জামাল উদ্দিন অপহরণ-হত্যা: ২০ বছর পর কারাগারে আসামি

আবুল কাশেম চৌধুরী

চট্টগ্রামের বিএনপি নেতা ও ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন অপহরণ ও হত্যা মামলার এক আসামি ২০ বছর পর কারাগারে গেছেন।

মো. আবুল কাশেম চৌধুরী ওরফে কাশেম চেয়ারম্যান ওই হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা বলে অভিযোগ আছে। আজ জামিন চেয়ে আত্মসমর্পণ করার পর আদালত তাকে কারাগারে পাঠান।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী ফরিদ উদ্দিন জানান, কাশেম পঞ্চম অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন চেয়েছিলেন। আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট রিদওয়ানুল বারী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কাশেম জামাল উদ্দিন হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী। তিনি ২০ বছর ধরে পালিয়ে ছিলেন। সম্প্রতি তিনি উচ্চ আদালত থেকে চার সপ্তাহের জামিন পেয়েছিলেন।'

তিনি জানান, উচ্চ আদালতের জামিন শেষ হওয়ার পর জামিনের জন্য কাশেম নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিন। আদালত তার আবেদন নাকচ করেছেন।'

জামাল উদ্দিন অপহরণ ও হত্যা মামলা এখন এই আদালতে বিচারাধীন। এই মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে। অভিযোগপত্রে ৮৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে এবং তাদের মধ্যে তিন জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

২০০৩ সালের ২৪ জুলাই ব্যবসায়ী ও বিএনপি নেতা জামাল উদ্দিন চকবাজার এলাকায় তার প্রতিষ্ঠান থেকে চান্দগাঁওয়ের বাসায় যাওয়ার সময় অপহৃত হন। জামালের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অন্যতম আসামি আনোয়ারা সদর এলাকার ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. শহীদকে গ্রেপ্তার করে।

পরে শহীদের বয়ান অনুযায়ী ঘটনার দুই বছর পর ২০০৫ সালের ২৪ আগস্ট ফটিকছড়ি উপজেলার পাহাড়ি এলাকা থেকে জামাল উদ্দিনের কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ।

সিংগাপুরে ফরেনসিক পরীক্ষার পর পুলিশ নিশ্চিত করে কঙ্কালটি জামালেরই। অভিযোগ আছে, পরিবারের সদস্যরা ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিলেও জামালকে ছাড়েনি অপহরণকারীরা।

হত্যাকাণ্ডের পর জামালের পরিবারের সদস্যরা দাবি করেন, ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা জামালকে হত্যা করেছেন।

মামলা দায়েরের পর ৯ জন পুলিশ কর্মকর্তা ৩ বছর ধরে মামলাটি তদন্ত করেন। ২০০৬ সালে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয়। চার্জশিটে আনোয়ারার সাবেক এমপি সরওয়ার জামাল নিজাম, তার ভাই মারুফ নিজামসহ ২৪ জনের নাম বাদ দেয় সিআইডি।

অভিযোগপত্র নিয়ে পরিবারের সদস্যরা আদালতে নারাজি আবেদন করেন। এর মধ্যে মারুফ নিজামের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৭ সালে মামলার ওপর স্থগিতাদেশ দেন উচ্চ আদালত।

স্থগিতাদেশ ২০১১ সালে খারিজ হলে অভিযুক্তরা লিভ-টু-আপিল করেন। ২০১৭ সালে, আদালত সিআইডির চার্জশিট গ্রহণ করে এবং পরিবারের নারাজি আবেদন খারিজ করেন। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে একটি আদালত ১৪ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

বর্তমানে একজন আসামি কারাগারে এবং ৬ জন জামিনে রয়েছেন। ২ আসামি মারা গেছে এবং বাকি আসামিরা এখনো পলাতক।

Comments

The Daily Star  | English

Iran announces new wave of attacks on Israel: state TV

Israel says conducted 'extensive strikes' in Iran's west, while explosions near Tel Aviv, sirens blare across Israel; smoke rises after explosion in Iran’s Tabriz

13h ago