দালাল-লেবারমুক্ত হলো বেনাপোল চেকপোস্ট, যোগ হলো ১০০ ট্রলি

বেনাপোল স্থলবন্দরে রোববার ভারত থেকে আসা যাত্রীদের একাংশ। ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ ৫০ বছর পর বেনাপোল কাস্টমস চেকপোস্টকে দালাল ও লেবার মুক্ত করা হয়েছে। যাত্রী সেবার মান বাড়াতে কাস্টমস ইতোমধ্যে মালামাল বহনের জন্য ১০০ ট্রলির ব্যবস্থা করেছে।

আজ রোববার থেকেই যাত্রীরা এসব ট্রলি ব্যবহার করতে পারছেন বলে কাস্টমস সূত্র দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছে।

বেনাপোল কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার মো. আব্দুল কাইউম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কাস্টমস কমিশনারের নির্দেশে কঠোর প্রতিবন্ধকতার মধ্যে আমরা কাস্টমস চেকপোস্টকে দালালমুক্ত করেছি। সেই সঙ্গে ১০০ জন লেবারকে উচ্ছেদ করেছি।'

'স্বাধীনতার পর থেকে কাস্টমসের কর্মকর্তারা চেকপোস্টকে বহিরাগত দালাল ও লেবার মুক্ত করতে পারেনি,' বলেন তিনি।

বেনাপোল চেকপোস্টে ট্রলিতে মালামাল বহন করছেন এক যাত্রী। ছবি: সংগৃহীত

তিনি জানান, ভারতের ভিসাধারী যাত্রী ছাড়া কাউকে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন টার্মিনালে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

ডেপুটি কমিশনার অনুপম চাকমা জানান, কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনকে দালালমুক্ত করতে প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে অত্যাধুনিক স্ক্যানিং মেশিন ও সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সশস্ত্র আনসার দিয়ে জোরদার করা হয়েছে যাত্রীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের প্রধান ফটকে বন্দরের নিরাপত্তা কর্মী, আনসার সদস্য ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক নজরদারিতে দালাল ও লেবার প্রবেশ করতে পারছে না বলে জানান তিনি।

রোববার বেনাপোল দিয়ে ভারতফেরত যাত্রী বেলায়েত হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বেনাপোল চেকপোস্টে এসে কাস্টমসের সেবার মান দেখে বিমানবন্দরের মতো মনে হচ্ছে। লেবার ও দালালদের লাগেজ টানা-হ্যাঁচড়ার কোনো ঝামেলা নেই। ট্রলিতে করে খুব সহজেই মালামাল বহন করতে পেরেছি।'

কাস্টমস সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোল চেকপোস্টে এক শ্রেণীর দালাল ভিসাধারী যাত্রীদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছিল। যাত্রীদের অভিযোগের পর চেকপোস্ট, কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনকে দালালমুক্ত করার ঘোষণা দেওয়া হয়।

বেনাপোল চেকপোস্ট পুলিশ ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ রাজু আহমেদ ডেইলি স্টারকে জানান, বর্তমানে সব যাত্রীকে সিরিয়ালে দাঁড় করিয়ে পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হচ্ছে। যাত্রীদের সেবার মান বাড়াতে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে ইতোমধ্যে কাউন্টারের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।

ক্যান্সার রোগী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বয়স্কদের জন্য পৃথক কাউন্টারে সেবা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

বেনাপোল কাস্টম হাউসের যুগ্ম-কমিশনার আব্দুর রশীদ মিয়া বলেন, 'যাত্রীদের সেবার মান বাড়াতে, সুন্দর পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছে। বর্তমানে কোনো ধরনের হয়রানি ছাড়া যাত্রীরা ট্রলি ব্যবহার করে ভারতে আসা-যাওয়া করছেন।'

জানতে চাইলে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার মো. আজিজুর রহমান বলেন, 'বেনাপোল আন্তর্জাতিক কাস্টমস চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন ১০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করছেন । প্রতি বছর প্রায় ৩০ লাখ যাত্রী ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করে থাকেন।'

'করোনা সংক্রমণ কমে আসায় যাত্রী যাতায়াত বৃদ্ধি পেয়েছে' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'গত ১৮ দিনে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যাতায়াত করেছেন ১ লাখ ৪১ হাজার ২১০ জন যাত্রী।'

Comments

The Daily Star  | English

Rohingyas may go hungry after November: WFP

Food assistance for over 1.2 million Rohingyas in Bangladesh will end after November 30 unless urgent funds are secured, the World Food Programme has warned.

9h ago