সংস্কার নাকি নির্বাচন—প্রশ্ন অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: তারেক রহমান

তারেক রহমান। ফাইল ছবি সংগৃহীত

সংস্কার নাকি নির্বাচন—এমন প্রশ্ন অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তিনি বলেন, 'কোনো কোনো মহল থেকে সংস্কার নাকি নির্বাচন—এই ধরনের জিজ্ঞাসাকে বিএনপি তথা দেশপ্রেমিক সব মানুষ, সব রাজনৈতিক দল শ্রেফ অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কূটতর্ক বিবেচনা করে।'

'বরং বিএনপি মনে করে রাষ্ট্র, রাজনীতি এবং রাজনৈতিক দলের গুণগত পরিবর্তনের জন্য সংস্কার এবং নির্বাচন উভয়ই প্রয়োজন। বিদ্যমান ব্যবস্থাকে সময়োপযোগী করতে সংস্কার একটি অনিবার্য ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। একইভাবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে টেকসই এবং প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে নির্বাচনই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর পন্থা,' বলেন তিনি।'

আজ বুধবার বিকেলে ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় তারেক রহমান জনগণকে বিভ্রান্ত না হয়ে নির্বাচনের মানসিক প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, 'বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত স্বচ্ছ, জনগণ কোন রাজনৈতিক দলকে গ্রহণ কিংবা বর্জন করবে নির্বাচনের মাধ্যমে সেই রায় দেবে জনগণের আদালত। তবে যারা জনগণের আদালতের রায়ের মুখোমুখি হতে ভয় পায় কিংবা যাদের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে, তারাই নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে নানা রকম বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে।'

'গণতন্ত্রকামী জনগণের প্রতি আহ্বান, আপনারা ধর্য্য হারাবেন না, নির্বাচনের জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিতে থাকুন। নির্বাচন কমিশন তাদের অর্পিত দায়িত্ব যথারীতি পালন করবে সেই বিশ্বাস রাখুন,' যোগ করেন তিনি।

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, 'আপনারা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না। বরং সর্তক থাকবেন, নিজেরা এমন কোনো কাজে সম্পৃক্ত হবেন না যাতে কেউ অপপ্রচারের সুযোগ পায়। নিজেদেরকে জনগণের আস্থায় রাখুন। জনগণের আস্থায় রাখার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন।'

কোনো হঠাকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি চেয়ারম্যান বলেন, 'আমাদের সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে, কোনো হঠকারী সিদ্ধান্তের কারণে যাতে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বিনষ্ট হওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়। এ ব্যাপারে ছাত্রদলের প্রতিটি নেতাকর্মীকে সর্তক ও সজাগ থাকতে হবে। মনে রাখা দরকার, লোক বা লাভের ঊর্ধ্ব উঠে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ এবং স্বাবলম্বী বাংলাদেশ গড়তে বিশেষ করে ছাত্র-তরুণদের ভূমিকা অপরিসীম।'

সংস্কার কর্মসূচি প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, 'বিএনপি মনে করে রাষ্ট্রে জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করা না গেলে গণতন্ত্র, মানবাধিকার কিংবা পুঁথিগত সংস্কার শেষ পর্যন্ত কোনো কিছুই টেকসই হয় না। অন্তবর্তীকালীন সরকার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে; সংস্কার কার্যক্রম অবশ্যই প্রয়োজন, এই কারণে অন্তবর্তীকালীন সরকার হয়তো তাদের দৃষ্টিতে অনেক বড় বড় সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। তবে এসব কর্মসূচির আড়ালে জনগণের নিত্য দিনের দুদর্শা উপেক্ষিত থাকলে জনগণ হয়তো ক্ষোভ সরকারের সংস্কার দাবি নিয়ে মুখ খুলতে বাধ্য হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'ইতোমধ্যে জনগণের মনে প্রশ্ন উঠেছে পলাতক স্বৈরাচারের আমলে সৃষ্ট বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয় ক্ষমতার ভেতর আনতে সরকার কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে? ফ্যাসিস্ট আমলে দায়ের করা লাখ লাখ মামলায় এখনো কেন প্রতিদিন মানুষকে আদালতের বারান্দায় ছুটিতে হচ্ছে।'

গণতান্ত্রিক উদ্যোগকে বিএনপি স্বাগত জানায় উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, 'দেশে প্রয়োজনে আরও নতুন নতুন রাজনৈতিক দলের উত্থান ঘটবে, এটাই গণতান্ত্রিক রীতি। এ নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। রাষ্ট্র ও রাজনীতির প্রয়োজনে বিএনপি সব গণতান্ত্রিক উদ্যোগকে স্বাগত জানায়। বিএনপি তার জন্মলগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত সব পরিস্থিতিতে সব সময় বহু দল ও মতের চর্চার পক্ষে।'

Comments

The Daily Star  | English

Polytechnic students issue 48-hr ultimatum over six-point demand

Threaten a long march to Dhaka if govt doesn't respond to demands

28m ago