‘আমাদের বিদ্যুৎ বিলের টাকা পাচার হয়ে গেছে, তাই কয়লা কেনা যাচ্ছে না’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন ও সংবিধান সংস্কারসহ ১৪ দফা দাবিতে ৪-৭ জুন ঢাকা-রংপুর-দিনাজপুর রোডমার্চ করছে গণতন্ত্র মঞ্চ।
এর অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার দুপুরে বগুড়া শহরের সেন্ট্রাল হাইস্কুল মাঠে এক সমাবেশের আয়োজন করে গণতন্ত্র মঞ্চ। গতকাল বগুড়া পৌঁছায় রোডমার্চ।
প্রথমে বগুড়া শহীদ খোকন পার্কে তাদের জনসমাবেশের অনুমতি দেয় পুলিশ। পরে একই স্থানে বগুড়া যুবলীগ শান্তি-সমাবেশের ডাক দিলে সমাবেশের স্থান পরিবর্তন করে দেয় পুলিশ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতার প্রয়োগ করে ঠিক থাকতে চায়। তাই তারা বিএনপিসহ অন্য দলের নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম নির্যাতন করছে। কিন্তু ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায়ঘণ্টা বেজে উঠেছে।
সমাবেশে রোডমার্চের সমন্বয়কারী এবং গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, 'সরকার দাবি করে তারা দেশের উন্নয়ন করেছে। অথচ গত সাড়ে ১৪ বছরে কৃষকের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে পারেনি। কেন করতে পারেনি? কারণ কৃষকের উৎপাদিত ফসল কেনা-বেচা-বণ্টনের সঙ্গে গ্রাম থেকে শহর সবখানে আওয়ামী লীগ সরকারের লোকজন জড়িত। কৃষক ফসলের মূল্য না পেলেও, এই সরকার দলের ব্যবসায়ীরা ফসল থেকে লাভবান হচ্ছে। সেই টাকা এমপি-মন্ত্রীর পকেটেও ঢুকছে।'
সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশে এই সরকারের আমলে মেগাপ্রকল্পের নামে মেগা লুট, মেগা কমিশন, মেগা বাণিজ্য এবং ডলার পাচারের মহোৎসব চলছে। আর এই মহোৎসবের জন্য বাংলাদেশ কয়লা কিনতে পারে না, বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে না। আমরা এরকম একটা পরিস্থিতির মধ্যে দিনাতিপাত করছি। আমরা বিদ্যুৎ বিল দিচ্ছি সেই টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে কয়লা কিনতে পারে না সরকার।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক, জোনায়েদ সাকি, ভাসানী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারীসহ আরও কেন্দ্রীয় ও জাতীয় নেতৃবৃন্দ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।
এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় বগুড়া মোকামতলা রোডমার্চ ও সমাবেশ শেষে বগুড়া ফেরার পথে গণতন্ত্র মঞ্চের গাড়িবহরে দেশি অস্ত্র ও ইট-পাটকেল, লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ। হামলায় গাড়িবহরের দুটি মাইক্রোবাস ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং গণতন্ত্র মঞ্চের ৪-৫ আহত হয় বলে অভিযোগ করেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা।
হামলার পর তারা বগুড়া প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলনও করেন। পরে রাতে হোটেলে ফিরলে সেখানেও তাদের ওপর হামলা হয় বলে অভিযোগ করেন তারা।
Comments