তাইওয়ান প্রণালীতে আবারও চীনের সামরিক মহড়ার ঘোষণা

তাইওয়ানে যুগ্ম সামরিক মহড়ায় যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে চীন। ছবি: রয়টার্স
তাইওয়ানে যুগ্ম সামরিক মহড়ায় যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে চীন। ছবি: রয়টার্স

গত সপ্তাহে তাইওয়ানে মার্কিন হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সফরের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ৪ দিন ধরে বড় আকারের সামরিক মহড়া চালিয়েছে চীন। আজ সোমবার চীনের সামরিক বাহিনী আবারও তাইওয়ানের চারপাশের নৌ ও আকাশপথে নতুন সামরিক মহড়ার ঘোষণা দিয়েছে।

আজ সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও কূটনীতিকদের আশংকাকে সত্য প্রমাণ করে চীনের সামরিক বাহিনী তাইওয়ানের ওপর চাপ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

চীনের ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড জানিয়েছে তারা শিগগির ডুবোজাহাজ বিধ্বংসী অভিযোগ ও নৌপথে হামলার যুগ্ম সামরিক মহড়া শুরু করবে।

মহড়ার অংশ হিসেবে চীনের ইস্টার্ন থিয়েটার অজ্ঞাত অবস্থান থেকে দূর পাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপ করে। ছবি: রয়টার্স
মহড়ার অংশ হিসেবে চীনের ইস্টার্ন থিয়েটার অজ্ঞাত অবস্থান থেকে দূর পাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপ করে। ছবি: রয়টার্স

নতুন করে ঘোষিত এই মহড়ার লক্ষ্যবস্তু কী হবে, তা এখনো জানা যায়নি। রোববার শেষ হওয়া ৪ দিনের মহড়ার জন্য তাইওয়ানের আশেপাশের ৬টি কৌশলগত অবস্থান চিহ্নিত করে দেয় চীন। সে সময় তাইওয়ান কর্তৃপক্ষ উল্লেখিত অঞ্চলগুলোতে উড়োজাহাজ চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করলেও ইতোমধ্যে তা আবারও শিথিল করা হয়েছে।

৪ দিনের মহড়ায় চীন ১১টি স্বল্প পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এছাড়াও বড় আকারের এ মহড়ায় রণতরী, যুদ্ধবিমান ও ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে। 

রোববার মহড়া সমাপ্তির শেষ মুহূর্তে তাইওয়ান প্রণালীতে অবস্থিত অনানুষ্ঠানিক বিভাজন রেখার (মেডিয়ান লাইন নামে পরিচিত) ২ পাশে চীন ও তাইওয়ানের ১০টি করে যুদ্ধ জাহাজ অবস্থান নেয়। নাম না প্রকাশের শর্তে নিরাপত্তা পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত এক ব্যক্তি এই বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সামরিক বাহিনীর আলোচনা বাতিল

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জানান, চীনের সামরিক জাহাজ, উড়োজাহাজ ও ড্রোন তাইওয়ান ও তার নৌবাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণের মহড়া পরিচালনা করেছে। তারা প্রতিক্রিয়া হিসেবে 'উপযুক্ত' সংখ্যক উড়োজাহাজ ও জাহাজ পাঠিয়েছে।

চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের ওপর কূটনৈতিক চাপ অব্যাহত রেখেছে। পেলোসির সফরের কারণে ইতোমধ্যে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে এক দফা পূর্বনির্ধারিত আলোচনা বাতিল হয়েছে।

শুক্রবার যুদ্ধক্ষেত্রের নির্দেশ, নিরাপত্তা নীতিমালার সমন্বয় ও নৌপথে সামরিক কার্যক্রম নিয়ে একটি আনুষ্ঠানিক বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও চীন সেটি বাতিল করে।

পেন্টাগন, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তারা বৈঠক বাতিলের সিদ্ধান্তে নিন্দা জানান। তারা একে 'দায়িত্বজ্ঞানহীন ও মাত্রাতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া' হিসেবে অভিহিত করেন।

তাইওয়ান প্রণালীতে অবস্থিত অনানুষ্ঠানিক বিভাজন রেখার ২ পাশে চীন ও তাইওয়ানের ১০টি করে যুদ্ধ জাহাজ অবস্থান নেয়। ছবি: রয়টার্স
তাইওয়ান প্রণালীতে অবস্থিত অনানুষ্ঠানিক বিভাজন রেখার ২ পাশে চীন ও তাইওয়ানের ১০টি করে যুদ্ধ জাহাজ অবস্থান নেয়। ছবি: রয়টার্স

এক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, চীনের কর্মকর্তারা গত সপ্তাহের উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে পেন্টাগনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের ফোন কল গ্রহণ করেননি। তবে এর মানে এই না, যে দুই দেশের মাঝে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।

এ বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র উ কিয়ান বলেন, 'মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তাইওয়ানের উসকানিমূলক আচরণের বিপরীতে আমাদের প্রতিক্রিয়া খুবই প্রাসঙ্গিক। এটি আমাদের জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ এবং তাদের (যুক্তরাষ্ট্র ও তাইওয়ান) প্রতি হুমকি।'

 

Comments

The Daily Star  | English
rohingya-migration

Myanmar solely responsible for creating favourable conditions for Rohingyas’ return: UN

11 Western countries stress lasting solution hinges on peace and stability in Myanmar

35m ago