‘নদীভাঙন থাকি হামাকগুলাক বাঁচান’

ধরলা নদীর ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: এস দিলীপ রায়

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পশ্চিম ধনিরাম এলাকায় ধরলা নদীতে তীব্র ভাঙন দেখে দিয়েছে। ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা, ফসলি জমি, ফলের বাগান ও নানা স্থাপনা। নদী ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে 'নদীভাঙন থাকি হামাকগুলাক বাঁচান' শ্লোগানে মানববন্ধন করেছেন ভাঙনকবলিত এলাকার বাসিন্দারা।

আজ শুক্রবার বিকেলে পশ্চিম ধনিরাম গ্রামের মিলিটারির চর এলাকায় মানববন্ধনে শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

ভাঙনে বসতভিটা ও ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব মেসের আলী (৫৫) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নদী ভাঙনে সোককিছু হারাইছোং। এ্যালা মুই পরিবার নিয়া কষ্টোত আছোং। এ্যালাং যদি নদীভাঙন ঠ্যাকা যায় তাং মোর কিছু ফসলি জমি বাইচবে। ভাঙন ঠ্যাকানোর জন্যে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাবার নাইকছোং।'

ভাঙনকবলিত আফসার আলী (৬০) বলেন, 'হামাকগুলাক নদীভাঙন থাকি বাঁচান। হামরাগুলা শ্যান হয়া গ্যাইরেলাং।'

বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ইলিয়াস হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার ওয়ার্ডে প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ধরলা নদীর ভাঙন দেখা দিয়েছে। গেল ৩ সপ্তাহে ধরলার ভাঙনে অর্ধশত বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। নদীর উদরে চলে গেছে বিপুল পরিমাণে আবাদি জমি।'

তিনি আরও বলেন, 'নদীভাঙনের কারণে শতাধিক পরিবার আতঙ্কে আছে। আমন ধানের খেত, ভুট্টা খেত ও কলার বাগানসহ কয়েকশ বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা আছে। মানববন্ধন কর্মসূচির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সবার কাছে ভাঙন রোধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।'

বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টু জানান, তার ইউনিয়নে ধরলা নদীতীরের মানুষের দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ধরলার ভাঙন। নদীর অব্যাহত ভাঙনে দিনে দিনে দীর্ঘ হচ্ছে নিঃস্ব মানুষের তালিকা।

তিনি বলেন, 'আমি ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, কিন্তু কোনো ফল পাচ্ছি না।'

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের জানান, পর্যাপ্ত বরাদ্দের অভাবে সবস্থানে নদীভাঙন ঠেকাতে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। বরাদ্দের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে ভাঙন ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করা হবে।  

Comments

The Daily Star  | English

Choking waters: The dangerous decline of oxygen in Dhaka’s peripheral rivers

Bangladesh, often described as a land of rivers, is criss-crossed by more than 230 major and minor waterways.

16h ago