ইসি দলকানা-নির্লজ্জ, নির্বাচনমুখী হওয়ার অন্তরায়: হাসনাত আবদুল্লাহ

বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি) কিছু দলের পার্টি অফিস হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণ অঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
তিনি বলেছেন, 'নির্বাচন কমিশন যেভাবে দলকানা একটি দলের প্রতি, একটি দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে যেভাবে নির্লজ্জের মত কাজ করছে, সেটি আমাদের নির্বাচনমুখী হওয়ার অন্তরায় বলে আমরা মনে করছি।'
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আজ রোববার দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য কমিশনারদের উপস্থিতিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে শুনানিতে হট্টগোল ও হাতাহাতি হয়।
পরে বিকেল ৪টার দিকে ইসি ভবনে যান এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ।
তিনি বলেন, 'আমরা বারবার বলে এসেছি আমরা একটি গ্রহণযোগ্য-অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের দিকে যেতে চাই। বাংলাদেশের মানুষ গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য অপেক্ষা করছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ আবার গুণ্ডাতন্ত্রের দিকে যেতে চায় না।'
হাসনাত বলেন, 'বাংলাদেশের মানুষ আবার এক-এগারো মঞ্চস্থের জন্য অপেক্ষা করছে না। সুষ্ঠু-অবাধ-গ্রহণযোগ্য-অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন হতে গেলে এই নির্বাচন কমিশনকে বস্তুনিষ্ঠ পেশাদারত্বের ভূমিকায় আমরা দেখতে চাই।'
অভিযোগ করে তিনি বলেন, 'আজ নির্বাচন কমিশন যে ভূমিকা রেখেছে, আমরা সেই ভূমিকাকে সবসময় প্রশ্নবিদ্ধ করে এসেছি। আমরা পুলিশকে দেখেছি নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। আমরা দেখলাম পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের নির্বাচন কমিশনে ঢুকতে বাধা দিয়েছে। অন্যদিকে বিএনপির নেতাকর্মীদের ফ্রি এক্সিট দিয়েছে।'
নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠনের অনতিবিলম্বে দাবি জানিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, 'এই নির্বাচনের বিষয়ে কমিশনের প্রতি আমাদের যে আস্থা ছিল, সে আস্থা ক্রমশ ক্ষীয়মান। একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য এই নির্বাচন কমিশনকে অবশ্যই দলমত নির্বিশেষে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে।'
তিনি বলেন, 'নির্বাচন কমিশনের রিমোট কন্ট্রোল কোথায় রয়েছে, এটা আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত অজ্ঞাত। নির্বাচন কমিশনাররা যদি মনে করেন তারা এই নির্বাচন কমিশন পরিচালনা করতে পারবেন না, তা মানুষের সামনে প্রকাশ করুন।'
'না হয় নিকট অতীতে আমরা নুরুল হুদা কমিশনকে দেখেছি। তার পরিণতি আমরা দেখেছি,' বলেন তিনি।
এনসিপির এই নেতা আরও বলেন, 'বিএনপির আওয়ামী বিষয়ক সম্পাদক রয়েছেন অনেকেই, যারা আওয়ামী লীগ থেকে বেশি আওয়ামী লীগ। তাদের মধ্যে অন্যতম রুমিন ফারহানা আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী, ফ্ল্যাটভোগী এবং যারা গুণ্ডা দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে ঠান্ডা করে দিতে চায়, যারা একটা প্রেসক্রিপটিভ ইলেকশনের দিকে আবার যেতে চায়।'
এ সময় কমিটির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) মো. আতাউল্লাহ বলেন, 'আমি এখানে কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থে আসিনি। আমার এলাকা বিজয়নগর উপজেলা, যা ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনটি সদর ও বিজয়নগর উপজেলা নিয়ে গঠিত। কিন্তু রুমিন ফারহানা বিজয়নগরের তিনটি ইউনিয়ন কেটে সরাইল-আশুগঞ্জের সঙ্গে একত্রিত করেছেন, যা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত। এজন্য আমি আপিল করেছি।'
আতাউল্লাহ বলেন, 'কিন্তু আমাকে বারবার হুমকি দেওয়া হয়েছে শুনানিতে অংশ না নিতে। রুমিন ফারহানা ও তার গুণ্ডা-পাণ্ডারা বলেছে আমি যেন সরে যাই। ফোনে ও লোকজনের মাধ্যমে হুমকি দেওয়া হয়।'
'আমি ১২টার আগে ভেতরে ঢুকে দেখি বিএনপি ও রুমিন ফারহানার লোকজন তাদের যুক্তি তুলে ধরছে। আমার সময় এলে দাঁড়াতেই রুমিন ফারহানা আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। তার গুণ্ডারা আমাকে মাটিতে ফেলে নির্মমভাবে মারধর করে। সব ভিডিও ফুটেজে আছে, সিসিটিভিতে দেখা যাবে। আমি চাই রুমিন ফারহানাকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার করা হোক। যদি বিচার না হয়, তাহলে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে পদত্যাগ করতে হবে,' বলেন তিনি।
Comments