আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বিক্রির অভিযোগ আ. লীগ নেতার বিরুদ্ধে

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘর বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। ছবি: আমানুর আমান/স্টার

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘর বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।

উপজেলার শোমসপুর ইউনিয়নের সাতপাকিয়া পুকুরপাড় এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে এ ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, খোকসা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম রেজা দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে ঘরটি বিক্রি করে দেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় সাতপাকিয়া গ্রামে ১৩টি ঘর নির্মাণ করে উপজেলা প্রশাসন। একটি ঘর বরাদ্দ পান ওই এলাকার ভ্যানচালক হারুন অর রশিদ। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পঁচাত্তর বছর বয়সী হারুনের হাতে ঘরের চাবি তুলে দেওয়া হয়।

সূত্র আরও জানায়, মার্চ থেকে হারুন সপরিবারে ওই ঘরে বসবাস করতে শুরু করেন। তার সংসারে রয়েছেন স্ত্রী ও ২ কন্যা। গত জুনে সাতপাকিয়া গ্রামের বাসিন্দা মন্টু ব্যাপারী দাবি করেন, তিনি সেলিম রেজার কাছ থেকে ওই ঘর কিনে নিয়েছেন। মন্টু ক্রয় সংক্রান্ত একটি স্ট্যাপও দেখান হারুনকে। এরপর হারুনের পরিবারকে বের করে দিয়ে মন্টু তার পরিবার নিয়ে ওই ঘরে ওঠেন।

হারুনের মেয়ে খাদিজা খাতুন বলেন, 'আমাদের ওপর চরম অন্যায় করা হয়ছে। আমার বাবা কাউকে ঘর বিক্রি করেননি। তিনি কথাই বলতে পারেন না, ঘর বিক্রি করলেন কখন!'

খাদিজা আরও বলেন, 'আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সবাই ভয় পাচ্ছে। আমরা গরিব, তাই কেউ আমাদের কথা শুনছে না।'

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন খাদিজা।

তার অভিযোগ, ঘর বরাদ্দ পাওয়ার পর থেকেই সেলিম রেজা ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। বিভিন্ন সময় ভয় দেখাচ্ছিলেন, টাকা না দিলে তাদের ওই ঘরে থাকতে দেওয়া হবে না।

মন্টু ব্যাপারীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। মন্টুর স্ত্রী মুসলিমা খাতুন জানান, গত ২৪ এপ্রিল খোকসা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম রেজার মাধ্যমে দেড় লাখ টাকা দিয়ে তারা ঘরটি কিনেছেন।

ঘর কেনার প্রমাণ হিসেবে ৩০০ টাকার লিখিত স্ট্যাম্প দেখান তিনি। মুসলিমা বলেন, 'হারুন বৃদ্ধ মানুষ, তাই ঘরের বারান্দায় থাকার জায়গা দিয়েছি।'

আজ শুক্রবার সকালে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সেলিম রেজা টেলিফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।'

প্রকৃত ঘটনা কী জানতে চাইলে তিনি ফোন রেখে দেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল মাছুম মোর্শেদ বলেন, 'এটা জঘন্য ঘটনা। এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।'

জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান বাবুল আক্তার বলেন, 'আমি সদ্য নির্বাচিত হয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।'

যোগাযোগ করলে খোকসা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রিপন বিশ্বাস ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি অভিযোগ পেয়েছেন এবং নিজে তদন্ত শুরু করেছেন।

রিপন বলেন, 'ওই ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। মন্টুকে বের করে দেওয়া হয়েছে, তবে হারুন সপরিবারের ঘরের বারান্দায় বাস করছেন। সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত উভয় পক্ষকে অপেক্ষা করতে হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Trump teases Iran talks next week, says nuclear programme set back 'decades'

President Donald Trump said Wednesday that the United States would hold nuclear talks with Iran next week

1h ago