সত্তরে নির্বাচিত এমএনএ-এমপিএদেরও তালিকা তৈরির সুপারিশ

মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনীর পাশাপাশি পাকিস্তানের পক্ষ নেওয়া ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত এমএনএ এবং এমপিএদের তালিকাও তৈরি করবে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল। 
সংসদ
ফাইল ছবি

মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনীর পাশাপাশি পাকিস্তানের পক্ষ নেওয়া ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত এমএনএ এবং এমপিএদের তালিকাও তৈরি করবে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল। 

জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল বিল পরীক্ষা করে এক প্রতিবেদনে ওই তালিকা তৈরির সুপারিশ করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

আজ সোমবার সংসদীয় কমিটির সভাপতি শাজাহান খান এই সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন সংসদে উপস্থাপন করেন।

গত ৬ জুন 'জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল বিল-২০২২' সংসদে উত্থাপন করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক। পরে বিলটি পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।

সংসদে উত্থাপিত বিলে বলা হয়েছে, '১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত যারা রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস বাহিনীর সদস্য হিসেবে বা আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন, বা আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্য হিসেবে সশস্ত্র যুদ্ধে নিয়োজিত থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন, বা খুন, ধর্ষণ, লুট, অগ্নিসংযোগ করে নিরীহ মানুষকে হত্যার মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধ করেছেন, অথবা একক-যৌথ বা দলীয় সিদ্ধান্তক্রমে প্রত্যক্ষভাবে, সক্রিয়ভাবে বা পরোক্ষভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন, তাদের তালিকা প্রণয়ন ও গেজেট প্রকাশের জন্য সরকারের কাছে  সুপারিশ করা হবে।'

সংসদীয় কমিটি তাদের প্রতিবেদনে 'মুজাহিদ বাহিনী' ও 'পিস কমিটির' সদস্যদের তালিকা তৈরির বিধান রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। 

একইসঙ্গে, ১৯৭০ সালের নির্বাচনে যারা এমএনএ-এমপিএ নির্বাচিত হয়ে পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল তাদের এবং বাংলাদেশের পক্ষ নেওয়ার কারণে শূন্য ঘোষিত আসনে উপনির্বাচনে পাকিস্তান সরকারের নির্বাচিত এমএনএ ও এমপিএদের তালিকা তৈরির সুপারিশ করেছে।

২০১৯ সালে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল বিলের খসড়া তৈরি করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ওই বছর ২৯ ডিসেম্বর আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সুপারিশও নেওয়া হয়।

২০২০ সালের ডিসেম্বরে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ২টি সংশোধনী দিয়ে ওই খসড়ার নীতিগত অনুমোদন করা হয়। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য তা গত জুনে মন্ত্রিপরিষদ সভায় পাঠানো হয়।

এ বছরের জানুয়ারি মাসে খসড়া আইনের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।

রাজাকারদের তালিকা তৈরি করতে ২০২০ সালে একটি উপ-কমিটি করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

কমিটি প্রথমে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করবে। পরে খসড়া আইনটি মন্ত্রিসভায় যাওয়ার পর তারা সিদ্ধান্ত পাল্টায়। গত এপ্রিল মাসে আগের কমিটি ভেঙে নতুন করে উপ-কমিটি পুনর্গঠন করা হয়।

Comments