মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‌্যাবকে ৪ বছর আগে সহায়তা বন্ধ করা হয়েছে: যুক্তরাষ্ট্র

নেড প্রাইস
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস। ছবি: সংগৃহীত

'যুক্তরাষ্ট্র র‌্যাব তৈরি করেছে ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে' প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে, গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে ৪ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র র‌্যাবকে সহায়তা বন্ধ করে।

ওয়াশিংটনে গত বুধবার নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস এ কথা জানান।

তিনি বলেন, 'বাস্তবতা হলো র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র‌্যাব মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত আছে, এমন বিশ্বাসযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে আমরা ২০১৮ সালেই র‌্যাবকে সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছি।'

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন থেকে ফিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৬ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র র‌্যাব তৈরি করেছে, প্রশিক্ষণ দিয়েছে ও অস্ত্র সরবরাহ করেছে। তারা যেমন প্রশিক্ষণ দিয়েছে, র‍্যাব তাই করেছে।'

সংবাদ ব্রিফিংয়ে নেড প্রাইস বলেন, 'প্রায় ৪ বছর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র র‌্যাবকে সহায়তা বন্ধ করে দেয় এবং গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে গত বছরের ডিসেম্বরে র‌্যাব ও এর ছয় বর্তমান-সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি আইনের অধীনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।'

'এছাড়া মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত থাকার অভিযোগে আমরা র‍্যাবের দুই সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক আইনের অধীনে ব্যবস্থা নিয়েছি,' বলেন তিনি।

নেড প্রাইস আরও বলেন, 'বাংলাদেশ হোক, দক্ষিণ এশিয়া বা বিশ্বের অন্য কোনো দেশ হোক, যুক্তরাষ্ট্র তার পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রে মানবাধিকার। আমাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এ বিষয়টিতে দৃষ্টি আকর্ষণের পাশাপাশি যারাই মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী, তাদের বিরুদ্ধেই আমরা ব্যবস্থা নিই।'

তিনি আরও বলেন, 'এই নিষেধাজ্ঞা এবং ভিসা বিধিনিষেধের লক্ষ্য র‌্যাবের সংস্কার ও জবাবদিহির আওতায় আনা এবং বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার লঙ্ঘন রোধ করা।'

'আমরা দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনার পাশাপাশি দেশগুলো যেন নিজস্ব উপায়ে অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই, ন্যায়বিচার নিশ্চিত এবং আইনের শাসন রক্ষা করতে পারে তার জন্য কাজ করে যাব। বাংলাদেশ নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার সময় আমরা এই নীতিগুলোকেই সামনে রেখেছি,' যোগ করেন তিনি।

বাংলাদেশ সরকার বাকস্বাধীনতা এবং সংগঠনের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ করছে, এই বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে নেড প্রাইস জানান, সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সার্বজনীন অধিকারের ওপর আক্রমণের ক্ষেত্রে তার মন্তব্য একই।

তিনি বলেন, 'জনগণ যে কোনো জায়গায় শান্তিপূর্ণভাবে ও আইনের শাসন মেনে বক্তব্য দেওয়ার এবং শান্তিপূর্ণভাবে সমবেত হওয়ার অধিকার আছে।'

র‌্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে বাংলাদেশ বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে অবশ্য বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, 'জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং র‌্যাবের সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত তারা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবে না।'

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh Bank signals market-based exchange rate regime

The central bank will allow the exchange rate of the dollar to be determined by market forces

1h ago