রাশিয়া এখন চীনের সবচেয়ে বড় তেল সরবরাহকারী দেশ

ইউক্রেনে হামলার কারণে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নেমে এসেছে কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা। এ পরিস্থিতিতে মূল্য ছাড়ে অপরিশোধিত তেল বিক্রি করে চীনের তেল আমদানির প্রধান উৎসে পরিণত হয়েছে দেশটি।
রাশিয়ার অন্যতম বৃহৎ তেল পরিশোধানাগার তানেকো রিফাইনারি কমপ্লেক্স। ফাইল ছবি: রয়টার্স
রাশিয়ার অন্যতম বৃহৎ তেল পরিশোধানাগার তানেকো রিফাইনারি কমপ্লেক্স। ফাইল ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেনে হামলার কারণে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নেমে এসেছে কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা। এ পরিস্থিতিতে মূল্য ছাড়ে অপরিশোধিত তেল বিক্রি করে চীনের তেল আমদানির প্রধান উৎসে পরিণত হয়েছে দেশটি।

আজ যুক্তরাজ্যের সংবাদ মাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

মে মাসে রাশিয়া থেকে আমদানি করা তেলের পরিমাণ ১ বছর আগের তুলনায় ৫৫ শতাংশ বেড়েছে, যা একটি নতুন রেকর্ড। ফলে সৌদি আরবকে স্থানচ্যুত করে চীনের আমদানিকৃত তেলের প্রধান উৎসে পরিণত হয়েছে রাশিয়া।

করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট মন্দা ও সার্বিকভাবে অর্থনীতির গতি কমে গেলেও রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বাড়িয়েছে চীন।

ফেব্রুয়ারিতে চীন ও রাশিয়া যৌথভাবে ঘোষণা দিয়েছিল, তাদের বন্ধুত্বের কোনো 'সীমা নেই।'

ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা রুশ তেল বর্জন করলেও চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত পরিশোধনাগার সাইনোপেক ও ঝেনহুয়া ওয়েলের মত প্রতিষ্ঠানগুলো রাশিয়া থেকে মূল্য ছাড়ে অপরিশোধিত তেল আমদানি বাড়িয়েছে।

চীনের শুল্ক বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে রাশিয়া থেকে ৮৪ লাখ ২০ হাজার টন তেল এসেছে। এর অধিকাংশই এসেছে ইস্ট সাইবেরিয়া প্যাসিফিক ওশ্যান পাইপলাইন দিয়ে এবং সমুদ্রপথে।

একই সময়ে, সৌদি আরব থেকে আসা তেলের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৮ লাখ ২০ হাজার টনে।

মার্চে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য জানায়, তারা রুশ তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। ইতোমধ্যে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার গ্যাসের ওপর নির্ভরতা কমানোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

গত সপ্তাহে ফিনল্যান্ড ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ারের (সিআরইএ) এক সমীক্ষায় জানা যায়, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ১০০তম দিন পর্যন্ত রাশিয়া জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানি রপ্তানি থেকে ৯৮ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে।

সিআরইএর প্রতিবেদন মতে, যুদ্ধের প্রথম ১০০ দিনে রাশিয়ার জীবাশ্ম ভিত্তিক জ্বালানি রপ্তানির ৬০ শতাংশের ক্রেতা ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যার মূল্যমান প্রায় ৬০ বিলিয়ন ডলার।

সার্বিকভাবে, রুশ তেল ও গ্যাসের রপ্তানি কমেছে। মার্চে জ্বালানী খাত থেকে দিনে ১ বিলিয়ন ডলার করে রাজস্ব আয় করতো মস্কো।

তবে সিআরইএ'র হিসেব অনুযায়ী, অভিযানের ১০০ দিনের চেয়েও বেশি সময় পরে এসেও যুদ্ধের খরচের চেয়ে রাশিয়ার রাজস্ব আয় বেশি। সংস্থার প্রাক্কলিত হিসেব অনুযায়ী, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে পরিচালিত সামরিক অভিযানে রাশিয়া প্রতিদিন ৮৭৬ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৮ হাজার ১৩০ কোটি টাকা) খরচ করছে।

আজ সোমবার প্রকাশিত তথ্যে আরও জানা গেছে, চীন গত মাসে ইরান থেকে ২ লাখ ৬০ হাজার টন অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছি। গত ডিসেম্বর থেকে এটি ইরান থেকে আসা তৃতীয় চালান।

তেহরানের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ সত্ত্বেও দেশটি থেকে তেল আমদানি বন্ধ করেনি চীন।

 

Comments