চাই না। ওগুলো বন্ধ করেন। সব দেশ স্বাধীন। স্বাধীনভাবে তার চলার অধিকার আছে। এই অধিকার সব দেশের থাকতে হবে। যুদ্ধ মানুষের ক্ষতি করে। যুদ্ধের ভয়াবহতা কী আমরা জানি।

যুদ্ধে নারী ও শিশু সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানাবো, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ বন্ধ করেন। তাদের উসকানি দেওয়া বন্ধ করেন। শান্তি চাই। কোভিডের অর্থনৈতিক অভিঘাত থেকে কেবল আমরা বেরিয়ে আসছিলাম, এখন এই যুদ্ধ আর নিষেধাজ্ঞা আমাদের সব অগ্রযাত্রা নষ্ট করছে। সেখানে শিশুদের কী অবস্থা! এই শীতের মধ্যে আজকে রাতা বিদ্যুৎ পায় না। শুধু ইউক্রেন কেন, উন্নত দেশগুলো অবস্থা আপনারা দেখেন কত ভাগ বিদ্যুতের দাম তারা বাড়িয়েছে। আমরা—বাংলাদেশ এখনো ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি।

জাতির পিতা বলেছিলেন, 'আওয়ামী লীগের ইতিহাস, দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাস। বাংলাদেশের মানুষ যেদিন পেট ভরিয়া খাইতে পাইবে। যেদিন প্রত্যেকের মুখে হাসি ফুটিবে, আওয়ামী লীগের সংগ্রাম সেই দিনই খ্যান্ত হইবে।' আজকে আওয়ামী লীগ এটুকু বলতে পারে, বাংলাদেশের কোনো মানুষ অভুক্ত থাকে না। তাই পিতাকে বলতে পারি, আমরা কথা দিলাম, আপনার জনগণ কখনো অভুক্ত থাকে না। আপনার জনগণ কষ্টে থাকবে না, বলেন শেখ হাসিনা।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh 2025-26 budget

Budget to shrink amid fiscal strain

Bangladesh’s interim government is preparing to unveil a rare contractionary budget on June 2, driven by a sharp rise in interest payment that is crowding out fiscal space and forcing spending cuts.

12h ago