ইউক্রেন যুদ্ধের ১ বছর

সংঘাত নিরসনে শি’র সহায়তা চাইতে চীন যাবেন ফ্রান্সের মাখোঁ

২০১৯ সালে বেইজিং এ এক সম্মেলন শেষে করমর্দন করছেন ফ্রান্সের মাখোঁ ও চীনের শি। ফাইল ছবি: রয়টার্স
২০১৯ সালে বেইজিং এ এক সম্মেলন শেষে করমর্দন করছেন ফ্রান্সের মাখোঁ ও চীনের শি। ফাইল ছবি: রয়টার্স

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ জানিয়েছেন, তিনি এপ্রিলে চীন সফর করবেন। তার উদ্দেশ্য, চীন সরকারের সহায়তায় ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন থামানোর উদ্যোগ নেওয়া।

আজ রোববার কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

শনিবার মাখোঁ এই ঘোষণা দেন।

ইতোমধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আবারও নিজের অবস্থান জানিয়েছে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র চীন। প্রতিবেশী ইউক্রেনে পরাশক্তি রাশিয়ার 'বিশেষ সামরিক অভিযানের' পর মস্কোর সঙ্গে বেইজিংয়ের ঘনিষ্ঠতার কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদের পক্ষ থেকে বেশ চাপে আছে মহাপ্রাচীরের দেশটি।

এর আগে বৃহস্পতিবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত বার্তায় ১২ দফা তুলে ধরে নিজের অবস্থান আবারও স্পষ্ট করেছে দেশটি।

শুক্রবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, চীন এই চলমান সংঘাতের রাজনৈতিক সমাধান চেয়েছে। বেইজিং চায়—যুদ্ধ বন্ধে আবারও শান্তি আলোচনা শুরু হোক এবং পশ্চিমের এক তরফা নিষেধাজ্ঞার অবসান হোক।

প্যারিসে অনুষ্ঠানরত কৃষি বিষয়ক এক প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়ার পর পৃথক বক্তব্যে মাখোঁ জানান, তিনি 'এপ্রিলের শুরুর দিকে' চীন সফরে যাবেন।

ফরাসি নেতা বলেন, 'এটা একটা সুসংবাদ, যে চীন শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে'। তিনি আরও বলেন, শান্তি তখনই আসবে যখন, 'রাশিয়ার আগ্রাসন বন্ধ হবে, সেনা প্রত্যাহার হবে এবং ইউক্রেনের ভূখণ্ডের সার্বভৌমত্ব ও জনগোষ্ঠীর প্রতি সম্মান জানানো হবে'।

তিনি যোগ করেন, 'রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য আমাদের চীনের সহায়তা প্রয়োজন, যাতে তারা কখনোই কেমিক্যাল বা পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার না করে—এবং শান্তির আলোচনার পূর্বশর্ত হিসেবে তারা যেনো এই আগ্রাসন বন্ধ করে'।

শুক্রবার চীনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি জানান, যুদ্ধের অবসানে কিয়েভকে বেইজিং এর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে।

জেলেনস্কি আরও বলেন, 'চীন ইউক্রেন নিয়ে কথা বলতে শুরু করেছে, এবং এতে খারাপ কিছু নেই। আমার কাছে মনে হচ্ছে তারা আমাদের ভূখণ্ডের অখণ্ডতা ও নিরাপত্তার বিষয়গুলোকে সম্মান করে। এ পর্যায়ে এসে আমাদেরকে চীনের সঙ্গে কাজ করতে হবে। আমাদের কাজ হবে সবাই মিলে সংহতি প্রকাশ করে একজনকে আলাদা করে ফেলা'।  

ইউক্রেনের নেতা একইসঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং এর সঙ্গেও বৈঠক করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন এবং জানান, 'এটি বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য জরুরি'।

মাখোঁর চীন সফরের ঘোষণা আসার অল্প সময় আগে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, শি জিন পিংয়ের আমন্ত্রণে ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ২ মার্চ বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেনকো রাষ্ট্রীয় সফরে চীনে থাকবেন।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দীর্ঘদিনের মিত্র হিসেবে লুকাশেনকো সুপরিচিত।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং এক বিবৃতিতে জানান, তিনি বেলারুশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই আলেইনিকের সঙ্গে শুক্রবারে ফোনে কথা বলেছেন। তিনি আলেইনিককে জানান, বেইজিং পারষ্পরিক রাজনৈতিক আস্থা প্রতিষ্ঠায় মিনস্কের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।

কিন গ্যাং আরও জানান, চীন একইসঙ্গে বেলারুশের জাতীয় স্থিতিশীলতা বজায় রাখা ও দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোতে 'বহিঃশক্তির' হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করায় সহায়তা অব্যাহত রাখবে এবং কোনো শক্তি যেনো বেলারুশের বিরুদ্ধে 'অবৈধ' একপাক্ষিক বিধিনিষেধ  আরোপ না করে, সেদিকে নজর রাখবে।

 

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh transition from autocracy to democracy

Transitioning from autocracy to democracy: The four challenges for Bangladesh

The challenges are not exclusively of the interim government's but of the entire political class.

6h ago