অভিবাসী কমাতে স্টুডেন্ট ভিসা আরও কড়া করবে অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়া সরকার তাদের ‘ভেঙে’ পড়া অভিবাসন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে এই উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ার স্টুডেন্ট ভিসা
ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়া আগামী দুই বছরের মধ্যে নতুন অভিবাসী গ্রহণের হার অর্ধেকে নামিয়ে আনতে চায়। এর লক্ষ্যে দেশটি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও স্বল্প দক্ষ কর্মীদের ভিসা নীতি কঠোর করবে।

আজ সোমবার রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়া সরকার তাদের 'ভেঙে' পড়া অভিবাসন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে এই উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে।

অস্ট্রেলিয়ার নতুন ভিসা নীতিতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ইংরেজি পরীক্ষায় আরও বেশি রেটিং পেতে হবে এবং দেশটিতে থাকা কোনো আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করলে সেটি আরও বেশি যাচাই-বাছাই করা হবে।

এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লেয়ার ও'নিল বলেছেন, 'আমাদের এই কৌশল অভিবাসীদের সংখ্যাকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনবে।'

তিনি বলেন, 'কিন্তু এটা শুধু সংখ্যার বিষয় নয়। এটা শুধু এই মুহূর্ত ও এই সময়ে আমাদের দেশে অভিবাসনের অভিজ্ঞতার কথা নয়; এটা অস্ট্রেলিয়ার ভবিষ্যৎ সম্পর্কিত বিষয়।'

'অভিবাসী ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে' উল্লেখ করে সম্প্রতি দেশটির প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসী সংখ্যাকে একটি 'সহনীয় পর্যায়ে ফিরিয়ে আনা' প্রয়োজন।

ক্লেয়ার ও'নিল বলেন, এ লক্ষ্যে সরকারের সংস্কার উদ্যোগগুলো ইতোমধ্যে মোট অভিবাসী সংখ্যা নিম্নমুখী করছে এবং অভিবাসী সংখ্যা প্রত্যাশিত মাত্রায় কমাতে আরও অবদান রাখবে।

২০২২-২৩ সালে মোট অভিবাসন রেকর্ড ৫ লাখ ১০ হাজারে হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশটির সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ এবং ২০২৫-২৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসী সংখ্যা প্রায় এক চতুর্থাংশে নেমে যেতে পারে, যা করোনা মহামারি পূর্ববর্তী সময়ের সমান।

ক্লেয়ার ও'নিল বলেন, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কারণেই ২০২২-২৩ সালে মোট অভিবাসী বৃদ্ধি পেয়েছে।

করোনা মহামারির সময়ে কঠোরভাবে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও কর্মীদের প্রায় দুই বছর অস্ট্রেলিয়ার বাইরে রাখায় দেশটির ব্যবসায়ীরা যে কর্মী সংকটে পড়েন সেটা পূরণে গত বছর বার্ষিক অভিবাসী গ্রহণ সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়।

কিন্তু হঠাৎ করেই বিদেশি কর্মী ও শিক্ষার্থী বেড়ে যাওয়ায় দেশটিতে বাসা ভাড়া অনেক বেড়ে গেছে এবং সেখানে গৃহহীনের সংখ্যাও বেড়ে গেছে।

সিডনি মর্নিং হেরাল্ড সংবাদপত্রের জন্য করা একটি সমীক্ষা প্রতিবেদন বলছে, অস্ট্রেলিয়ান ভোটারদের ৬২ শতাংশই মনে করেন যে দেশটি অনেক বেশি পরিমাণে অভিবাসী নিয়ে ফেলেছে।

অস্ট্রেলিয়ার শ্রমবাজার দীর্ঘকাল ধরেই অভিবাসীদের ওপর নির্ভরশীল। দেশটির বর্তমান সরকার অত্যন্ত দক্ষ অভিবাসী কর্মীদের নিয়োগ দিতে এবং তাদের স্থায়ী বসবাসের বিষয়টি সহজ করার প্রতি জোর দিয়েছে।

অতি দক্ষ কর্মীদের জন্য একটি নতুন বিশেষ ভিসা দেওয়া হবে, যা প্রক্রিয়াকরণে আবেদনকারীদের এক সপ্তাহ সময় লাগবে।

Comments