সংস্কারের আলাপ যত দীর্ঘায়িত হবে, দেশ তত সংকটে পড়বে: তারেক রহমান

তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

সংস্কার প্রস্তাবের আলাপ-আলোচনা যত দীর্ঘায়িত হবে, দেশ তত সংকটে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

আজ রোববার বিকেলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত এক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

তারেক রহমান বলেন, 'যদি নির্বাচন প্রক্রিয়ায় দেরি হয়, যদি সংস্কার সংস্কার করে আমরা সংস্কারের আলোচনা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর করতে থাকি তাহলে যে স্বৈরাচারকে দেশের সব মানুষ, দলমত নির্বিশেষে শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে একত্রিত হয়ে বিতাড়িত করেছে, তাহলে সেই স্বৈরাচার সুযোগ পেয়ে যাবে আবার দেশের মানুষের কাঁধে চেপে বসার।'

'কাজেই সমাজের বিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ, সম্মানিত ব্যক্তি যারা সংস্কারের কথা বলছেন আপনাদের সবার কাছে রাজনৈতিক দলের অবস্থান থেকে আহ্বান জানিয়ে বলতে চাই, সংস্কার সংস্কার বক্তব্য রেখে এই আলাপ দয়া করে দীর্ঘায়িত করবেন না। কারণ আপনারা সংস্কারের আলাপ যত দীর্ঘায়িত করবেন দেশ তত বেশি সংকটের মুখে পড়বে। আপনারা সংস্কার আলাপ যত দীর্ঘায়িত করবেন ষড়যন্ত্রকারীরা তত ষড়যন্ত্র করার সুযোগ পাবে,' বলেন তিনি।

তারেক রহমান বলেন, 'সংস্কারের প্রস্তাবগুলো যদি বাস্তবায়ন করতে হয় তাহলে সবার আগে নির্বাচনই প্রয়োজন। নির্বাচনের মাধ্যমে যাদের জনগণ দায়িত্ব দেবে, সংস্কার কাজ তারাই শুরু করতে পারবে, তাদেরকেই শুরু করতেই হবে।'

তিনি বলেন, 'যত কথা বলি না কেন, আমরা যদি সংস্কার বাস্তবায়ন যত দেরি করব, সংস্কারের কাজও যদি শুরু করতে হয়, সেটি নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচিত মানুষের মাধ্যমেই বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে হবে।'

'নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমেই সংস্কার বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে হবে। কারণ যারা নির্বাচিত হয়ে আসবে তারা জনগণের কাছে ওয়াদা করবে যে, তারা সুযোগ পেলে বাস্তবায়ন করবে এসব সংস্কার,' যোগ করেন তিনি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, 'সংস্কার বাস্তবায়ন করতে উপায় একটাই। যে সংস্কার প্রস্তাব বিএনপি দিয়েছে, যে সংস্কার প্রস্তাব অন্তবর্তী সরকারের কমিশনগুলো তৈরি করে দিয়েছে, যেটাই হোক না কেন, এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতে হলে নির্বাচন ছাড়া আর কোনো রাস্তা নেই। একটিই পথ জনগণের নির্বাচন।'

তারেক বলেন, 'আমি মনে করি নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায়। এটা সবাইকে অনুধাবন করতে হবে। কেউ কেউ বলেন যে, নির্বাচন হলেই কি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? আমি বলি, সঙ্গে সঙ্গে সব সমস্যার সমাধান হবে না। কিন্তু নির্বাচন হলে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটের মাধ্যমে, জনগণের রায়ের মাধ্যমে যে দল যে ব্যক্তি বা যারা দেশ পরিচালনার সুযোগ পাবে তখন সমস্যার যে জট, সমস্যার যে গিট সেগুলো আস্তে আস্তে খোলা যাবে।'

নেতাকর্মীদের প্রতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, 'আসুন আজকের এই কর্মশালার মাধ্যমে আমার দলের নেতাকর্মী এখানে যারা উপস্থিত আছেন, সবাই মিলে আজ আমরা প্রতিজ্ঞা করি যে, বাংলাদেশের মানুষ আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ দিলে, আমরা প্রত্যেকে যে যার অবস্থান থেকে যে সংস্কারের ওয়াদা আমরা জনগণের সামনে দিয়েছি আমাদের প্রত্যেকের অবস্থান থেকে সেই ওয়াদা সর্বোচ্চ পূরণে চেষ্টা করব।'

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আয়োজনে শ্যামপুরের কদমতলীর বালুর মাঠে 'রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি' শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ঢাকা দক্ষিণের ২৪ থানার বিএনপি ও  অঙ্গ-সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।

Comments

The Daily Star  | English
enforced disappearance in Bangladesh

Enforced disappearance: Anti-terror law abused most to frame victims

The fallen Sheikh Hasina government abused the Anti-Terrorism Act, 2009 the most to prosecute victims of enforced disappearance, found the commission investigating enforced disappearances.

8h ago