আর্জেন্টিনার প্রাথমিক নির্বাচন: ৩০.৫ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে হাভিয়ের মিলেই

আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রাথমিক ভোটে এগিয়ে আছেন হাভিয়ের মিলেই। ছবি: এএফপি
আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রাথমিক ভোটে এগিয়ে আছেন হাভিয়ের মিলেই। ছবি: এএফপি

আর্জেন্টিনার জনগণ কট্টর-ডানপন্থি আইনপ্রণেতা হাভিয়ের মিলেই, ডানপন্থি জোটের প্রার্থী প্যাট্রিশিয়া বুলরিখ ও অর্থমন্ত্রী সের্জিও মাসার মধ্য থেকে একজনকে এ বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হিসেবে নির্বাচিত করবে। প্রাথমিক নির্বাচনে ভোটের ফলাফল সে কথাই বলছে।

আজ সোমবার বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

রোববারের প্রাথমিক ভোটের পর লাতিন আমেরিকার দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য শীর্ষ ৩ প্রার্থীকে নিয়ে অক্টোবরে চূড়ান্ত ভোট অনুষ্ঠিত হবে। দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা অর্থনৈতিক সঙ্কট, বাড়তে থাকা মূল্যস্ফীতি ও দারিদ্র্যের হারের কারণে ভোটাররা প্রথাগত দল ও প্রার্থীদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

আর্জেন্টিনার নির্বাচন প্রক্রিয়া এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশ থেকে বেশ খানিকটা ভিন্ন। রোববারের ভোটে ভোটাররা ২২ জন সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী থেকে তাদের পছন্দের ৩ প্রার্থী চিহ্নিত করেন। এরপর অক্টোবরে প্রথম রাউন্ড ও প্রয়োজনে নভেম্বরে দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোট হবে।

৯০ শতাংশ ভোট গণনা শেষে প্রথাগত রাজনীতির বিরুদ্ধাচরণকারী হাভিয়ের মিলেই ৩০ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট নিয়ে বাকিদের থেকে এগিয়ে আছেন।

ডানপন্থি বুলরিখ (৬৭) এবং আইনজীবী ও সরকারের মন্ত্রী মাসা (৫১) যথাক্রমে ২৮ ও ২৭ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে আছেন।

ভোটের ফলাফলের পর উজ্জীবিত মিলেই বলেন, 'আমরাই প্রকৃত বিরোধী দল। যারা সব সময় ব্যর্থ হয়েছে, তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে একটি ভিন্ন আর্জেন্টিনা গড়ে তোলা অসম্ভব।' 

জনপ্রিয়তা হারানো বর্তমান প্রেসিডেন্ট আলবের্তো ফেরনান্দেজ এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না। দেশটিতে গত বছরের তুলনায় এ বছর মূল্যস্ফীতি ১১৫ শতাংশ বেড়েছে। দেশটির মুদ্রা পেসোর মূল্য তলানিতে ঠেকেছে এবং দারিদ্র্যের হার নতুন রেকর্ড গড়ার পথে রয়েছে। 

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধরে রাখতে সরকার কঠোর মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ নীতি চালু করেছে এবং যেকোনো ধরনের আমদানির ওপর বড় আকারের কর বসিয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, মাসার বামপন্থি দল ইউনিয়ন পর লা পাতরিয়ার সরকার ও বুলরিখের ডানপন্থি জোট খুনতোস পর এল কামবিও (টুগেদার ফর চেঞ্জ), উভয় দলের প্রতি মানুষের বিতৃষ্ণা জন্মেছে। যার ফলে মিলেই'র মতো নতুন প্রার্থীরা এগিয়ে আসার সুযোগ পাচ্ছেন।

কট্টর ডানপন্থি লিবেরতাদ আভানজা দলের একমাত্র প্রার্থী হিসেবে রোববারের নির্বাচনে অবতীর্ণ হন হাভিয়ের মিলেই। কথিত আছে, ব্রাজিলের সাবেক নেতা জায়ের বলসোনারো ও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার সখ্যতা রয়েছে।

তরকুয়াতো দি তেইয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিজ্ঞানের অধ্যাপক হুয়ান নেগ্রি বলেন, 'মিলেই প্রথাগত রাজনৈতিক দলের ওপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলা অসংখ্য ভোটারকে প্রভাবিত করতে পেরেছেন।'

রোববারের ভোটে ৩ কোটি ৫৪ লাখ মানুষের অংশগ্রহণের সুযোগ ছিল। দেশটির বেশিরভাগ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য ভোট দেওয়া বাধ্যতামূলক এবং প্রত্যেকে একটি করে ভোট দিতে পারেন। প্রাথমিক ভোটের ফলাফলকে সাধারণ নির্বাচনের ফলের প্রায় সঠিক পূর্বাভাষ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

শীর্ষ ৩ প্রতিদ্বন্দ্বী ২২ অক্টোবর সাধারণ নির্বাচনের প্রথম রাউন্ডে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়বেন। প্রথম রাউন্ডে কেউ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে বা বিজয়ী হওয়ার অন্যান্য শর্ত পূরণ না হলে ১৯ নভেম্বর দ্বিতীয় রাউন্ড ভোট হবে।

Comments

The Daily Star  | English
future of bangladesh after banning awami league

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

17h ago