বিএনপির সমাবেশস্থল: পুলিশের প্রত্যাখ্যানের পেছনে গোয়েন্দা প্রতিবেদন

প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে ডিএমপি সমাবেশস্থল বিবেচনা করে গোলাপবাগ মাঠে বিএনপিকে মহাসমাবেশ করার পরামর্শ দেয়।
নারী আসামির পলায়ন

কর্মদিবসে জনদুর্ভোগের কারণ দেখিয়ে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপিকে মহাসমাবেশের অনুমতি দেয়নি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

তবে সূত্রগুলো বলছে, গোয়েন্দা প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে পুলিশ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যাতে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, নগরীকে অচল করে দিতে বিএনপির দীর্ঘ অবস্থান কর্মসূচি পালনের পরিকল্পনা আছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএনপির তৃণমূল নেতাদের বিশেষ করে জেলা পর্যায়ের নেতাদের রাজধানীতে আসার সময় তাদের সঙ্গে পুরোনো বিছানার চাদর ও কাপড় আনতে বলা হয়েছে।

উচ্চপদস্থ সূত্রগুলো গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে গোয়েন্দা প্রতিবেদনের এসব তথ্য নিশ্চিত করে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যে ব্যবস্থাই গ্রহণ করুক না কেন, বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের রাজপথে থাকতে বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে ডিএমপি সমাবেশস্থল বিবেচনা করে গোলাপবাগ মাঠে বিএনপিকে মহাসমাবেশ করার পরামর্শ দেয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোলাপবাগ রাজধানীর প্রান্তে অবস্থিত, তাই কোনো নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি হলে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষে সহজ হবে।

এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশের অনুমতি চাইলেও পুলিশ গোলাপবাগ মাঠে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেয়। ১০ ডিসেম্বর ওই মাঠেই বিএনপির সমাবেশ হয়।

বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি সম্পর্কে জানতে চাইলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) কে এইচ মহিদ উদ্দিন গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, পুলিশ যে কোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত আছে।

তিনি বলেন, 'পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।'

পুলিশ বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশকেও (আইএবি) তাদের সমাবেশ না করার অনুরোধ জানিয়েছে।

আইএবির প্রেসিডিয়াম সদস্য মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী ডিএমপিকে বলেন, সমাবেশ স্থগিত করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই সংসদ ভেঙে দেওয়া, নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন দাবিতে বিকাল ৩টায় পুরানা পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করবে দলটি।

আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, গত কয়েকদিনে বিএনপির মহাসমাবেশের পরিকল্পনা নিয়ে অন্ধকারে থাকায় বিএনপির অবস্থান কর্মসূচির বিষয় নিয়েও আলোচনা করেছেন দলের নেতারা।

শাপলা চত্বরের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। তারা মনে করেন, বিএনপি ২০১৩ সালের মতো এবারও নির্বাচন প্রতিহত করতে সহিংস কর্মকাণ্ডে যেতে পারে বলে দলের অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে বিএনপিকে এ ধরনের ষড়যন্ত্র থেকে বিরত থাকতে এবং নির্বাচনে অংশ নিয়ে জনগণের মুখোমুখি হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, 'আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস ও সহিংসতার পথ বেছে নিলে আওয়ামী লীগ তাদের (বিএনপি) মোকাবিলা করবে।'

Comments