শিগগির গঠনতন্ত্র, সাংগঠনিক কাঠামো চূড়ান্ত করবে এনসিপি

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশের পর জুলাই অভ্যুত্থানের অগ্রভাগে থাকা তরুণ নেতারা এখন দলের সাংগঠনিক কাঠামো, স্লোগান, ঘোষণাপত্র এবং গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন।
দলের এই মূল বিষয়গুলো চূড়ান্ত করার কাজ চলছে এবং শিগগিরই সেগুলো ঘোষণা করা হবে বলে দলের সিনিয়র নেতাদের কাছ থেকে জানতে পেরেছে দ্য ডেইলি স্টার।
যদিও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়া দলের প্রায় সব নেতা 'ইনকিলাব জিন্দাবাদ' বলে তাদের বক্তব্য শেষ করেছেন, তবে এখনো এটি দলের আনুষ্ঠানিক স্লোগান হিসাবে ঘোষণা করা হয়নি।
এছাড়াও, এনসিপি নেতারা জোর দিয়ে বলেছেন যে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের দেওয়া সেদিনের বক্তব্য দলের ঘোষণাপত্র নয়।
এনসিপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজধানীর তিনটি স্থান- ফার্মগেট, শাহবাগ ও পল্টনকে প্রাধান্য দিয়ে তারা এখন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের জন্য জায়গা খুঁজছেন।
দলটির নেতাদের প্রাথমিকভাবে ১৭টি শাখা গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে, যার মধ্যে বিভিন্ন পেশাজীবী ও শ্রমজীবী মানুষের জন্য একটি শাখা রয়েছে।
এদিকে আজ জাতীয় নাগরিক পার্টির ২১৭ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন করা হয়েছে। রোববার ভোররাতে জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব আখতার হোসেনের পাঠানো এক বার্তায় বিষয়টি জানানো হয়েছে।
এনসিপি নেতারা বলেছেন, রমজানে তারা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার দাবি তুলবেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনসিপির একজন যুগ্ম আহ্বায়ক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আমরা সবেমাত্র দলটি শুরু করেছি। দলীয় ফোরামে বেশ কয়েকটি সভা ও আলোচনার পর, আমরা কর্মসূচি চূড়ান্ত করব।
দলের নেতারা বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা সফর করবেন। তারা জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন এবং সাধারণ মানুষের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করবেন।
দলের মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণ অঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ এবং মুখ্য সংগঠক (উত্তর অঞ্চল) সারজিস আলম তাদের ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন যে তারা শিগগির এই দুই অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে দেখা করবেন। 'স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশের এই জেলাগুলোর ফ্যাসিবাদবিরোধী এবং বাংলাদেশপন্থি ছাত্রজনতার সঙ্গে অচিরেই দেখা হবে।'
সাংগঠনিক কাঠামো প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি, এনসিপি একটি নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য গণপরিষদের নির্বাচনের জন্য চাপ অব্যাহত রাখবে।
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নতুন দল গণতান্ত্রিক নীতি এবং ন্যায়ের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশকে একটি রাজনৈতিক রাষ্ট্র হিসেবে উপস্থাপন করা হয়নি। আমরা এটিকে একটি নতুন রাজনৈতিক রাষ্ট্র হিসেবে উপস্থাপন করতে চাই।'
নাহিদ ইসলামকে আহ্বায়ক এবং আখতার হোসেনকে সদস্য সচিব করে গত শুক্রবার ঢাকায় সংসদ ভবনের সামনে এনসিপি দলের আত্মপ্রকাশ হয়।
দলের দায়িত্ব গ্রহণের জন্য নাহিদ ইসলাম অন্তর্বর্তীকালীন সরকার থেকে পদত্যাগ করেন।
সূচনা বক্তব্যে নাহিদ দৃঢ়ভাবে বলেন যে এনসিপি হবে সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক, সাম্যভিত্তিক এবং জনকেন্দ্রিক রাজনৈতিক শক্তি।
Comments