গরমে বিড়ালের যত্ন

পার্সিয়ান বিড়াল। ছবি: ভেট স্ট্রিটের সৌজন্যে

গরমে বিড়ালের হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। তাই এ সময় তাদের বিশেষ যত্ন প্রয়োজন।

গরমে কীভাবে বিড়ালের যত্ন নিতে হবে তা নিয়ে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলেছেন, 'পাউ লাইফ কেয়ার' এর ভ্যাটেরিয়ান ডা. ফাতিহা ইমনুর ইমা।

তীব্র গরমে বিড়ালের যত্ন নিতে তিনি দিয়েছেন বিভিন্ন পরামর্শ।

ছবি: ভেট স্ট্রিটের সৌজনে

খাবার পানি

গরমে বিড়ালকে প্রচুর পরিমাণ পানি খাওয়াতে হবে। বিড়ালের খাবারের জায়গা বা তার আশে পাশে সব সময় পানির পাত্র রাখতে হবে যাতে সে ইচ্ছা মতো পানি পান করতে পারে। এক্ষেত্রে একটা জিনিস খেয়াল রাখা উচিত, বিড়াল ও কুকুরের পায়ের পাতা ঘামে। তাই তার চলার পথে বা বসে থাকার জায়গায় পায়ের ভেজা দাগ দেখলে বুঝতে হবে প্রচুর পানি শরীর থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ তার পানি দরকার।

ছবি: ভেট স্ট্রিটের সৌজনে

খাবার

গরমকালে অনেকেই অভিযোগ করেন বিড়াল খাবার কম খাচ্ছে। এটা আসলে স্বাভাবিক ব্যাপার। গবেষণায় দেখা গেছে বিড়াল গরমকালে শীতকালের তুলনায় প্রায় ১৫ শতাংশ খাবার কম খায়। গরমের সময় বিড়ালকে ফ্রেশ খাবার দিতে এবং শুকনো খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। ড্রাই ক্যাটফুড এড়িয়ে চেষ্টা করতে হবে ঘরোয়া খাবার খাওয়ানো। খাবারে তেল-চর্বির পরিমাণ শীতকালের তুলনায় অল্প হলে ভালো। বিস্কুট, কেক জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলাই উত্তম। স্ট্রেস কমানোর জন্য ভিটামিন সি যুক্ত খাবার যেমন, লেবুর রস, টক দই দেওয়া যায়। তবে সেটা খুব অল্প পরিমাণে। সপ্তাহে ২ বার।

ছবি: ভেট স্ট্রিটের সৌজনে

ঘুম

বিড়াল প্রজাতিভেদে দিনে ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত ঘুমায়। গরমকালে শরীরে অতিরিক্ত তাপ উৎপাদন থেকে বাঁচতে ঘুমের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। তাই এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ নাই। তাকে তার মতো ঘুমোতে দিতে হবে।

ছবি: ভেট স্ট্রিটের সৌজনে

খেলাধুলা

স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। তবে গরমে বিড়াল খেলাধুলা একটু কমিয়ে শান্ত থাকতে চায়। খেয়াল রাখতে হবে সরাসরি রোদের মধ্যে যেন না যায়। খেলাধুলার সময়টা হবে সকাল এবং রাতে অর্থাৎ যখন একটু ঠাণ্ডা পরিবেশ থাকে।

ছবি: ভেট স্ট্রিটের সৌজনে

গোসল

বিড়ালের গোসল নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলে থাকেন। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা সম্পূর্ণ নিজস্ব। তবে শীতের তুলনায় ঘন ঘন গোসল করানো যায় গরমের সময়। গোসল শরীর ঠাণ্ডা রাখার খুব সহজ একটা উপায়। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে কানে যেন পানি না ঢুকে এবং গোসলের পর অবশ্যই গা ভালো ভাবে শুকিয়ে দিতে হবে। এছাড়া খুব গরমের সময় পায়ের পাতা বার বার ভেজা কাপড়ে মুছে দিলে বা পানিতে ভিজিয়ে রাখলেও শরীর খুব দ্রুত ঠাণ্ডা হয়। গোসল করাতে না চাইলে প্রতিদিন ভেজা কাপড়ে গা মুছে দেওয়া যায়।

ছবি: ভেট স্ট্রিটের সৌজনে

গ্রুমিং

গরমের সময় বিড়াল স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি নিজের শরীর চাটে। এতে করে মুখের লালা গায়ে লাগে এবং সেটা বাষ্পীভূত হওয়ার সময় শরীর ঠাণ্ডা হয়। তাই এটা দেখে ভয় পাবার কিছু নাই। পার্সিয়ান, ম্যানিকোন ইত্যাদি লোমস বিড়ালের ক্ষেত্রে গরমের আগে গায়ের লোম হালকা ট্রিম করে দেওয়া ভালো। এতে করে লোম পড়া অনেক কমে এবং শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। এছাড়াও গরমে প্রচুর মাইট, ম্যাগট, ফ্লী এগুলো হয় গায়ে। তাই গরমে প্রতিদিন বিড়ালের লোম আঁচড়ে দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। এতে করে পরজীবী দূরে থাকবে এবং ভেঙে যাওয়া লোম ফেলে দেওয়া সহজ হয়।

ছবি: ভেট স্ট্রিটের সৌজনে

থাকার জায়গা

গরমের সময় অবশ্যই বিড়ালকে ঠাণ্ডা স্থানে রাখতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন অতিরিক্ত ঠাণ্ডা না লাগে। এ সময় কোনো ভাবেই বিড়াল ছাদে আটকে রাখা যাবে না।

অতিরিক্ত গরম লাগলে করণীয়

 ১. বিড়ালের অতিরিক্ত গরম লাগলে অবশ্যই খুব দ্রুত তাকে ঠাণ্ডা পরিবেশে নিয়ে আসতে হবে। তবে সরাসরি এসির সবচেয়ে কম তাপমাত্রায় না নিয়ে একটু সময় নিয়ে আস্তে আস্তেই ঠাণ্ডা করতে হবে।

২. পায়ের পাতা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে অথবা ভেজা কাপড়ে পা মুছে দিতে হবে

৩. প্রচুর পানি খেতে দিতে হবে।

৪. যদি হিট স্ট্রোক এর লক্ষণ দেখা যায় তাহলে দ্রুত ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হতে হবে।

কখন বুঝবেন আপনার বিড়ালের অতিরিক্ত গরম লাগছে?

১. বিড়ালের মধ্যে অস্থিরতা এবং ঠাণ্ডা জায়গা খোঁজা

২. শ্বাস-প্রশ্বাস খুব দ্রুত হয়ে যাওয়া এবং মাত্রাতিরিক্ত শরীর চাটা

৩. কুকুরের মতো জিহ্বা বের করে শ্বাস নেওয়া এবং লালা ঝরা

৪. পায়ের পাতা অতিরিক্ত ঘামতে থাকা। এমন কি ফ্লোরে ভেজা দাগ দেখা যায়।

৫. শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া।

৬. জিহ্বা এবং নাকের ভেজা অংশ অতিরিক্ত লাল হয়ে যাওয়া

৭. বমি করা

৮. মাথা ঘুরানো

৯. খুব সিভিয়ার কেস এ অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।

Comments

The Daily Star  | English
government decision to abolish DSA

A law that gagged

Some made a differing comment, some drew a political cartoon and some made a joke online – and they all ended up in jail, in some cases for months. This is how the Digital Security Act (DSA) and later the Cyber Security Act (CSA) were used to gag freedom of expression and freedom of the press.

11h ago