‘উপযুক্ত মজুরি না পেলে সমঝোতা করব না’

চা-শ্রমিকদের ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে। ছবি: স্টার

দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে সারা দেশে চা-বাগানে চলমান শ্রমিক ধর্মঘটের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রম অধিদপ্তরের আয়োজনে বাগান মালিক ও শ্রমিক-নেতাদের নিয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক শেষ হয়েছে। তবে, বৈঠকে এ বিষয়ে কোনো সমঝোতা হয়নি। ফলে চা-শ্রমিকদের ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে।

গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ঢাকার শ্রম অধিদপ্তরের কার্যালয়ে চা-বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশীয় চা সংসদ ও চা-শ্রমিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের নিয়ে এ সভা হয়। সভা শেষ হয় রাত সাড়ে ১১টায়।

বৈঠকে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী, বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ৭টি ভ্যালির সভাপতি ও সংগঠনের নির্বাহী উপদেষ্টা রামভজন কৈরী, সহসভাপতি পংকজ কন্দ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল, অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দি, মনু ধলাই ভ্যালির সম্পাদক নির্মল দাশ পাইনকা, বাংলাদেশীয় চা সংসদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

চা-শ্রমিকদের ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে। ছবি: স্টার

বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) নিপেন পাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা আমাদের দাবি মালিকপক্ষ ও সরকারের কাছে তুলে ধরেছি। মালিকপক্ষ দৈনিক মজুরি ১৪০ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে। আমরা সেটা মানিনি। সারা দেশের চা-শ্রমিকেরা আমাদের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। উপযুক্ত মজুরি না পেলে আমরা সমঝোতা করব না। আমাদের আন্দোলন অব্যাহত আছে। আমরা আজ বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করব।'

বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি শাহ আলম বলেন, 'চা-শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি। আশা করছি আজকের মধ্যে আমরা মজুরির বিষয়ে আপডেট জানাতে পারব।'

শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী বলেন, 'আমাদের আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। আমরা শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহারের কথা বলেছি। আজ বা আগামীকাল তারা জানাবে যে তারা তা প্রত্যাহার করবে কি না।'

শ্রমিকদের চলমান ধর্মঘটের মধ্যে শ্রীমঙ্গলের ৪টি চা-বাগানের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে কাঁচা চা-পাতা নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে জিডিতে।

চা-শ্রমিকদের ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে। ছবি: স্টার

শ্রীমঙ্গল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবির বলেন, 'শ্রীমঙ্গলের রাজঘাট, ডিনস্টন, আমরাইল ছড়া ও বালিশিরা চা-বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপকরা বাদী হয়ে শ্রীমঙ্গল থানায় গত রাতে আলাদাভাবে জিডি করেছেন। বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখা হবে। অভিযোগ করা হয়েছে, ধর্মঘটের ফলে রাজঘাট চা-বাগানের ১ লাখ ৪৮ হাজার ৭৩৫ কেজি, ডিনস্টনের ৯৯ হাজার ২৫০ কেজি, বালিশিরায় ৫০ হাজার ২০৭ কেজি ও আমরাইলে ৫ হাজার ৬৮৩ কেজি কাঁচা চা-পাতা নষ্ট হয়ে গেছে।'

৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে গত ৯ আগস্ট থেকে চার দিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি এবং ১৩ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট করছেন চা-শ্রমিকেরা। গত মঙ্গলবার ধর্মঘট নিরসনে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী শ্রীমঙ্গলের বিভাগীয় শ্রম দপ্তরে চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে সমঝোতা না হওয়ায় বুধবার ঢাকায় ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের আয়োজন করে শ্রম অধিদপ্তর।

Comments

The Daily Star  | English
corruption-extortion-illustration-biplob-chakroborty

‘Now it’s our turn’ mindset fuelling abuse of power: TIB

While reforms are publicly touted, an ongoing culture of dominance, illegal occupation, and extortion resulting from "power abuse" by certain political parties is undermining public aspirations to build a democratic "New Bangladesh", it says

1h ago