তালমিছরিতে যত পুষ্টি

তালমিছরি। ছবি: সংগৃহীত

মৌসুম বদলের এই সময় অনেক শিশুই ঠাণ্ডা বা জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে৷ শিশুদের ঠাণ্ডা লাগলে স্বভাবতই চিন্তা একটু বাড়ে। কারণ এতে করে শিশুর খাওয়া থেকে শুরু করে ঘুম, সব কিছুতেই সমস্যা তৈরি হয়। পাশাপাশি খাওয়ার রুচিও কমে যায়। ঠাণ্ডা বা জ্বরের এ সময় তালমিছরি ভীষণ উপকারী।

তালমিছরি হলো প্রাকৃতিকভাবে তৈরি এক ধরনের চিনিজাতীয় দ্রব্য। তালমিছরিতে থাকে তালের রস। তালরস জ্বাল দেওয়া হয় একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। এরপরে সেটিকে ট্রে বা কোনো পাত্রে ঢালা হয়।

তালমিছরির পুষ্টিগুণ বিষয়ে বিএনকে হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট মুশফিকা রাখি বলেন, 'তাল মিছরিতে প্রচুর পরিমাণ অ্যাসেনশিয়াল ভিটামিন, মিনারেলস, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন, জিংক, ফসফরাস ও অ্যামাইনো এসিড রয়েছে। এটি একটি সহজলভ্য উপাদান। ভিটামিন বি-১২ পাওয়া যায় তালমিছরিতে। তাই যারা নিরামিষ জাতীয় খাবার খান, তাদের জন্য তালমিছরি খুবই উপকারী।'

পুষ্টিবিদ মুশফিকা রাখির মতে তালমিছরির উপকারিতা:

১. যাদের অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা রয়েছে, তাদের জন্য তালমিছরি খুবই উপকারী। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণ আয়রন রয়েছে। বিশেষ করে নারীদের জন্য তালমিছরি খুব উপকারী। আয়রন রক্তের লেভেল ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

২. বয়সের সঙ্গে সঙ্গে হাড়ের নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে থাকে। যেমন: হাড় ক্ষয় হওয়া কিংবা হাঁটুতে ব্যথা থাকা। এসব ক্ষেত্রেও তালমিছরি খুবই উপকারী। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম রয়েছে। যে কারণে এটি হাড় ও দাঁত শক্ত করে তোলে ও হাড়ের নানা রকম সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

৩. মেনোপজের পর নারীদের হাড় ক্ষয় হতে শুরু করে। তা রোধ করতে নিয়মিত তালমিছরি খাওয়া উচিত।

৪. শিশুদেরও হাড় ও দাঁতের গঠন ঠিক রাখার জন্য তালমিছরি খেলে যথেষ্ট উপকার পাওয়া যাবে।

৫. সর্দি ও কাশি দূর করতে পারে তালমিছরি। এর রস কাশি উপশম করে ও গলার শ্লেষ্মা নরম করে দিতে সাহায্য করে। ফলে খুসখুসে কাশির সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। এক টুকরো তালমিছরি মুখে নিয়ে রাখলে সর্দি ও কাশিতে অনেক আরামও পাওয়া যাবে।

৬. দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে ও কিডনির পাথর রোধ করতেও সহায়তা করে তালমিছরি। তাই কিডনি সুরক্ষিত রাখতে ও দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে তালমিছরি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকাতে রাখা যেতে পারে।

৭. তালমিছরি হজমে সাহায্য করে এবং আমাশয় নিরাময়ে সহায়ক। এ ছাড়া, মুখের আলসার বা ঘা রোধ করতে পারে তালমিছরি। এতে থাকা ডায়েটারি ফাইবার হজম শক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে।

৮. অনেকেরই সাইনাসজনিত মাথাব্যথার সমস্যা থাকে। আদার রসের সঙ্গে তালমিছরি মিশিয়ে খেলে সাইনাসজনিত মাথা ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

Comments

The Daily Star  | English

Housing, food may top the manifestos

Panels contesting Ducsu election are signalling key reform priorities in their upcoming manifestos

11h ago