মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে ২২ পেশাজীবী সংগঠনের বিবৃতি

রোববার থেকে ৪৮ ঘণ্টা হরতালের ডাক বিএনপির

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের নেতাকর্মীদের মুক্তি, গণগ্রেপ্তার ও গায়েবি মামলা দায়ের বন্ধ এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ।

বিবৃতিতে বিএনপি সমর্থক শিক্ষক, চিকিত্সক, কৃষিবিদ, প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন পেশার মোট ২২টি পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা বলেছেন, রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে রাখতে সরকার পোড়ামাটি নীতি গ্রহণ করেছে। বিরোধী জোটের কর্মসূচি ঘিরে যেভাবে বল প্রয়োগ করা হয়েছে, তা কেবল অনাকাঙ্ক্ষিতই নয়, অত্যন্ত নিন্দনীয়। যেভাবে জাতীয় ও বিরোধী দলের নেতাদের গণগ্রেপ্তার, খুন এবং ভিন্নমতাবলম্বীদের নামে গণহারে গায়েবি মামলা দেওয়া হচ্ছে তা সভ্য সমাজে কল্পনাও করা যায় না। দেশজুড়ে সরকার একটা ভীতিকর ও শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সভা-সমাবেশের অধিকার মানুষের সাংবিধানিক ও নাগরিক অধিকার। সভা-সমাবেশে বাধা এবং কোনো কারণ ছাড়াই এ ধরনের গণগ্রেপ্তার সাংবিধানিক ও নাগরিক অধিকার পরিপন্থী।

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্যসচিব কাদের গনি চৌধুরীর পাঠানো ওই বিবৃতিতে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এম এ আজিজ, গাইনোকলজিস্ট ডা. ফাতেমা ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জাহিদুল কবির জাহিদসহ পেশাজীবী ও জাতীয় নেতাদের বিনা অভিযোগে এবং বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার করে তাদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।

বলা হয়, ডা. এম এ আজিজকে তার মাল্টিকেয়ার হাসপাতালের পেশাগত চেম্বার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তিনি রোগী দেখছিলেন। ডা. আতিকুল আলমকে সিরাজগঞ্জ, ডা. ফাতেমাকে রাজশাহী এবং ডা. জাহিদুল কবিরকে ঢাকার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ তখন সেখানে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে।

পেশাজীবী নেতারা বলছেন, এভাবে দেশের গর্বিত নাগরিকদের অসম্মান, নির্যাতন, নিপীড়ন জাতির জন্য মঙ্গল ডেকে আনবে না। এমনিতেই সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সম্মানজনক পরিবেশ না থাকায় মেধাবীরা এখন দেশে থাকতে চাইছেন না। নির্যাতন, নিপীড়ন, দুর্নীতি, লুটপাটতন্ত্র কায়েমের পাশাপাশি গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ভোটাধিকার ও বাকস্বাধীনতা যেভাবে কেড়ে নেয়া হচ্ছে তাতে দেশের ভবিষ্যত নিয়ে তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলন বানচাল করে ২০১৮ সালের মতো আবারও ক্ষমতা দখলের হীন উদ্দেশে অন্যায়ভাবে বিরোধীদলের নেতা-কর্মীদের গণগ্রেপ্তার করা হচ্ছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, 'সরকার দেশ থেকে আইনের শাসন নির্বাসনে দিয়ে একটা মগের মুল্লুক কায়েম করেছে। দেশকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে। পুলিশের দায়িত্ব হচ্ছে মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া। অথচ পুলিশের হাতেই এখন মানুষের জীবন অনিরাপদ। রাষ্ট্রীয় এ বাহিনীকে সরকার দলীয় ঠেঙাড়ে বাহিনীতে পরিণত করেছে।'

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করা পেশাজীবীদের মধ্যে আছেন—সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সদস্যসচিব কাদের গনি চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলী ও মহাসচিব কায়সার কামাল, ড্যাব সভাপতি অধ্যাপক হারুন আল রশীদ ও মহাসচিব ডা. মো. আব্দুস সালাম, ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ'র সভাপতি অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান ও যুগ্মআহ্বায়ক অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান খান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এম আব্দুল্লাহ ও মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন প্রমুখ।

 

Comments

The Daily Star  | English
Government notification banning Awami League

Govt bans activities of AL until ICT trial completion

A Public Security Division joint secretary confirmed the matter

1h ago