এবার ইরানগামী জাহাজে হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

এই ক্ষেপণাস্ত্র দুইটির লক্ষ্য ছিল মালবাহী জাহাজ এমভি স্টার আইরিস। মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী ও গ্রীক মালিকানাধীন এই জাহাজটি ব্রাজিল থেকে ভুট্টা পরিবহন করছিল
এমভি স্টার আইরিস। ফাইল ছবি: ভেসেলফাইন্ডার ডট কম/মাইকেল শিন্ডলার
এমভি স্টার আইরিস। ফাইল ছবি: ভেসেলফাইন্ডার ডট কম/মাইকেল শিন্ডলার

ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা এবার ইরানের উদ্দেশে রওনা হওয়া একটি মালবাহী জাহাজে দুইটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। এই হামলায় জাহাজটির সামান্য ক্ষতি হলেও কেউ হতাহত হয়নি।

আজ মঙ্গলবার মার্কিন সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।

ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজের বিরুদ্ধে হামলা শুরুর পর এবারই প্রথম কোনো ইরানগামী জাহাজে হামলা চালাল হুতিরা।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড এক্সে জানিয়েছে, 'ইরান সমর্থিত সংগঠন হুতির যোদ্ধারা ইয়েমেনের হুতি নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল থেকে বাব আল-মানদেবের উদ্দেশে দুইটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে'।

পোস্টে আরও জানানো হয়, এই ক্ষেপণাস্ত্র দুইটির লক্ষ্য ছিল মালবাহী জাহাজ এমভি স্টার আইরিস। মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী ও গ্রীক মালিকানাধীন এই জাহাজটি ব্রাজিল থেকে ভুট্টা পরিবহন করছিল।

সেন্টকমের কর্মকর্তারা জানান, এমভি স্টার আইরিসের গন্তব্য ছিল ইরানের ইমাম খোমেনী বন্দর।

ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশের জন্য আয়োজিত বিক্ষোভে এক হুতি যোদ্ধা। ফাইল ছবি: এএফপি (৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪)
ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশের জন্য আয়োজিত বিক্ষোভে এক হুতি যোদ্ধা। ফাইল ছবি: এএফপি (৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪)

হুতিদের সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি টিভিতে প্রচারিত এক বক্তব্যে দাবি করেন, জাহাজটি যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানাধীন। তবে নৌপরিবহন নিরীক্ষা সংস্থাগুলো জানায়, এটি গ্রীক মালিকানাধীন। 

প্রাক্কলন মতে, এ বছর ইরান ৪৫ লাখ টন ভুট্টা আমদানি করবে, যার বেশিরভাগই আসবে ব্রাজিল থেকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আঞ্চলিক নিরাপত্তা কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, এই হামলার মাধ্যমে এটা প্রমাণের চেষ্টা চালানো হয়েছে যে 'ইরান হুতিদের নিয়ন্ত্রণ করে না এবং তারা স্বাধীনভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে'। তবে এই কর্মকর্তা ধারণা করছেন, হামলা চালানোর আগে হুতিরা ইরানকে এ বিষয়ে তথ্য দিয়েছে।

গত নভেম্বর থেকে নিয়মিত লোহিত সাগরে চলাচলরত নৌযানের ওপর হামলা চালিয়ে আসছে ইয়েমেন ভিত্তিক হুতিরা। তাদের লক্ষ্য মূলত যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল বা যুক্তরাজ্য সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যিক জাহাজ। 

এসব হামলার ফলে বেশ কয়েকটি নৌপরিবহন প্রতিষ্ঠান লোহিত সাগরের পরিবর্তে আফ্রিকা হয়ে তাদের পণ্য পরিবহন করছে। এতে বেড়েছে সময় ও খরচ। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ইয়েমেনের বিভিন্ন অংশে হুতিদের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা চালিয়েছে। 

ইরানের কর্মকর্তারা এই হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

ইরানের খাদ্য পরিবহনের ওপর যুক্তরাষ্ট্র কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি।

যুক্তরাজ্যের নৌপরিবহন নিরাপত্তা সংস্থা আমব্রে জানায়, জিবুতির খোর আনগার থেকে ২৩ নটিকাল মাইল উত্তর-পূর্বে ও ইয়েমেনের লোহিত সাগরের বন্দর নগরী মোখা থেকে ৪০ নটিকাল মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে স্টার আইরিসের ওপর হামলা হয়। এতে জাহাজের স্টারবোর্ড সাইডে সামান্য ক্ষতি হয়েছে।

ক্রুরা নিরাপদ আছে এবং জাহাজটি তার গন্তব্যের উদ্দেশে আবারও যাত্রা শুরু করেছে বলে জানা গেছে।

Comments