শফিক রেহমান-মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে দেওয়া ‘ফরমায়েশি রায়’ বাতিলের দাবি ফখরুলের

এই রায়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, ‘মিথ্যা ও সাজানো মামলায় দেওয়া ফরমায়েশি রায়ে প্রমাণিত হয়, বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করছে।’
মির্জা ফখরুল
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। স্টার ফাইল ফটো

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে 'অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্রের' মামলায় সাংবাদিক শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানসহ ৫ জনকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার রায়কে 'ফরমায়েশি' বলে অভিহিত করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এই রায়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, 'মিথ্যা ও সাজানো মামলায় দেওয়া ফরমায়েশি রায়ে প্রমাণিত হয়, বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করছে।'

গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নূর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

আসামিদের মধ্যে শফিক রেহমান যায়যায়দিনের সাবেক সম্পাদক। খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমান ছিলেন বন্ধ হয়ে যাওয়া আমার দেশের সম্পাদক।

দণ্ডিত অপর ৩ আসামি হলেন জাতীয়তাবাদী সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সহসভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন, তার ছেলে রিজভী আহাম্মেদ ওরফে সিজার এবং যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ভূঁইয়া।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল এই রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, 'যারা ১/১১-এর বিরুদ্ধে কথা বলেন, গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলেন, বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর ভয়াবহ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কথা বলেন, অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাদেরকেই আওয়ামী সরকার টার্গেট করেছে।'

এ ধরনের সাজা প্রদানের ঘটনা 'অবৈধ আওয়ামী সরকারের গভীর নীলনকশারই অংশ' বলে মন্তব্য করে তিনি বিবৃতিতে বলেন, 'আদালতকে নিয়ন্ত্রণ করে আওয়ামী অবৈধ সরকার স্বীয় উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তবে রাষ্ট্রযন্ত্রকে দিয়ে আওয়ামী সরকারের জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনগণ এখন দৃঢ় সংকল্প নিয়ে রাজপথে নেমে এসেছে। যতই চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র করা হোক না কেন, জনগণ আর ভোটারবিহীন তামাশার নির্বাচন করতে দেবে না।'

বিবৃতিতে অবিলম্বে এই মামলা প্রত্যাহারের পাশাপাশি দণ্ডিত সবার সাজা বাতিলের দাবি জানান তিনি।

সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক ফজলুর রহমান ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট পল্টন থানায় মামলা করেন।

মামলায় শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমান উচ্চ আদালত থেকে বিভিন্ন সময় জামিন পেলেও মামলার বিচারকাজ এড়াতে তারা বিদেশে চলে যান।

২০১৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ৫ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে ডিবি। চার্জশিটে মামুন, রিজভী ও মিজানুরকে পলাতক এবং শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানকে ষড়যন্ত্রের মূল হোতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। মামুন অন্যদের সহায়তা ও মদদ দিয়েছিলেন বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে।

রিজভী যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের কাছ থেকে জয়ের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করে অন্য আসামিদের দিয়েছিলেন বলে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়।

অভিযোগে বলা হয়, ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরের আগে মামুন এবং বিএনপি জোটের একাধিক শীর্ষ নেতা যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বৈঠক করে জয়কে অপহরণ ও হত্যার ষড়যন্ত্র করেন।

রিজভীকে ২০১৫ সালের মার্চে একটি মার্কিন আদালত একজন বাংলাদেশি রাজনীতিকের তথ্যের জন্য এফবিআই এজেন্টকে ঘুষ দেওয়ার জন্য দোষী সাব্যস্ত করে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ সেই রাজনীতিকের নাম জানায়নি।

বিচার চেয়ে গত বছরের ১৩ নভেম্বর ঢাকার আদালতে সাক্ষ্য দেন সজীব ওয়াজেদ জয়।

Comments