ব্রণ, একনে ও ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে করণীয়
তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে ব্রণ একটি বড় সমস্যা। যার থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন ও সময় সাপেক্ষ। ত্বকের যত্নে প্রত্যেকেরই কিছু নিজস্ব ধরন থাকে। একজনের জন্য যা ভালো তা অন্যজনের জন্য ভালো নাও হতে পারে। সৌন্দর্য সচেতন যারা, তাদের অনেকেই সকাল-বিকেল ফেসওয়াশ ব্যবহার করেন।
তবে, যখন খুব বেশি মেকআপ, সানস্ক্রিন, ধুলাবালি বা ভ্রমণে যাওয়া হয়, তখন সবসময়ের মতো সাধারণ ক্লিনজিং যথেষ্ট নয়। নারী, পুরুষ উভয়েরই তখন প্রয়োজন সঠিক যত্ন। ত্বকের সঙ্গে সঠিক বোঝাপড়া দেয় স্বাস্থ্যজ্জ্বোল ত্বক। না হয় ব্রণ, একনে, ব্রেকআউটসের যন্ত্রণায় মাসের পর মাস পার করতে হয়। ধাপে ধাপে কিছু বিষয় মেনে চললে এই সমস্যার সমাধান আশা করা যায়।
• প্রথমত, ক্লিনজার হিসেবে ওয়েল বেইজড ক্লিনজার ব্যবহার করা। বিশেষত যেগুলো প্রাকৃতিক এবং ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ যেমন প্যারাবেন, সালফেট, ফরমালডিহাইড মুক্ত। একই কাজ হয় খাঁটি নারিকেল তেল তুলার বলে লাগিয়ে হালকা হাতে ম্যাসাজ করলে। এভাবেও অধিকাংশ মেকআপ, ময়লা, ধুলাবালি তুলে ফেলা যায়।
• দ্বিতীয়ত, ডাবল ক্লিনজার হিসেবে খুব নাজুক বা পরিমাণে অল্প রাসায়নিক সমৃদ্ধ ক্লিনজার দিয়ে দ্রুত মুখ পরিষ্কার করে নেওয়া। দ্রুত করার কারণ হলো, প্রথমে নারিকেল তেল প্রাকৃতিক ক্লিনজার হিসেবে ব্যবহার করার পর দ্বিতীয় ক্লিনজারটিতে সামান্য কিছু কেমিক্যাল থাকলেও সেগুলো যেন মুখের সংস্পর্শে বেশিক্ষণ না থাকে।
• তৃতীয়ত, সবচেয়ে ভালো হয় যদি মুখ ধোয়ার পর পানিটুকু কোনো তোয়ালে বা টিস্যু দিয়ে না মোছা হয়। অর্থাৎ মুখের উপর পানিটা শুকোতে যতটুকু সময় প্রয়োজন, সেই সময়টুকু দেওয়া। যেটাকে এয়ার ড্রাই বলা হয়। বিশেষত যাদের শুষ্ক ত্বক তাদের জন্য এটি বেশ কার্যকরী।
• চতুর্থত, যাদের ত্বকে ব্রণ, পিম্পল, শুষ্কতা থাকে তাদের মুখ পরিষ্কারের সময় বেবি হেয়ার থাকলে সেই জায়গা গুলোয় বা কপালে কিংবা মুখের সঙ্গে চুল যেসব জায়গায় লেপ্টে থাকে সেগুলোও একই সঙ্গে পরিষ্কার করা আর ভেজানো জরুরি। কারণ, কপালের চুলগুলোর সঙ্গেও মুখের লোপকূপ যুক্ত থাকে। সেগুলোতে ঘাম, তেল, মেকআপ এগুলো জমতে থাকে।
• পঞ্চমত, মুখের সংস্পর্শে আসে এমন সব কিছু পরিষ্কার রাখা। বালিশ, জানালা, মেকআপ ব্রাশ ও মোবাইলের স্ক্রিনও পরিষ্কার রাখতে হবে। এতে ত্বক সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাবে। ঘুমানোর সময় ব্যবহৃত বালিশের কভার প্রতিদিন পরিষ্কার সম্ভব না হলে বালিশের সাইজে কয়েকটি পরিষ্কার কাপড় কেটে নেওয়া যায়। ঘুমের আগে বালিশের উপর সেগুলো দিয়ে ঘুমানো যায়। না হয় যতই স্কিন কেয়ার করা হোক না কেন, আগের দিনের ত্বকের তেল, ময়লা আবার পুনরায় স্কিনে প্রবেশ করবে।
সাবধানতা
ত্বকের জন্য ভালো ক্লিনজার একটিতে সীমাবদ্ধ না রেখে, সম্ভব হলে ২ থেকে ৩টি নিয়মিত ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে। না হয় ত্বক কেবল একটিতেই অভ্যস্ত হয়ে পড়বে।
এছাড়াও খেয়াল রাখতে হবে, সঠিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া হচ্ছে কিনা। অতিরিক্ত ক্যানড ফুড, চিনি, তৈলাক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ শরীরের ভেতরের পরিশুদ্ধিও ত্বকের যত্নে বড় ভূমিকা রাখে।
গরম থেকে বাইরে যাবার পর পাতলা সুতি কাপড়ে বরফ নিয়ে তা মুখে আলতো করে ঘষা যায়। সানস্ক্রিন ব্যবহার করার পরও ত্বক পুড়ে যেতে পারে। রোদ থেকে ঘরে ফিরে ত্বকে খানিকটা বরফ ঘষে নিলে জ্বালাভাব কমে আসবে এবং পোড়াভাবও দূর হবে। এছাড়াও, অ্যালার্জি, ওয়্যাক্সিং বা প্লাকিং বিভিন্ন কারণেও ত্বকে লালচে ভাব হতে পারে। এমন সমস্যায় বরফ কাপড়ে মুড়ে ত্বকে ঘষে নিলে এতে লালচে ভাব এবং র্যাশ কমে আসবে।
সুন্দর ত্বকের আরাধনা প্রায় সবার থাকে৷ ত্বকের নানা সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের যেমন প্রয়োজন বাড়তি যত্ন। যাদের ত্বক স্বাস্থ্যজ্জ্বল তাদেরও হতে হয় যত্নশীল। জীবনের বয়স বাড়লেও মন আর ত্বকে যেন থাকে তারুণ্য।
Comments