২০ দিনে গাজায় ঢুকেছে মাত্র ৭৪টি ত্রাণের ট্রাক

দক্ষিণ গাজার রাফাহ এলাকায় জাতিসংঘ পরিচালিত একটি স্কুলে রান্না করা খাবারের জন্য অভুক্ত ফিলিস্তিনিদের কাড়াকাড়ি। ছবি: রয়টার্স

হামাসের হামলার পর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নির্বিচার হত্যাযজ্ঞের আজ ২০ দিন। বুধবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে গাজায় স্থল অভিযানের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে ঘোষণা দেন। এরপরেই গাজায় রাতভর সুনির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্যবস্তুতে ট্যাংক নিয়ে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। তারা বলছে, এটি যুদ্ধের পরবর্তী ধাপের প্রস্তুতির অংশ।

এদিকে গত ৭ অক্টোবরের পর থেকেই গাজায় সর্বাত্মক অবরোধ দিয়ে রেখেছে ইসরায়েল। একদিকে ইসরায়েলের মুহুর্মুহু বোমাবর্ষণ, অপরদিকে খাদ্য, পানি, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সংকটে গাজার বাসিন্দারা বর্তমানে অবর্ণনীয় মানবিক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে সময় পার করছেন। সামান্য ত্রাণের আশায় প্রহর গুনছেন অগণিত ফিলিস্তিনবাসী। তবে জরুরি সে ত্রাণ সহায়তাও তাদের ভাগ্যে ঠিকমতো জুটছে না।

আন্তর্জাতিক এইড সংস্থা ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রচেষ্টায় মিশরের রাফাহ সীমান্ত দিয়ে গত ২১ অক্টোবর ২০টি এবং পরদিন ১৭টি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করে। তবে এ সহায়তা প্রয়োজনের তুলনায় একবারেই 'অপ্রতুল' জানিয়ে জাতিসংঘ বলছে, গাজাবাসীর জন্য প্রতিদিন প্রায় ১০০টি ত্রাণবাহী ট্রাকের প্রয়োজন।

ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির বরাত দিয়ে আল-জাজিরা জানায়, আজ বৃহস্পতিবার তারা রাফাহ সীমান্তে মিশরীয় রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কাছ থেকে ১২টি ত্রাণবাহী ট্রাক গ্রহণ করেছে, যাতে খাবার, ওষুধ এবং চিকিৎসাসামগ্রী রয়েছে।

হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পর ২০ দিনে মাত্র ৭৪টি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে বলে জানায় আল-জাজিরা। তবে কোনো জ্বালানিবাহী ট্রাককে গাজায় প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। তীব্র জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সংকটে ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে গাজার একাধিক হাসপাতাল। যে কয়টি বেকারি এতদিন চালু ছিল, এবার সেগুলোও বন্ধ হওয়ার পথে। গাজায় জ্বালানি সরবরাহ করা হলে তা কোনোভাবে হামাসের হাতে চলে যেতে পারে, এই আশঙ্কায় সেখানে জ্বলানিবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে দিতেও নারাজ ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক ত্রাণ ও কর্মসংস্থান সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) জানিয়েছে যে, জ্বালানির অভাবে গাজায় তাদের কার্যক্রম 'স্থবির' হয়ে পড়েছে।

ইউএনআরডব্লিউএ'র যোগাযোগ পরিচালক জুলিয়েট তোমা বলেছেন, 'আজকের মধ্যে হাসপাতালগুলোতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি সরবরাহ পাওয়া না গেলে গাজায় তারা কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবে।'

আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফাম বলছে, অবরুদ্ধ গাজায় 'অনাহারকে যুদ্ধের একটি অস্ত্র' হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। 

গতকাল এক বিবৃতিতে অক্সফাম জানায়, ইসরায়েলের সর্বাত্মক অবরোধ শুরুর পর গাজায় যে পরিমাণ খাদ্যের প্রয়োজন তার মাত্র ২ শতাংশ প্রবেশ করেছে। এই জরুরি খাদ্য সংকট অবসানে প্রতিদিন ১০৪টি ত্রাণবাহী ট্রাকের প্রয়োজন।

সংস্থাটির মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক পরিচালক সালি আবি খলিল বলেন, 'এই পরিস্থিতি ভয়ংকর ছাড়া কিছুই নয়, মানবতা কোথায়?'

Comments

The Daily Star  | English

Crimes against humanity: trial against Hasina begins at ICT

Co-accused in the case are former home minister Asaduzzaman Khan Kamal and former IGP Abdullah Al-Mamun

27m ago