‘মামলা করে ভেজালে পড়তে চাই না’

মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুরে গত বুধবার বিএনপি ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত যুবদল কর্মী শাওনের পরিবার জানিয়েছে এ ঘটনায় কোনো মামলা করবে না পরিবার। 
শাওন
শহীদুল ইসলাম শাওন। ছবি: সংগৃহীত

মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুরে গত বুধবার বিএনপি ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত যুবদল কর্মী শাওনের পরিবার জানিয়েছে এ ঘটনায় কোনো মামলা করবে না পরিবার। 

আজ শনিবার শাওনের ছোট ভাই সোহান বলেন, 'মামলা করে ভেজালে পড়তে চাই না। মামলা করলে সমস্যা হবে। এজন্য আমরা কোনো মামলা করি নাই, জিডিও করি নাই।'

আপনাদের ওপর কোনো হুমকি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'অনেকে অনেক কথা বলে। সেগুলো বলে লাভ নেই। পুলিশের পক্ষ থেকে আমাদের থানায় ডাকা হয়েছে। কিন্তু, আমরা মামলা করব না। থানায় যাব কেন?'

তিনি আরও বলেন, 'বিএনপি মামলা করতে বললেও মামলা করব না। আমাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।'

অন্যদিকে পুলিশ বলছে আজকের মধ্যেই মামলা হবে।

মুন্সিগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আদিবুল ইসলাম বলেন, শাওনের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে। আমরা যোগাযোগ করছি। আজ শনিবারের মধ্যে মামলা হয়ে যাবে। আমরা নির্দেশনা দিয়েছি আজকের মধ্যে যেন মামলা হয়ে যায়। কারণ, এগুলো নিয়ে দেরি করা যায় না।

বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাওন মারা যান।

শাওন মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মিরকাদিম পৌরসভার মুরমা এলাকার সোয়াব আলীর পুত্র। শুক্রবার রাত ১০টায় মুরমা জামে মসজিদ কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। পেশায় ইজিবাইক চালক শাওনের ৮ মাসের একটি সন্তান আছে বলে জানা গেছে।

গত বুধবার বিকালে বিএনপি ও পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় ৩৬৫ জনের নামে ও কয়েকশ অজ্ঞাত জনকে আসামি করে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় দুইটি মামলা হয়েছে। ঘটনার দিন আটক ২৪ জনকে ওই দুই মামলায় আসামি করা হয়েছে। তবে, শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আর কাউকে আটক করা হয়নি। পঞ্চসার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মোস্তফার লোকজন স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীর কারখানা ও অফিসে হামলা করছে বলে অভিযোগ করছেন বিএনপির নেতারা।

গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টায় মুন্সিগঞ্জের দয়াল বাজারের মাল্টি ফিসিং নেট কারখানায় মোটর সাইকেল ও সিএনজি অটোররিকশায় করে এসে কিছু লোক হামলা করে। কারখানার মালিক ও পঞ্চসার বিএনপির সদস্য সচিব আয়াত আলী দেওয়ান অভিযোগ করেন, আমার স্টাফরা জানিয়েছে চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফার লোকেরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি করে ও বন্দুকের ভয় দেখিয়ে কারখানা থেকে ৬-৭ লাখ টাকার মাল লুট করে নিয়ে গেছে। তবে, এ বিষয়ে অভিযোগ দিতে থানায় যেতে পারিনি। কারণ, আমাদের নামে মামলা আছে।

এর আগে গত বুধবার রাতেও জেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. নিজামউদ্দিনের সুতার কারখানায় আগুন লাগার ঘটনাতেও গোলাম মোস্তফার দিকে ইঙ্গিত করে কারখানা মালিক বলেছিলেন, 'কিছু নব্য আওয়ামী লীগার এ ঘটনা ঘটিয়েছে।'

অভিযোগের বিষয়ে বেশ কয়েকবার গোলাম মোস্তফার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন কল ধরেননি।

মুন্সিগঞ্জ শহর বিএনপির আহবায়ক ইরাদত হোসেন মানু বলেন, ঘটনার পর থেকেই আমাদের নেতাকর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারছে না। পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। তবে, ওই ২৪ জন ছাড়া আর কেউ আটক নেই।

মুন্সিগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব বলেন, কেউ যদি এরকম কারো বাসা, অফিস বা কারখানায় হামলা করে তাহলে দ্রুত পুলিশকে জানাতে হবে। পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।

 

Comments