সিরিয়ায় ‘ভীতিকর’ ভূমিকম্পের বর্ণনা দিলেন প্রত্যক্ষদর্শী
৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ার নিহতের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে। সিরিয়ায় ভূমিকম্পের তাণ্ডব থেকে বেঁচে যাওয়া এক ব্যক্তি একে 'ভীতিকর ও আতঙ্কজনক' অভিজ্ঞতা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, দেশটিতে ১ হাজার ৭১৮ ভবন ধসে পড়েছে।
আজ সোমবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা সিরিয়ার ইদলিব শহরের বাসিন্দা আলা নাফির বরাত দিয়ে জানিয়েছে, এই ভূমিকম্প ছিল 'অত্যন্ত ভীতিকর ও আতঙ্কজনক'।
তিনি জানান, 'মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যাওয়ার পর টের পেলাম পুরো ভবন কাঁপছে। এটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ অভিজ্ঞতা এবং সেখান থেকে পালিয়ে বের হয়ে আসা অনেক কঠিন ছিল'।
আলা নাফির কাছে মনে হয়েছে, 'অনন্তকাল ধরে ভূকম্পন হচ্ছিল'।
তিনি আরও বলেন, 'এই ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় শহরের রাস্তাগুলোতে মানুষজন ও তাদের শিশুদের কাঁদতে দেখার ব্যাপারটি ছিল হৃদয়বিদারক। আমরা সবাই ভবনগুলো থেকে দূরে একটি জায়গায় জড়ো হই'।
'আমি আশা করি আমাদেরকে যে অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে আজ যেতে হয়েছে, আর কাউকে যেনো তা না যেতে হয়', যোগ করেন তিনি।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টায় ভূমিকম্পটি তুরস্কের গাজিআন্তাপ প্রদেশের নুরদাগি জেলার ২৩ কিলোমিটার পূর্বে আঘাত হানে। এর গভীরতা ছিল ২৪ দশমিক ১ কিলোমিটার। নুরদাগি অঞ্চলটি তুরস্ক ও সিরিয়ার সীমান্তে অবস্থিত। এ অঞ্চলের বেশ কিছু দেশে ভূকম্পন অনুভূত হয়, যার মধ্যে আছে সিরিয়া, লেবানন ও ইসরায়েল।
ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত আরও জানান, দেশটিতে ২৮৪ জন নিহত ও ২ হাজার ৩২৩ জন আহত হয়েছেন। কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে উদ্ধারদল ও সরবরাহ উড়োজাহাজ পাঠিয়েছে। আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি তুরস্কে '৪ মাত্রার' সতর্কতা জারি করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
প্রতিবেশী সিরিয়ায় অন্তত ২৩৭ জন নিহত ও ৬৩০ জনেরও বেশি ব্যক্তি আহত হয়েছে। সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ মাধ্যম সানা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগই আলেপ্পো, লাতাকিয়া, হামা ও তারতাস অঞ্চলের বাসিন্দা।
২ দেশ মিলিয়ে নিহত ও আহতের সংখ্যা যথাক্রমে ৫০০ ও ৩ হাজার ছাড়িয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, প্রথমবার ভূমিকম্প আঘাত হানার পরও বিভিন্ন মাত্রার আরও ১৮টি ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে।
Comments