মাখোঁর জয়, ‘ফ্রেক্সিট’র হাত থেকে বাঁচলো ফ্রান্স

ফ্রান্সে গতকাল রোববার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মূলত ২ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও আসলে লড়াই হয়েছে পশ্চিম ইউরোপের দেশটিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউয়ের টিকে থাকা বা না থাকা নিয়ে।
বিজয়ের পর প্যারিসে সস্ত্রীক ইমানুয়েল মাখোঁ। ছবি: এএফপি

ফ্রান্সে গতকাল রোববার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মূলত ২ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও আসলে লড়াই হয়েছে পশ্চিম ইউরোপের দেশটিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউয়ের টিকে থাকা বা না থাকা নিয়ে।

বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা আসতে নির্বাচনী প্রচারণায় জোর দিয়ে বলেছিলেন, 'এটি হতে যাচ্ছে ঐক্যবদ্ধ ইউরোপের পক্ষে বা বিপক্ষে গণভোট'।

আজ সোমবার ফরাসি গণমাধ্যম ফ্রান্স টুয়েন্টিফোর জানিয়েছে, ফ্রান্সের জনগণ আবারও উগ্র ডানপন্থি মতবাদকে প্রত্যাখ্যান করে ইইউপন্থি মাখোঁকে নির্বাচিত করেছেন।

নির্বাচনে মাখোঁ পেয়েছেন ৫৮ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট ও তার প্রতিদ্বন্দ্বী পেন পেয়েছেন ৪১ দশমিক ২ শতাংশ ভোট। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম ফ্রান্সে কোনো উগ্র জাতীয়তাবাদী প্রার্থী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এতো ভোট পেলেন।

মাখোঁর মতে, তার এই বিজয় ফ্রেক্সিটের হাত থেকে ফ্রান্সকে বাঁচিয়েছে। কেননা, যে ফ্রান্স ২৭ জাতির ইইউয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, সেই ফ্রান্সকে সেই জোট থেকে বের করে আনার পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছিলেন মাখোঁর প্রতিদ্বন্দ্বী লে পেন।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ৪৪ বছর বয়সী মাখোঁ আগামী ৫ বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেও তিনি একটি স্পষ্টত বিভাজিত জাতির নেতৃত্ব দেবেন। যদিও বিজয়ের পর মাখোঁ বলেছেন, তিনি সব ফরাসির প্রেসিডেন্ট।

নিজের পরাজয় মেনে নিয়ে ৫৩ বছর বয়সী লে পেন বলেন, 'আমরা যে আদর্শ নিয়ে কাজ করছি তা এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।' তিনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছেন আগামী জুনে পার্লামেন্টারি নির্বাচনে মাখোঁর বিরুদ্ধে তিনি নেতৃত্ব দেবেন।

২০০৭ সালের পর মাখোঁই প্রথম দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন। সেসময় তার পূর্বসরী জ্যাক শিরাক দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন।

তাই তার বিজয়ের সংবাদ প্রচারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইইউয়ের নেতারা তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রধান শার্লে মিশেল বলেছেন, 'মাখোঁর এই বিজয়ের মানে হলো ফ্রান্সে ইউরোপীয় ইউনিয়ন আরও ৫ বছর টিকে থাকবে।'

ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি ফরাসি প্রেসিডেন্টকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, 'ইউরোপের জন্য এটি চমৎকার সংবাদ।'

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানশেজ বলেছেন, 'এই বিজয় গণতন্ত্রের, এই বিজয় ইউরোপের।'

Comments