শতবর্ষে সত্যজিৎ

সত্যজিৎ রায় শুধু চলচ্চিত্রকার নয়, তিনি শিল্প-সাহিত্যের সক্রিয় সারথি, বহুমুখী ব্যক্তিত্বের প্রতিভূ। কালান্তরের চিত্রনাট্যকার, শিল্প নির্দেশক, সঙ্গীত পরিচালক, লেখক, সঙ্গীত স্বর লিপিকার, সম্পাদক, প্রকাশক ও প্রচ্ছদ শিল্পী।
সত্যজিৎ রায় (২ মে ১৯২১ – ২৩ এপ্রিল ১৯৯২)। ছবি: সংগৃহীত

সত্যজিৎ রায় শুধু চলচ্চিত্রকার নয়, তিনি শিল্প-সাহিত্যের সক্রিয় সারথি, বহুমুখী ব্যক্তিত্বের প্রতিভূ। কালান্তরের চিত্রনাট্যকার, শিল্প নির্দেশক, সঙ্গীত পরিচালক, লেখক, সঙ্গীত স্বর লিপিকার, সম্পাদক, প্রকাশক ও প্রচ্ছদ শিল্পী।

তার সাধনা শিল্পের সাধনা, তার ধর্ম শিল্পের ধর্ম। সবাই নিজ নিজ উপলব্ধির জায়গা থেকে যাপন করেন তাকে, বিশ্লেষণ করেন নিজস্ব পঠন পাঠন থেকে। চিত্রের ব্যবচ্ছেদ করেন অনুভবের বোধ থেকে। তবু প্রকাশ থাকে আধুনিক বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতি জগতের এক বিরল প্রতিভা সত্যজিৎ রায়। বিশেষ করে চলচ্চিত্র পরিচালনায় তার অসাধারণ নৈপুণ্য, উদার দৃষ্টিভঙ্গি, বাংলা চলচ্চিত্রের আকাশে একটি  নক্ষত্র হয়ে যুক্ত করেছে নতুন মাত্রা। জনশ্রুতি আছে তার কারণেই বাংলা ভাষায় তৈরি চলচ্চিত্র দেশ-বিদেশে সম্মানের সঙ্গে বিবেচিত হয়। আবার কেউ কেউ বলেন, সত্যজিৎ রায়ের কাজের মাধ্যমে বাংলার সমাজ ও সংস্কৃতি বিশ্বের দরবারে উপস্থাপিত হয়েছে অনবদ্যভাবে। যার প্রাসঙ্গিকতার ঢেউ তুলছে শতবর্ষেও।

খ.

মায়ের আদরের মানিকের চোখ দুটি গোল গোল, কান দুটি বড়, মাথায় এক ঝাঁকড়া চুল। যেন বাংলার শিল্প শহরে এক সাধকের আবির্ভাব। তার শৈশব থেকে চলনে-বলনে, পোশাকে-আশাকে এমন এক সৌন্দর্য ছিল, যা মননশীল আভিজাত্যে পূর্ণ। তার পুরো পরিবার ছিল সাহিত্য মনা।

সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের ভিটা ছিল বাংলাদেশের  কিশোরগঞ্জে কটিয়াদি উপজেলার মসুয়া গ্রামে। তার বাবা প্রসিদ্ধ শিশু সাহিত্যিক সুকুমার রায়। তার ঠাকুরদা উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী ছিলেন সুপরিচিত লেখক, চিত্রকর ও দার্শনিক। সে সময় তিনি ছিলেন ব্রাহ্ম আন্দোলনের একজন নেতা। ছোটবেলায় বাবাকে হারানোর পর মায়ের সান্নিধ্যে বড় হন। বেড়ে উঠার অন্যতম অনুপ্রেরণাও ছিলেন মা সুপ্রভা দেবী। মা-ছেলের সম্পর্কের দিকটা সত্যজিৎ অনেকটা ফুটিয়ে তুলেছিলেন তার ‘অপরাজিত’ সিনেমায়।

তিনি পড়তে চেয়েছিলেন ইংরেজি সাহিত্যে। বাবার বন্ধুর কারণে পড়তে হয়েছে অর্থনীতিতে। ফলে মন বসেনি প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়ায়। তারপরও কলেজ পর্ব শেষ করে মায়ের কথা রাখতে তাকে যেতে হল শান্তিনিকেতনে। চারুশিল্প হিসেবে চিত্রকলা বিশেষ টানত না তাকে।  জীবনীকাররা বলেন, কলেজে থাকতে বিজ্ঞাপনের আগ্রহ তৈরি হলে কমার্শিয়াল আর্ট শিখতে চেয়েছিলেন তিনি। সেটা শেখার সুযোগ ছিল না শান্তিনিকেতনে। এসময় তিনি শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলেন আধুনিক ভারতীয় চিত্রকলার দুই দিকপাল আচার্য নন্দলাল বসু ও বিনোদ বিহারী মুখোপাধ্যায়কে। শান্তিনিকেতনের শিক্ষাও সম্পূর্ণ করেননি তিনি। কলকাতায় জাপানি বোমা পড়বে, এই ভয়ের আবহে ফিরে আসেন ভবানীপুরের বাড়িতে। কিন্তু এই শান্তিনিকেতনেই সত্যজিৎ পেলেন এক অমূল্য রত্নভাণ্ডারের সন্ধান।

‘স্কুলজীবন থেকে সুপরিচালিত, সু-অভিনীত ও সু-বিজ্ঞাপিত হলিউডি সিনেমা দেখে বেড়ে ওঠা, তারকা প্রথা আর স্টুডিও ব্যবস্থার গুণগ্রাহী তরুণ সত্যজিতের সামনে খুলে গেল সিনেমা আস্বাদনের এক বিকল্প পথ। শান্তিনিকেতনের গ্রন্থাগারে সত্যজিৎ খুঁজে পেয়েছিলেন চলচ্চিত্র বিষয়ে বই। সত্যজিৎ পরিচালক জীবনের নানা পর্বে নানা কথোপকথনে বইগুলোর উল্লেখ করেছেন। বলেছেন এসব পড়ে সিনেমার শিল্পরূপ বিষয়ে আগ্রহী হয়েছিলেন। প্রেসিডেন্সির ডিগ্রি তার কোনো কাজে আসেনি। শান্তিনিকেতন নিয়েও খুব উচ্ছ্বসিত হননি কখনও।’ (শিক্ষানবিশের পাঠক্রম/ সোমেশ্বর ভৌমিক)

মনোযোগ দিয়ে কাজ করে গেছেন তিনি। কোনো প্রতিষ্ঠান, বংশ নিয়ে অহমিকা ছিল না। চলনে ছিল না তাড়াহুড়া। জীবনের ইঁদুর-দৌড়ে অংশ নেননি। লোভে পড়ে মননশীলতা ভুলে যাননি। কাজ করতে গিয়ে বিপর্যস্ত করেননি কাউকে। ধীরে ধীরে সময় দিয়ে জীবনের হিসাব বুঝে নিয়েছেন।

বলা যায়, সিগনেট সংস্করণ ক্ষীরের পুতুলের জন্য অলংকরণ দিয়েই সত্যজিতের গ্রন্থ চিত্রণের শুরু। সেই সংস্করণে সত্যজিতের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছিল শিল্পী সত্যজিৎ রায় বলে। এও বলা হয়েছিল যে তার শিল্প প্রতিভা দেখে প্রকাশক মনে করছেন, অলংকরণে তিনি বিশেষ সুনাম অর্জন করতে পারবেন। সিগনেট প্রকাশনের কর্ণধার ডি কে, কিংবদন্তি দিলীপ কুমার গুপ্তের ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হয়েছিল।

সত্যজিৎ স্মৃতিচারণে বলেছেন, ‘ডি কে-র আসল আগ্রহ যে পুস্তক প্রকাশনায়, কিছুদিনের মধ্যেই সেটা বুঝতে পারি। এর অল্পকাল বাদে কিমারের অন্যতম কর্তাব্যক্তির দায়িত্বভার হাতে থাকা অবস্থাতেই তিনি সিগনেট প্রেস নাম দিয়ে এক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের পত্তন করলেন। আমাকে দিলেন বইয়ের প্রচ্ছদ ডিজাইনের ভার। আর ছাপা, বাঁধাই ইত্যাদি তত্ত্বাবধানের ভার নিলেন নিজেই। প্রথমেই যে কয়েকখানা বই তিনি প্রকাশ করলেন, প্রকাশনা জগতে তাতে একেবারে হইচই পড়ে যায়। আমার অবদানও নগণ্য ছিল না। বিশুদ্ধ বঙ্গীয় মোটিফের অলংকৃত প্রচ্ছদ, হাতের লেখার ছাঁচে গ্রন্থনাম, সেই সঙ্গে কখনো কখনো তুলি কিংবা কলমে আঁকা ছবি, বইয়ে এ কাজ আমিই প্রথম করি।’

সত্যজিতের প্রচ্ছদ অলংকরণের পুনর্জীবিত হতে চলেছে আনন্দ সিগনেট প্রেস। আম আঁটির ভেঁপু, চাঁদের পাহাড়- আগেই প্রকাশিত হয়েছিল। এ বার প্রকাশিত হলো সত্যজিতের প্রচ্ছদ ও অলংকরণে সাজানো সমার সেট মমের গল্প, পিরানদেল্লোর গল্প আর লরেন্সের গল্প। তিনটিতেই প্রচ্ছদ ও লেখকের প্রতিকৃতি সত্যজিৎ রায়ের। পাশাপাশি সপ্তর্ষি প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হয়েছে সত্যজিতের অলংকরণ নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একমাত্র ইংরেজি নাটক কিং অ্যান্ড রেবেল, মূল ও জগদিন্দ্র ভৌমিকের অনুবাদে।

নিজের অলংকরণে ‘সন্দেশ’ পত্রিকায় নাটকের অনুবাদ প্রকাশ করেছিলেন। এইভাবে প্রচুর বইয়ের কাজ করেন। জীবনানন্দ দাসের ‘বনলতা সেন’ ও ‘রূপসী বাংলা’র প্রচ্ছদ, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘চাঁদের পাহাড়’ এবং জওহরলাল নেহেরুর ‘ডিসকভারি অব ইণ্ডিয়া’সহ বহু বইয়ের প্রচ্ছদও ছিল।

সত্যজিৎ রায় দেশ ভাগের পর ১৯৪৮ সালে নির্মিত ভিত্তোরিও ডি সিকা পরিচালিত ইতালিয়ান ছবি ‘দ্য বাই সাইকেল থিভস’ দেখে নির্মাণে অনুপ্রাণিত হন। খুঁজে পান কাজের নতুন দিগন্ত। মানুষের জীবন দেখার চোখ, সময় পাঠ ও প্রজ্ঞায় এগিয়ে যেতে থাকে তার শিল্প তরী। তৈরি করেন ‘পথের পাঁচালী’। যা বদলে দেয় ভারতীয় সিনেমার প্রেক্ষাপট। (এর মধ্যে অনেক টানাপোড়নের গল্প আছে, আছে শিল্পের যন্ত্রণা) তবে তার কাজের অন্যতম অপুর ত্রিলজি, চারুলতা, মহানগর, অরণ্যের দিনরাত্রি, সোনার কেল্লা, হীরক রাজার দেশে, ঘরে-বাইরে, পরশ পাথর, নায়ক ইত্যাদি।

মোট ৩৬টি সিনেমা তিনি পরিচালনা করেছেন। চলচ্চিত্র বোদ্ধাদের নানা আলোচনা থেকে দেশ থেকে দেশান্তরে ছড়িয়ে পড়ে সত্যজিতের ছবিগুলোর নান্দনিকতা। আলোচকরা বলেন, সত্যজিতের সিনেমার বেশ কিছু ডায়লগ তার পিতা সুকুমার রায়ের সৃষ্টি থেকে অনুপ্রাণিত। যেমন সোনার কেল্লার সেই বিখ্যাত ট্রেনের দৃশ্য, যেখানে লালমোহন বাবুর সঙ্গে প্রথমবার আলাপ হবে ফেলুদার। লালমোহন বাবু ফেলুদাকে বলেন, ‘ছাতি ২৬, কোমর ২৬, গলা ২৬, আপনি কী মশায় শুয়োর?’ এটা সুকুমার রায়ের হযবরল থেকে নেওয়া।

শুধু গল্প আর সংলাপই না, ক্যামেরার কাজ নিয়েও তিনি ছিলেন সতর্ক। কতটা সতর্ক তা বোঝার জন্য বিজলী ও সত্যজিৎ রায়ের আর একটি ঘটনার কথা বলি। ‘বিজলীতে অশনি সংকেত ছবির এক বিশেষ প্রদর্শনীতে উপস্থিত সত্যজিৎ রায়। ছবি চলার মাঝপথে তিনি হঠাৎ প্রজেকশন রুমে ঢুকে অপারেটর মনোরঞ্জন বাবুকে (আচার্য) বলেন, প্রোজেক্টরের লেন্সে কোনো গণ্ডগোল আছে। মনোরঞ্জন বাবু কিছু বুঝতে না পারায় সত্যজিৎ বাবু লেন্সটি খুলে ছাদে নিয়ে সূর্যের আলোয় মনোরঞ্জন বাবুকে দেখান, লেন্সের গায়ে একটা খুব ছোট কালো বিন্দু মতো দাগ। যেটা ছবি চলাকালীন কোনো একটা দৃশ্যে চরিত্রের মুখের ওপর তিল চিহ্নের মতো দেখিয়েছে।’ (কলকাতার সিনেমা হল, সুজয় ঘোষ)

শ্যাম বেনেগাল একটা কথা প্রায়ই বলতেন— ‘সত্যজিৎ রায়ই হচ্ছেন একমাত্র ভারতীয় চলচ্চিত্রকার, যিনি ছবি করেছেন ভারতীয় পদ্ধতিতে।’

প্রজন্মের শেখার মতো অনেক ঘটনা আছে, অনেক অনুপ্রেরণার গল্প আছে। উদারতার ক্যানভাসে বলিউড শাহেনশা অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে শতরঞ্জ কি খিলাড়ি সিনেমায় কাজ করেন সত্যজিৎ রায়। এতে অমিতাভ বচ্চনকে ভাষ্যকার হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। বিশ্বের কাছে তিনি পরিচালক বলে সমাদৃত। কারো কারো কাছে তিনি অত্যন্ত সমাদৃত লেখক। অনেকের প্রিয় লেখক।

গ.

শিল্পের নানা কাজে সাধারণ থেকে অসাধারণ, ব্যক্তি থেকে হয়ে ওঠেন প্রতিষ্ঠান। যাকে ঘিরে কয়েক দশক ধরে জড়ো হয় শত জিজ্ঞাসা আর রহস্য। পরিণত হয়েছেন কিংবদন্তিতে, তৈরি হয়েছে কম জানা বেশি মানুষের উপাখ্যানে।

কয়েক প্রজন্ম পেরিয়ে চিরায়িত বাংলা ভাষা সাহিত্য পাঠকের জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে তার সৃষ্ট তুখোড় চরিত্র— ফেলুদা, লালমোহন বাবু, প্রফেসর শঙ্কু, হীরক রাজা। ‘তাড়িনী খুড়ো’ যেন আজও জীবন্ত অনেকের কাছে। এছাড়া একের পিঠে দুই, আরও বারো, এমন মজার সব শিরোনামে ১২টির সংকলনে লিখেছেন অসংখ্য ছোটগল্প।

সত্যজিৎ রায় সমগ্র’র মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো চলচ্চিত্র বিষয়ক ‘একেই বলে শুটিং’, আত্মজীবনীমূলক ‘যখন ছোট ছিলাম’ এবং ছড়ার বই ‘তোড়ায় বাঁধা ঘোড়ার ডিম’।

একবার বিবিসি বাংলার জন্য সত্যজিৎ রায়ের সাক্ষাতকার নেন কবি সৈয়দ শামসুল হক। প্রসঙ্গত কবি বলেন, ‘বিশ্বসাহিত্যের দরবারে বাংলা সাহিত্যকে স্থাপন করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ, বিশ্ব চলচ্চিত্রে বাংলা চলচ্চিত্রকে সত্যজিৎ রায়। বাংলা ও বাঙালির সুর ও অস্তিত্ব অনুভবকে তারা দুজনেই বিশ্বধারায় যোগ করে দিতে পেরেছিলেন। ফলে তাদের রচনা পরে বিশ্বসাহিত্য বা চলচ্চিত্রও আর আগের মতো থাকে না, হয়ে ওঠে অধিক ধনী। রবীন্দ্রনাথের মতো সত্যজিৎও ছিলেন সব্যসাচী। সত্যজিৎ চলচ্চিত্রের মতো সমবায়ী শিল্পের প্রধান প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজের হাতে কাজ করেছেন। ফলে তার চলচ্চিত্র সর্ব অর্থে তারই করোটির সন্তান। আবার চলচ্চিত্র শুধু নয়, ব্যবহারিক শিল্পের ক্ষেত্রেও বঙ্গভূমে তিনি এনেছেন বিপ্লব বইয়ের প্রচ্ছদ, অলংকরণ, বাংলা হরফের রূপ নির্মাণ ও বিন্যাস রচনায়। ইংরেজি নতুন হরফ রূপ তিনি রচনা করেছেন রে-রোমান; লিখেছেন শিশু ও কিশোরদের জন্য কালজয়ী গল্প ও উপন্যাস এবং পরিমাণে খুব সামান্য হলেও বড়দের জন্যে অসাধারণ কিছু রচনা। আর চলচ্চিত্র সমালোচক ও তাত্ত্বিক হিসেবে তো তিনি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠদের একজন।’

‘অস্কার পুরস্কার জেতার সময় দাদা (সত্যজিৎ রায়) কলকাতার বেলভিউ নার্সিং হোমে। অস্কার কমিটির দুজন সদস্য এসে মানিক দার হাতে পুরস্কার তুলে দেন। সাংবাদিকদের ভিড় কমলে মানিকদার বাড়ি যাই। তাদের শোয়ার ঘরে ঢুকে দেখি শূন্য ঘর, বিছানার মাথার কাছে জ্বলজ্বল করছে সেই অস্কার পুরস্কার। মঙ্কুদির অনুমতি চাইলাম পুরস্কারের ছবি তোলার। “তোমার যেমন খুশি সেভাবে ছবি নাও” বলে মঙ্কুদি ঘুমিয়ে পড়লেন। পুরস্কারটি হাতে নিয়ে আমার চোখের পাতা এমনিতেই ভিজে গেল। পুরস্কার হাতে মানিকদার ছবি তোলা হলো না। শুধু পুরস্কারের ছবিই তুললাম। মানিক দা ও বউদি আমাকে অনেক ভালোবাসতেন। বাংলাদেশ নিয়ে অনেক গল্প করতেন। তার খুব ইচ্ছা ছিল বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি নিয়ে “পদ্মা নদীর মাঝি” সিনেমা বানাবেন। কিন্তু তার আগে বড্ড অসময়েই দাদা চলে গেলেন না ফেরার দেশে। (ফটোগ্রাফার সাইদা খানম, আমার মানিক দা/প্রথম আলো)

মৃত্যুর মাত্র কয়েকদিন আগে সত্যজিৎ রায়কে ভারত রত্ন পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। মৃত্যুর পর তাকে মরণোত্তর আকিরা কুরোসাওয়া পুরস্কার প্রদান করা হয়। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানিত করেন ডক্টরেট ডিগ্রী দিয়ে। চার্লি চ্যাপলিনের পর দ্বিতীয় ফিল্ম ব্যক্তিত্ব হিসেবে এই সম্মান পান সত্যজিৎ রায়।

Comments

The Daily Star  | English

Age limit for govt job entry: Panel suggests 35yrs for men, 37 for women

A government committee has recommended raising the maximum age limit for applying for public service jobs to 35 years for male candidates and 37 years for female applicants..The five-member committee, formed to review the feasibility of extending the age limit for applying for government j

3h ago