ভিনগ্রহের প্রাণীর অস্তিত্ব নিয়ে নাসার প্রতিবেদন আসছে আজ

৬ জন গবেষকের সমন্বয়ে গঠিত ইউএপি গবেষনা দল । ছবি: নাসা টিভি থেকে স্ক্রিণশট
৬ জন গবেষকের সমন্বয়ে গঠিত ইউএপি গবেষনা দল । ছবি: নাসা টিভি থেকে স্ক্রিণশট

অনেকদিন ধরেই পৃথিবীর আকাশে ভিনগ্রহের প্রাণীদের চালানো নভোযান বা আনআইডেন্টিফাইড ফ্লাইং অবজেক্ট (ইউএফও) উড়ে বেড়ানোর বিষয়ে গুজব ও জল্পনা কল্পনা চলছে। এ বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করার পর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করতে যাচ্ছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। এতে প্রমাণ হতে পারে ভিনগ্রহের প্রাণীর অস্তিত্ব। 

আজ বৃহস্পতিবার এএফপির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।

নাসা গত বছর জানায়, তারা আনআইডেন্টিফাইড অ্যানোমালাস ফেনোমেনা (ইউএপি) বা অজ্ঞাত অস্বাভাবিক ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ যাচাই-বাছাই করছে। একইসঙ্গে আনুষ্ঠানিক ভাষায় ইউএফও'র পরিবর্তে ইউএপি লেখার প্রচলন ঘটে।

সাধারণ মানুষের কাছে সব সময়ই শিহরণ-জাগানিয়া বিষয় হলেও মূলধারার বিজ্ঞানীদের কাছে ইউএফও ব্রাত্য বিষয় হিসেবেই পরিচিত ছিল এতকাল।

১৬ জন গবেষকের সমন্বয়ে গঠিত একটি নিরপেক্ষ দল মে মাসে তাদের প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ করে। তখন জানানো হয়, হাতে থাকা তথ্য ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ এ বিষয়ে কোন উপসংহার টানার জন্য যথেষ্ট নয়। তারা নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে আরও উচ্চমানের তথ্য সংগ্রহের আহ্বান জানান।

আজকে প্রকাশিতব্য প্রতিবেদনে এই মতাদর্শ থেকে খুব একটা সরে আসার তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই বলে ভাবছেন বেশিরভাগ বিশ্লেষক । যার ফলে, ভিনগ্রহের প্রাণীর অস্তিত্ব প্রমাণের বদলে হয়তো নাসা নতুন করে ইউএপির অনুসন্ধানে আরেকটি অভিযান শুরু করতে পারে।

নাসার বিভিন্ন নভোযান ও রোভার সৌরজগতের অন্যান্য অংশে প্রাণের অস্তিত্ব খোঁজার কাজে ব্যবহার হয়। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা দূর-দূরান্তের গ্রহে বুদ্ধিদীপ্ত সভ্যতার নিদর্শন খোঁজার চেষ্টা করলেও ঐতিহাসিক ভাবে, পৃথিবীতে ভিনগ্রহের প্রাণীর উপস্থিতি নিয়ে 'গুজব' ভুল প্রমাণ করার পেছনেই এই সংস্থাটি অনেক কাঠখড় পুড়িয়েছে।

মে মাসে এই বিজ্ঞানীরা জানান, তারা ২৭ বছরে বর্ণিত ৮০০টি 'ঘটনা' নিয়ে কাজ করেছেন। যার মধ্যে ২ থেকে ৫ শতাংশকে তারা 'অস্বাভাবিক' বা অনিয়মিত বলে অভিহিত করেন।

এগুলোকে 'যেকোনো বস্তু যা সেন্সর বা সেন্সরের পরিচালক তাৎক্ষণিকভাবে চিহ্নিত বা অনুধাবন করতে পারেনি' অথবা 'উদ্ভট কোনো ঘটনা' হিসেবে বর্ণনা করেন বিজ্ঞানী দলের অন্যতম সদস্য নাদিয়া ড্রেক।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মার্কিন সরকার ইউএপিকে গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করেছে, কারণ তারা মনে করেন, এর সঙ্গে বিদেশী রাষ্ট্রের গোয়েন্দা কার্যক্রমের সংযোগ রয়েছে। অর্থাৎ, এমনও হতে পারে যে মানুষ যেগুলোকে ভিনগ্রহের প্রাণীর কাজ ভাবছে, সেগুলো হয়তো চীন বা উত্তর কোরিয়ার মতো বৈরি রাষ্ট্রের গোয়েন্দা কার্যক্রম!

সাধারণ মানুষের কাছে সব সময়ই শিহরণ-জাগানিয়া বিষয় হলেও মূলধারার বিজ্ঞানীদের কাছে ইউএফও ব্রাত্য বিষয় হিসেবেই পরিচিত ছিল এতকাল। ফাইল ছবি: এএফপি
সাধারণ মানুষের কাছে সব সময়ই শিহরণ-জাগানিয়া বিষয় হলেও মূলধারার বিজ্ঞানীদের কাছে ইউএফও ব্রাত্য বিষয় হিসেবেই পরিচিত ছিল এতকাল। ফাইল ছবি: এএফপি

নাসার পাশাপাশি পেন্টাগনও এ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত পরিচালনা করছে। তারা একে অপরের সঙ্গে বৈজ্ঞানিক উপকরণের ব্যবহার ও প্রক্রিয়া নিয়ে সমন্বয় করলেও ২টি কার্যক্রম পুরোপুরি আলাদা।

জুলাই মাসে এক সাবেক মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা সাড়া ফেলেন। কংগ্রেসের এক কমিটির কাছে দাবি করেন, তিনি অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বিশ্বাস করেন যে সরকারের কাছে ইউএপি ও ভিনগ্রহের প্রাণীর দেহাবশেষ আছে। 

এ সপ্তাহের শুরুতে 'নন-হিউম্যান' (মানুষ নয়) সন্দেহ করা হচ্ছে এমন ২ প্রাণীর দেহ মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত কংগ্রেসের এক শুনানিতে উপস্থাপন করা হয়। যার ফলে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিস্ময়, অবিশ্বাস ও হাস্যরস ছড়িয়ে পড়ে।

মমির মতো দেখতে এই দেহাবশেষের রঙ কিছুটা ধূসর আর এটি দেখতে মানবদেহের মতোই। জেমি মসেন নামে মেক্সিকোর এক বিতর্কিত সাংবাদিক এই মরদেহগুলো উপস্থাপন করেন। তিনি ২০১৭ সালে পেরুতে এই দুই 'এলিয়েনের' মরদেহ খুঁজে পাওয়ার দাবি জানান।

Comments

The Daily Star  | English

JnU students vow to stay on streets until demands met

Jagannath University (JnU) students tonight declared that they would not leave the streets until their three-point demand is fulfilled

4h ago