রাস্তাঘাট বন্ধ করে দিয়ে কর্মসূচি করতে দেবো না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

‘যখন একটা অ্যারেস্ট হয়, রাজনৈতিক নেতা বা যেই হোক, একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যায়। একটা ধাক্কাধাক্কি, একটা সামনাসামনি অনেক মানুষ একত্রিত হয়ে যায়। তার পক্ষের দল-বিপক্ষের দল হয়ে যায়। তখন পুলিশ বাধ্য হয়ে মানুষ সরানোর জন্য; একটু ধাক্কাধাক্কি হয়ে যায়।’
রাস্তাঘাট বন্ধ করে দিয়ে কর্মসূচি করতে দেবো না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

জানমালের ক্ষতি, সরকারি সম্পদ নষ্ট ও রাস্তাঘাট বন্ধ করে দিয়ে কর্মসূচি করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'দ্রুত বিচার আইনে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে সময়সীমা আছে, এর মধ্যে বিচার শেষ করতে হবে। সেটা অনেক সময় কার্যকর হচ্ছে না কিন্তু আমরা মনে করি, সময়সীমা নির্ধারণ না করলে; আপনারা দেখেছেন, বিচার বিভাগে যে পরিমাণ জট লেগে আছে, সেই জটের মধ্যে পড়ে গেলে অনেক দিন লম্বা হয়।

তিনি বলেন, 'বিশেষ ধরনের ক্রাইম যারা করছেন, ওখানে (আইনে) সংজ্ঞায়িত আছে, আমরা মনে করি এই ক্রাইমগুলো বিচার খুব তাড়াতাড়ি হওয়া উচিত। তাহলে আমরা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও উন্নত, আরও স্বাভাবিক করতে পারব। সে জন্য আইনটি করা হয়েছিল এবং প্রতিবারই (মেয়াদ) দুই বছর, এক বছর করে বাড়ানো হয়েছে।

'প্রতি বছর না বাড়িয়ে যদি এটাই আইন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা যায়, মেয়াদ শেষ হয়ে গেল কি না আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এই চিন্তা থেকে মুক্তি পাবে,' বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

বিরোধী দল অভিযোগ করছে, দ্রুত বিচার আইন তাদের ওপর প্রয়োগ করা হচ্ছে—এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান বলেন, 'এটা হাস্যকর অভিযোগ। এখানে বিরোধী দল বলে কোনো আইন নেই যে, বিরোধী দলের তকমা যাদের লাগানো আছে তারা এই আইনের মধ্যে যাবে। এখানে যে অপরাধের সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত হবে, তাদেরকেই এই আইনের আওতায় নেওয়া হবে। যারা অবরোধ করবে, যানবাহন ভাঙচুর করবে, যারা রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেবে; আপনারা দেখেছেন, কোনো একটা তুচ্ছ ঘটনা হলেই উত্তেজিত জনতা রাস্তা বন্ধ করে দেয়। তুচ্ছ ঘটনা হলেই, ভাঙচুর শুরু করে দেয়। এ জন্য এই আইনটি প্রয়োজন ছিল।

'আমি মনে করি, কোনো গোষ্ঠী বা বিরোধী দলকে দমানোর জন্য এই আইন নয়। আইনটা হলো, বিচারটা যাতে দ্রুত হয় এবং এই ধরনের ঘটনা যাতে নিরুৎসাহিত হয়। এই ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সেই জন্য এই আইনটা করা হয়েছে,' বলেন তিনি।

একজন গণমাধ্যমকর্মী দৃষ্টি আকর্ষণ করেন, সর্বশেষ বিএনপির কালো পতাকা মিছিলে পুলিশকে বাধা দিতে দেখা গেছে। এরপর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বললেন, এ ধরনের কর্মসূচি আর করতে দেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'পুলিশি বাধা দেওয়া হয়নি। প্রথম দিন তারা কালো পতাকা মিছিল করেছিল, আপনারা সবাই দেখেছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, তারা মনে করেন, সদ্য নির্বাচিত একটি দল ক্ষমতায় এসেছে। প্রথম দিনই কালো পতাকা উড়ানো কোনো যুক্তিতে পড়ে না।

'এ ধরনের কোনো ঘটনা হলে পারমিশন নিতে হয় এটা যেমন সত্য; আমরা মনে করেছি যদি তাদের কিছু বলতে হয়, কনফারেন্স রুমের ভেতরে যেয়ে তারা যা বলতে চায় বলবেন। রাস্তাঘাটে যান চলাচল বন্ধ করে এই কালো পতাকা উড়ানোটা আমরা মনে করি যুক্তিসঙ্গত নয়, সেই জন্য আমাদের ঢাকার কমিশনার এবং আইজিপি আছেন, তারা মনে করেছেন এটা হলে স্বাভাবিক যান চলাচল, স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হবে। সেই জন্য তারা বন্ধ করেছেন,' বলেন তিনি।

আগামীতে এ ধরনের কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, 'আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো রাজনীতি করবে। তাদের যে রাজনীতি, তাদের যে আদর্শ, তাদের যে উদ্দেশ্য এগুলো সব করবে। এখানে আমাদের কোনো বাধা নেই। আমাদের কথা সেই জায়গায় কারও জানমাল বিনষ্ট করে, সরকারি সম্পত্তি বিনষ্ট করে আর রাস্তাঘাট বন্ধ করে দিয়ে—মনে হয় এগুলো অযৌক্তিক। এগুলো আমরা করতে দেবো না।'

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানকে পুলিশ আটক করল। সে সময় তাকে 'অ্যাসল্ট' করা হলো। সেটা পুলিশ করতে পারে কি না তার বয়স বিবেচনায়; ধাক্কা দিয়ে ভ্যানে তুলে নিয়ে গেছে—এ ব্যাপারে আসাদুজ্জামান বলেন, 'যখন একটা অ্যারেস্ট হয়, রাজনৈতিক নেতা বা যেই হোক, একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যায়। একটা ধাক্কাধাক্কি, একটা সামনাসামনি অনেক মানুষ একত্রিত হয়ে যায়। তার পক্ষের দল-বিপক্ষের দল হয়ে যায়। তখন পুলিশ বাধ্য হয়ে মানুষ সরানোর জন্য; একটু ধাক্কাধাক্কি হয়ে যায়।'

তিনি বলেন, 'এটা ইচ্ছাকৃত পুলিশ করে না। এটা অনিচ্ছাকৃতভাবে করে। আপনারা দেখেছেন, কাউকে ধরতে গেলে অতি উৎসাহী জনগণ এসে দাঁড়ায়। তাদেরকে সরাতে পুলিশ আবার হিমশিম খায়। এ জন্য এসব ঘটনাগুলো ঘটে। যেগুলো ঘটেছে এগুলো অতি উৎসাহী জনগণের কারণে।

এর আগে তিনি ডিজিটাল আর্মস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের উদ্বোধন ঘোষণা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সময় আর্মস হোল্ডারদের স্মার্টকার্ড দেওয়া হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Public medical colleges: 86 doctors, 136 students punished since August 5

Over the last two months, at least 86 physicians and 136 students in eight public medical colleges and hospitals across the country have faced different punitive actions on various allegations, including “taking a stance against” the quota reform movement.

5h ago