রাজনীতি

নাশকতার মাধ্যমে সরকার ডামি নির্বাচন থেকে বিশ্বের মনোযোগ সরাতে চায়: বিএনপি

ট্রেনে আগুনের ঘটনাকে আওয়ামী লীগের নাশকতা দাবি করে এ ঘটনা বিরোধী দলের সরকারের ওপর ক্র্যাকডাউনের অজুহাত বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি।
বিএনপি নেতাকর্মীদের ভোট বর্জনে সংঘাত এড়িয়ে কর্মসূচি পালনের নির্দেশ
বিএনপির লোগো | সংগৃহীত

ট্রেনে আগুনের ঘটনাকে আওয়ামী লীগের নাশকতা দাবি করে এ ঘটনা বিরোধী দলের সরকারের ওপর ক্র্যাকডাউনের অজুহাত বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি।

আজ রোববার দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক বিবৃতিতে বলা হয়, গত পরশু ঢাকায় একটি ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৪ জন নিরীহ মানুষ মারা যাওয়া এবং হাসপাতালে আরও অনেকের ভোগান্তির তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে বিএনপি। রাষ্ট্র আমাদের চলমান শান্তিপূর্ণ ও অহিংস আন্দোলনকে কলঙ্কিত করতে পূর্ব পরিকল্পিত নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের নীলনকশা বাস্তবায়ন করছে।

বিএনপি বলছে, 'এ ঘটনার পর ক্রমবর্ধমান অভিযান ও গ্রেপ্তার প্রমাণ করে যে, ধারাবাহিক পদ্ধতিগত দমন-পীড়ন জোরদারের লক্ষ্যে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ যৌথভাবে বিএনপিকে দোষারোপ করছে। এছাড়াও তারা অনিয়ম ও কারচুপির দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত পূর্বনির্ধারিত ফলাফলসহ তথাকথিত ডামি নির্বাচন থেকে বিশ্বব্যাপী মনোযোগ সরাতে চায়।'

'এভাবেই ক্ষমতা আঁকড়ে ধরতে এবং অবৈধ ক্ষমতার ওপর দখল বজায় রাখতে শেখ হাসিনার শাসনামল ২৭০০টির বেশি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ৭০০টির বেশি জোরপূর্বক গুম এবং ৫০ লাখের বেশি গণতন্ত্রপন্থী মানুষের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি সুস্পষ্ট রেকর্ডসহ অগ্নিসংযোগের ঘটনার অবতারণা করছে,' যোগ করা হয় বিবৃতিতে।

বিবৃতিতে বলা হয়, 'আওয়ামী লীগের কারণে আরও অনেক হত্যা যুক্ত হতে পারে তাদের আগের হাজার হাজার প্রাণনাশের ঘটনার সঙ্গে। এদিকে বিএনপি প্রতিনিধিত্ব করে গণতন্ত্রকামী মানুষদের প্রতিদিনের আত্মোৎসর্গের বিয়োগান্তক পর্বের। যেহেতু তাদের বিকাশমান জীবন, স্বাধীনতা ও অধিকার সমর্পণ করার জন্য নিষ্ঠুর চাপ প্রয়োগ করা হয়।' 

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী ও আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ইতিহাসের উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা জনগণের জীবন ও সম্পত্তির বিনিময়ে আওয়ামী লীগের ব্লেম গেমের হিংসাশ্রয়ী কৌশল প্রত্যক্ষ করছি। প্রথমে আওয়ামী লীগ নেতারা বিরোধীদের আসন্ন সহিংসতা সম্পর্কে সন্দেহজনক বক্তব্য দিয়ে সতর্কতা জারি করে এবং তারপর তাদের তথাকথিত সন্দেহকে বাস্তবে রূপ দিতে সেই বিশেষ হিংসাত্মক কাজটি করে এবং সর্বত্র বিএনপিকে দোষারোপ করে। মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনার মাত্র দুইদিন আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সন্দেহজনক সুরে মন্তব্য করেছিলেন, "বিএনপি সহিংসতা এড়ানোর দাবি করলেও তাদের বক্তব্য বিশ্বাসযোগ্য নয় কারণ তারা প্রায়শই এক কথা বলে এবং করে অন্য। আমি তথ্য পেয়েছি যে তারা কিছু ষড়যন্ত্র করছে।" এই বক্তব্য প্রমাণ করে যে, শাসকগোষ্ঠীর নাশকতা আক্রমণ পূর্বপরিকল্পিত ছিল, এটি তার নৃশংস দমন-পীড়ন এবং বিএনপির বিরুদ্ধে সুচারু প্রচারণার ন্যায্যতা দেওয়ার একটি উপায় হিসাবে কাজ করছে। বিরোধীদের বিরুদ্ধে তীব্র মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে অগ্নিসংযোগের হামলার সুস্পষ্ট সুবিধাভোগী হিসেবে আওয়ামী লীগ আবারও আবির্ভূত হয়েছে বলে জোরালো প্রমাণ রয়েছে।' 

বিবৃতিতে বলা হয়, 'আমাদের বিশ্বাস করার কারণ রয়েছে যে এটি জনজীবনের মূল্যে ফ্যাসিবাদকে সংহত করার জন্য শাসনের সর্বশেষ প্রচেষ্টা।'

এ অবস্থায় ট্রেনে আগুনের ঘটনায় জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক স্টেকহোল্ডারদের সমন্বয়ে একটি নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।

Comments