উন্নত চিকিৎসা নিতে জানুয়ারিতে লন্ডন যাবেন খালেদা জিয়া

ফাইল ফটো

উন্নত চিকিৎসা নিতে জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।

আজ বুধবার তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন এই তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, 'মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিয়ে যাওয়ার জোর প্রস্তুতি চলছে। তবে সুনির্দিষ্ট দিন-তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।'

'আধুনিক মেডিকেল সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত একটি উড়োজাহাজে সাবেক প্রধানমন্ত্রী লন্ডন যাবেন। তার সঙ্গে চিকিৎসকের একটি দল, পরিবারের কয়েকজন সদস্য ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তারাও যাবেন। লন্ডন যাওয়ার তারিখ ঘোষণা হলে দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে,' বলেন তিনি।

সূত্র জানিয়েছে, খালেদা জিয়া প্রথমে লন্ডনে তার বড় ছেলে তারেক রহমানের কাছে যাবেন। সেখানে কয়েকদিন অবস্থানের পর লিভার জটিলতার চিকিৎসা নিতে যাবেন যুক্তরাষ্ট্রে।'

বিএনপির চেয়ারপারসনের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ডে পূর্ব বাল্টিমোরে বিশ্বখ্যাত জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় হসপিটালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের ভিসাও নিয়েছেন তিনি।

বিএনপির পক্ষ থেকে এর আগে বেগম জিয়ার সফরসঙ্গী হিসেবে দলের নেতা, চিকিৎসক, নার্সসহ ১৫ জনের নামের তালিকা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়। তাদের সবার যুক্তরাজ্যের ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।

গত বছরের আগস্টে ওই হাসপাতালের তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ক্রিসটোস স্যাভাস জর্জিয়াডস, অধ্যাপক জেমস পিটার অ্যাডাম হ্যামিলটন ও অধ্যাপক আবদুল হামিদ আহমেদ আব্দুর রব ঢাকায় এসে এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে লিভার সিরোসিস সংক্রান্ত চিকিৎসা দেন। 
তারা লিভারের রক্তনালীতে সফল অস্ত্রোপচার করেন।

উল্লেখ্য, ৭৯ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন।

ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে একাধিকবার নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ডের মাধ্যমে তাকে দীর্ঘ সময়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি আদালত তাকে পাঁচ বছরের সাজা দেন। এরপর তাকে কারাগারে নেওয়া হয়। ওই বছরের অক্টোবরে আপিল শুনানি শেষে  হাইকোর্ট বিভাগ সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তার আরও সাত বছরের সাজা হয়।

দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করে খালেদা জিয়ার দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন।

ওই বছরের ২৫ মার্চ সাময়িক মুক্তি পেয়ে গুলশানের বাসা ফিরোজায় ফেরেন খালেদা জিয়া। তখন থেকে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন।

এরপর থেকে পরিবারের আবেদনে প্রতি ছয় মাস পরপর বিএনপি নেত্রীর মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে আসছিল তৎকালীন হাসিনা সরকার। প্রতিবারই তাকে দুটি শর্ত দেওয়া হচ্ছিল। তাকে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না।

সাময়িক মুক্তির পর বিএনপি চেয়ারপারসনকে কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। তাকে বিদেশে পাঠানোর জন্য পরিবারের তরফ থেকে বেশ কয়েকবার আবেদন করা হলেও ওই শর্তের যুক্তি দিয়েই বারবার তা প্রত্যাখ্যান করে তৎকালীন শেখ হাসিনার সরকার।

গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পরদিনই রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করেন।

এভারকেয়ার হাসপাতালে এক মাস চিকিৎসা নিয়ে সর্বশেষ ২১ আগস্ট গুলশানের বাসায় ফেরেন বিএনপি প্রধান।

গত ১২ সেপ্টেম্বর রাতে খালেদা জিয়াকে আবারও এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা নিয়ে ছয়দিন পর তিনি বাসায় ফেরেন।

Comments

The Daily Star  | English

Sada Pathor Looting: Admin officials, law enforcers involved

Some government officials  including members of law enforcement agencies were involved in the rampant looting of stones from Bholaganj’s Sada Pathor area, found a probe committee of the Sylhet district administration.

6h ago