বন্যায় সিরাজগঞ্জে সাড়ে ৩ হাজার পরিবার গৃহহীন
ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৩৩-৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ অবস্থায় জেলার ৫ উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র বলছে, এতে গৃহহীন হয়ে পড়েছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার পরিবার।
আগামী কয়েক দিনে পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
পাউবো সূত্রে জানা যায়, আজ সোমবার সকাল থেকে যমুনার পানি কাজিপুর পয়েন্টে ১৫ দশমিক ৬২ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে, যা বিপৎসিমার ৩৭ সেন্টিমিটার ওপরে। এছাড়া সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনার পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে।
এদিকে পানির চাপে শাহজাদপুর উপজেলার রাউতারা এলাকার একটি বাঁধ ভেঙে চলনবিল অঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। পাশাপাশি সদরের মালশাপাড়া এলাকায় একটি মাটির রাস্তাও ভেঙে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, 'রাউতারার বাঁধটি স্থায়ী কোনো বাঁধ নয়। প্রতিবছর অস্থায়ী ভিত্তিতে বাঁধটি নির্মাণ করা হয়, আর বর্ষার সময় মাছ চাষের জন্য ভেঙে দেওয়া হয়।'
এ ছাড়া যমুনা নদীর পানি বাড়ায় সিরাজগঞ্জের ভেতর দিয়ে বয়ে চলা ফুলজর, ইছামতি, করতোয়া ও বড়ালসহ অন্য নদ-নদীর পানিও বেড়েছে বলে জানান নাসির উদ্দিন। এতে করে জেলার নিচু এলাকা ও চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামানের হিসাবে, এ পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ সদরসহ কাজিপুর, চৌহালি, বেলকুচি ও শাহজাদপুর উপজেলার ২৫ ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম বন্যা কবলিত হয়েছে। গৃহহীন হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৪৩০টি পরিবার।
ইতোমধ্যে বন্যাকবলিত ৫ উপজেলায় মোট ১৮১ টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে জানিয়ে আক্তারুজ্জামান বলেন, 'কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছে না। সবাই বাঁধ, সড়ক ও উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছেন।'
পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরি বৈঠক করার পাশাপাশি জেলা প্রশাসন ৫ উপজেলার অনুকূলে ১৪০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
Comments