চট্টগ্রাম-৮ উপনির্বাচন

আ. লীগের মনোনয়ন চান ব্রিটিশ বাংলাদেশি মনোয়ার হোসেন

মনোয়ার ১৯৮৩ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন। ১৯৯৭ সালে লন্ডনের মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে অনার্স করেন এবং ১৯৯৮ সালে ব্যারিস্টারের ডিগ্রি লাভ করেন। সিভিল মানবাধিকার ও  ইমিগ্রেশন আইন বিশেষজ্ঞ হিসেবে তিনি নিয়মিত মামলা পরিচালনা করেন লন্ডনে।
মতবিনিময় সভায় মোহাম্মদ মনোয়ার হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

 

চট্টগ্রাম-৮ আসনের (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসন্ন উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছেন ব্রিটিশ বাংলাদেশি ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মনোয়ার হোসেন।   

আজ শনিবার দুপুরে 'চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের' ব্যানারে নগরীর একটি রেস্তোরাঁয় উপনির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা জানান তিনি।

মনোয়ারের বাড়ি বোয়ালখালীর কধুরখিল এলাকার ইমাম নগরে। তিনি পরিবার নিয়ে এখন যুক্তরাজ্যে থাকেন। মনোয়ার ১৯৮৩ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন। ১৯৯৭ সালে লন্ডনের মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে অনার্স করেন এবং ১৯৯৮ সালে ব্যারিস্টারের ডিগ্রি লাভ করেন। সিভিল মানবাধিকার ও  ইমিগ্রেশন আইন বিশেষজ্ঞ হিসেবে তিনি নিয়মিত মামলা পরিচালনা করেন লন্ডনে।

মতবিনিময় সভায় মনোয়ার হোসেন বলেন, `আমি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য। আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা হলেও তিনি সনদ নেননি। কারণ তিনি দেশের জন্য কাজ করেছেন। আমার ভাইও একজন মুক্তিযোদ্ধা। এর আগে আমি আশির দশকে ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে জনগণ ও দেশের জন্য রাজনীতি করেছি। আমি অনেক দেশে আইনি সমস্যার জন্য লড়াই করেছি, কিন্তু কখনো স্বীকৃতি চাইনি।'

`আমিই প্রথম ব্যক্তি যে আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৯১ সালে কালুরঘাট সেতুর জন্য আওয়াজ তুলেছিলাম এবং এখন আমি যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি নাগরিকদের অনেক আইনি সমস্যা সমাধানে কাজ করছি। ২০০৩ সাল থেকে আমি যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সংগঠিত করার পাশাপাশি দলের জন্য কাজ করছি,' তিনি যোগ করেন।

তিনি আরও বলেন, 'আমি বহু বছর বিদেশে কাটিয়েছি কিন্তু এখন আমি আমার দেশের মাটির জন্য কিছু করতে চাই। সেজন্য আমি আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রীর আশীর্বাদ নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাই। চট্টগ্রামের সবচেয়ে বঞ্চিত এলাকা বোয়ালখালী। আমি এ ভূমির জন্য বিশেষ কিছু করতে চাই এবং আমি করব।'

মনোয়ার হোসেন আরও বলেন, 'আ. লীগ নির্বাচনে আমার নাম না দিলে আমি নির্বাচনে লড়ব না এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও নির্বাচনে দাঁড়াব না।'

আওয়ামী লীগ কেন তাকে নির্বাচনে মনোনয়ন দেবে এবং কোন গ্রাউন্ডে তা জানতে চাইলে ব্যারিস্টার মনোয়ার বলেন, 'আমি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হয়েছিলাম। যদি গ্রাউন্ডের কথা বলেন, তাহলে দেখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার সংসদ সদস্য আবু রেজা মোহাম্মদ নদভী, ডিসিসির মেয়র আতিক ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিট পেয়েছেন কোন গ্রাউন্ডে থেকে? আমি বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ অনুসারী। আমি সবসময় বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুসারী মানুষকে সাহায্য করার চেষ্টা করি। আমার কাজ আমার কথা বলবে।'

'বোয়ালখালীতে আওয়ামী লীগের অনেক যোগ্য ও নিবেদিতপ্রাণ প্রার্থী রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বিষয়গুলো দেখবেন। তিনি যদি মনে করেন আমি নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত, তবে আমি টিকিট পাব। যদি তিনি অস্বীকার করেন, আমি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীকে সহায়তা করে দলের পক্ষে কাজ করব।'

দ্য ডেইলি স্টার তার দ্বৈত নাগরিকত্ব সম্পর্কে জানতে চাইলে মনোয়ার বলেন, 'আমি বাংলাদেশি এবং একজন ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী। সরকার ও প্রশাসনের অভ্যন্তরে অনেকেই দ্বৈত নাগরিকত্ব ধারণ করেছেন, তবে তারা নিজেদের বাঁচাতে ইচ্ছাকৃতভাবে বিষয়টি আড়াল করে রেখেছেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে আমি আমার ব্রিটিশ পাসপোর্ট ফিরিয়ে দেবো। আমার দেশের জনগণের স্বার্থে সেখানে আমার সব অর্জন বিসর্জন দদেবো। আপনি জানেন সবকিছুই গিভ অ্যান্ড টেকে চলে।'

চট্টগ্রাম-৮ আসনের আওয়ামী লীগ নেতা ও সংসদ সদস্য মোসলেম উদ্দিন আহমেদ গত ৬ ফেব্রুয়ারি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান। তার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হয়। এ আসনে উপনির্বাচন হবে আগামী ২৭ এপ্রিল। প্রার্থীরা ২৭ মার্চ পর্যন্ত মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারবেন। মনোনয়ন বাছাই হবে ২৯ মার্চ।

 

Comments