রাজপথে পাওয়া যায়নি এমন অনেকেই এখন সংস্কারের কথা বলছেন: তারেক রহমান

অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তারেক রহমান। ছবি: ইউএনবি থেকে নেওয়া

এখন অনেকেই সংস্কারের কথা বলছেন, অথচ বিগত সময়ে তাদের রাজপথে পাওয়া যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন।

তিনি বলেছেন, 'একমাত্র বিএনপি স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দেশ পুনর্গঠনের কথা বলেছে এবং ৩১ দফা ঘোষণা করেছে। বিএনপি দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে সবার আগে দেশ পুনর্গঠন করবে।'

আজ শনিবার দুপুরে যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে আয়োজিত জেলা বিএনপির সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, 'গত ১৬ বছর ধরে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে বিএনপিসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দলের নেতা-কর্মীদের খুন, গুম ও লুটতরাজ করে। তখন নানা ধরনের নির্যাতনের মুখে বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দল রাজপথে থেকে লড়াই করেছে।'

'এখন যারা বড় বড় কথা বলছে, তারা তখন স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে মাঠে ছিল না। এখন অনেকেই সংস্কারের কথা বলছেন, অথচ বিগত সময়ে তাদের রাজপথে পাওয়া যায়নি।'

তিনি বলেন, 'বিএনপির মূল লক্ষ্য ভেঙে পড়া রাষ্ট্র-কাঠামো মেরামত করা। কৃষকের উৎপাদন, নারীর ক্ষমতায়ন ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন করাও আমাদের লক্ষ্য। জনগণের ভোটে বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এসব করবে।'

এ সময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, 'দেশের জনগণের সমর্থন নেই—এমন কোনো কাজ বিএনপি করে না। বিভ্রান্ত হয়ে অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়া নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাই বিএনপির বিরুদ্ধে কারও অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না।'

দেশের মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী দেশ পুনর্গঠনে দ্রুততম সময়ে স্বচ্ছ নির্বাচন দেওয়া জরুরি বলেও এ সময় মন্তব্য করেন তিনি।

তারেক রহমান বলেন, 'যে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আমরা বিগত ১৭টি বছর আন্দোলন করেছি, সেই স্বৈরাচার আজ পলাতক। তবে তারা বিভিন্নভাবে মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে; ষড়যন্ত্রকারীরা কিন্তু বসে নেই! বিভিন্ন দাবি-দাওয়ার অসিলায় বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তারা তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তাদের এই লক্ষ্য আমরা হাসিল করতে দিতে পারি না। দেশের মানুষকে যদি রক্ষা করতে হয়, সর্বোপরি বাংলাদেশকে যদি রক্ষা করতে হয়, তাহলে আমাদের সবাইকে যেকোনো মূল্যে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।'

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, 'আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকতেই পারে। আমরা বসব, আলোচনা করব। এক আলোচনায় শেষ না হলে আবার আলোচনায় বসব। আলোচনার মাধ্যমেই আমরা সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করব। আমাদের অনেক কাজ; দেশকে পুনর্গঠনের কাজ। দেশের সামনে আমরা রাষ্ট্র-কাঠামো পুনর্গঠনের ৩১ দফা রূপরেখা দিয়েছি। সেটির মধ্যে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সন্তানদের শিক্ষাব্যবস্থা কীভাবে করব—তার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া আছে। এই দেশের বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্য, স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও কৃষির জন্য আমরা কী কী করতে চাই, তার কথাও উল্লেখ করা আছে। সমগ্র দেশকে পুনর্গঠন করার জন্য আমরা কী করতে চাই, সেই কথাগুলো বলা আছে।'

যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন বিএনপি চেরায়পারসনের উপদেষ্টা আমন উল্লাহ আমান।

জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, বর্তমান নির্বাহী কমিটির সদস্য প্রকৌশলী টি এস আইয়ূব, আবুল হোসেন আজাদ, সাবিরা নাজমুল মুন্নী, কেশবপুর পৌর বিএনপি সভাপতি আব্দুস সামাদ বিশ্বাস, যশোর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এহসানুল হক সেতু, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জারুল হক খোকন, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব আনসারুল হক রানা, জেলা মহিলা দলের সভাপতি রাশিদা রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মোস্তফা আমির ফয়সাল, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পি প্রমুখ।

Comments

The Daily Star  | English

PSC announces major changes to ease BCS recruitment process

The PSC chairman says they want to complete the entire process — from prelims to recruitment — in 12 months

6h ago