দুর্ভিক্ষ হবে না, তবে আরও অনেক মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাবে
দেশের অর্থনৈতিক অস্থিরতা কাটাতে এবং আগামীতে পরিস্থিতি যেন আরও খারাপের দিকে না যায় তার জন্য সরকারকে সমন্বিত ও সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদরা।
আজ সোমবার দ্য ডেইলি স্টার সেন্টারে 'বাংলাদেশের অর্থনীতি: করণীয়' শীর্ষক রাউন্ডটেবিল আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এ কথা বলেন। আলোচনায় অংশ নেন অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ডিস্টিংগুইসড ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ ও অধ্যাপক সায়েমা হক বিদিশা এবং বিটপী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিরান আলী।
রাউন্ডটেবিলটি সঞ্চালনা করেন দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, 'বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অস্থিরতার জন্য শুধু বাহ্যিক কারণগুলোই দায়ী নয়। বরং দেশের ভেতরেরই এমন কিছু বিষয়ের কারণে এই অর্থনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, যা দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত। এর মধ্যে রয়েছে কম রাজস্ব আদায়, অনুপযুক্ত খাতে সরকারি ব্যয় এবং অনাদায়ী ঋণ।'
তিনি বলেন, 'দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে ব্যবসায়ী, ব্যাংকার সবারই ভূমিকা রয়েছে।'
চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার পর থেকে দেশের অর্থনীতি সবদিক থেকে খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'রাজস্ব কোন খাতে খরচ হচ্ছে তার কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। সরকার প্রচুর পরিমাণ ঋণ নিচ্ছে, বিশেষ করে ব্যাংক থেকে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী যা বলছেন তা ইশারা করছে যে আরও ঋণ নেওয়া হবে। আমাদের রেমিট্যান্স আয় কমে গেছে, রপ্তানি আয়ও কমছে।'
তিনি আরও বলেন, 'দেশে বিনিয়োগের বিষয়টিও আশানুরূপ হচ্ছে না। এ বছর বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় এবং ডিজেল-বীজ-সারের উচ্চমূল্যের কারণে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এর ফলে ফলন কম হওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে। সেক্ষেত্রে খাদ্য ঘাটতি তৈরি হতে পারে। এর পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী সরবরাহও কমেছে। এর প্রভাবও রয়েছে।'
'ভালো দিক হচ্ছে, বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রবাসী যাওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু খারাপ দিক হচ্ছে, সেই অনুযায়ী রেমিট্যান্স বাড়েনি। এর কারণ হতে পারে হুন্ডির মাধ্যমে দেশে টাকা আসা এবং আসন্ন নির্বাচনের আগে অবৈধ অর্থ লেনদেন', যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, 'বিদেশ থেকে ঋণ নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার ফলে ব্যবসায়ীরা যে পরিমাণ ঋণ নিয়েছেন তার পুরোটা এখনো পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। সেটাও আরেকটি বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুদের হার নির্দিষ্ট করে দেওয়ায় এই সময়ের মধ্যে বিনিয়োগ বাড়াতে সহযোগিতা করেনি।'
তিনি আরও বলেন, 'অস্থিরতার কারণে দেশে খাদ্য, জ্বালানি, ডলারসহ নানা বিষয়ে নানা ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে, দিন শেষে যার ফলাফল ভালো হবে না।'
'বর্তমান সমস্যার পাশাপাশি আমাদের কিছু লিগ্যাসি ইস্যু আছে। সব মিলিয়েই আমরা একটি ভঙ্গুর অবস্থা তৈরি করেছি। প্রথম লিগ্যাসি ইস্যু হচ্ছে, দেশের ৬ বা ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পরেও আমাদের কর ও জিডিপির পার্থক্য ৯ শতাংশের নিচে আনতে পারছি না। যার কারণে আমরা পরোক্ষ করের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। সব মিলিয়ে আমাদের খরচের সামর্থ্য কমছে', যোগ করেন তিনি।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, 'আমরা যে ভর্তুকি দেই সেটাকে অর্থনীতিতে ২ ভাগে ভাগ করা হয়, একটি ভালো ভর্তুকি, আরেকটি খারাপ ভর্তুকি। আমাদের ভালো ভর্তুকির চেয়ে খারাপ ভর্তুকির পরিমাণ বেড়ে গেছে। আপনারা বিদ্যুতে ক্যাপাসিটি চার্জ বিষয়ে নিশ্চই অবগত আছেন।'
তিনি বলেন, 'সুদের হার ও মুদ্রা বিনিময় হার আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেই সঙ্গে সঠিক ডেটা না থাকাও একটি বড় সমস্যা।'
'আমদানি নিয়ন্ত্রণ, সরকারি খরচ নিয়ন্ত্রণ, অপ্রয়োজনীয় উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ আপাতত বন্ধ রাখাসহ সরকার বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে সমস্যা সমাধানে, এটা ভালো বিষয়। তবে, বিনিময় হারের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে কেবল বাণিজ্যের বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়ে পরিস্থিতির উন্নয়ন করা যাবে কি না সে বিষয়ে প্রশ্ন থেকে যায়', যোগ করেন তিনি।
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, 'দেশের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণে স্বচ্ছতা, প্রণোদনা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।'
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'দুর্ভিক্ষ হবে এটা আমি বিশ্বাস করি না। তবে অনেক বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাবেন এবং এর ফলে অনেক বেশি মানুষ পুষ্টিহীনতার শিকার হবেন। আমি মনে করি দুর্ভিক্ষের আলোচনা আসছে এক্সটার্নাল ন্যারেটিভকে শক্তিশালী করার জন্য। এটা বলার জন্য যে, এটা আমাদের সমস্যা না, বৈশ্বিক সমস্যা। ইউক্রেন থেকে যদি জাহাজ আসতো তাহলে এই সমস্যা থাকতো না। আরেকটা বিষয় হচ্ছে রিজার্ভ ইস্যু। এখানে কষ্টের বিষয় হচ্ছে, এতগুলো বছর ধরে এ দেশের অর্থনীতিবিদরা যেসব কথা বলতে বলতে ক্লান্ত হয়ে গেলেন, কিন্তু সরকার সেগুলো শুনলো না, এখন ওয়াশিংটন থেকে লোক এসে সেগুলো মানতে বাধ্য করবে। কাজেই আইএমএফের ঋণের অর্থটাকে টাকার অংকে মূল্যায়ন করাটা ঠিক হবে না। এটাকে দেখতে হবে বাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনা ও সংস্কারের জন্য জমে থাকা নীতিগত ও কাঠামোগত বিষয় সমাধান করার সুযোগ হিসেবে।'
৩-৪ মাস আগেও অর্থনীতিবিদরা দেশের অর্থনীতির বিষয়ে শঙ্কার কথা বলতেন, সরকার বলতো অর্থনীতিবিদরা আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। কিন্তু এখন সরকার দুর্ভিক্ষের কথা বলছে, কিন্তু অর্থনীতিবিদরা তা মনে করছেন না কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, '৩-৪ মাস আগে সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা যে কথা বলেছেন এখন তার উল্টোটা কেন বলছেন, এটা নিয়ে তাদেরকে প্রশ্ন করা দরকার। তাদের কাছে জানতে চাওয়া দরকার এই কয়েক মাসের মধ্যে তাদের পলিসি বদলে গেছে কি না। এভাবে তাদের কাছে প্রশ্ন করা হচ্ছে না। তাদেরকে যেহেতু এভাবে চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে না, সেই সুযোগে তারা যা ইচ্ছে বলে যাচ্ছেন।'
মানুষের, বিশেষ করে মধ্যবিত্তের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে উঠেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সমস্যার দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে না। সেদিকে নজর দিতে হবে। সামাজিক সুরক্ষা খাতের দিকেও নজর দিতে হবে। ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় এখন কিছুই হয় না। এটা বাড়াতে হবে। দেশের বর্তমান সমস্যা সমাধানে স্বচ্ছতা অত্যন্ত জরুরি। আমাদের সমস্যা এতটাই বেশি যে সেখান থেকে উত্তরণে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক উভয়েরই সহযোগিতা নিতে হচ্ছে। বাজেট সহযোগিতা এবং ব্যালেন্স অব পেমেন্টে ভারসাম্য আনতেই এটা করতে হচ্ছে।'
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, 'দেশকে বড় সংকট থেকে বাঁচানোর জন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের দ্রুত অবক্ষয় বন্ধ করতে সরকারের একটি সমন্বিত ও সুস্পষ্ট কৌশল নিয়ে আসা উচিত।'
তিনি বলেন, 'বর্তমান যে পরিস্থিতি তা আরও ৩-৪ মাস চলতে পারে না। কোনো উদ্যোগ নেওয়া না হলে দেশ এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে পারে, যেখান থেকে আর বের হওয়া সম্ভব হবে না।'
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, 'আত্মতৃপ্তির ফলে আমাদের ফরেক্স রিজার্ভ বর্তমান পরিস্থিতিতে এসে দাঁড়িয়েছে।'
তিনি বলেন, বর্ধিত আমদানি বিলের কারণে রিজার্ভ কমে যাওয়ায় বাংলাদেশ আমদানি সীমিত করতে বাধ্য হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২ নভেম্বর দেশের রিজার্ভ ৩৫ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা ১ বছর আগের একই দিনে তুলনায় ২৩ শতাংশ কম। গত বছরের ২ নভেম্বর দেশের রিজার্ভ ছিল ৪৬ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার।
দেশে কৃষিখাতে ভর্তুকি প্রত্যাহার না করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক এই গভর্নর।
ফরেক্স মার্কেটে একাধিক বিনিময় হারেরও বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেন ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, 'বছরে একবার নয়, প্রতি ৬ মাসে মুদ্রানীতি ঘোষণা করা উচিত।'
তিনি আরও বলেন, 'বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট কেবল ১ বছরের প্রতিফলন না। এটা গত ১ দশকের ভুল অগ্রাধিকারের ফল।'
দেশ পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে মনোযোগ না দিয়ে প্রবৃদ্ধির দিকে এগিয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'বিষয়টি এখন পুনর্বিবেচনা করা দরকার। কারণ মানুষের দুর্ভোগ এই ১ বছরের বিনিময় হার আর মূল্যস্ফীতির কারণে হয়নি। বরং, এটি বহু বছর ধরে চাকরি ও ক্রয়ক্ষমতার অভাবের কারণে তৈরি হয়েছে।'
মার্কিন ডলারে বেসরকারি খাতের ঋণের পরিমাণের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'এখন, বাংলাদেশকে বাস্তবতার ওপর ভিত্তিতে করে বেশ কিছু অপ্রীতিকর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ফাইন টিউনিং কাজ করবে না।'
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ বলেন, 'দেশের অর্থনৈতিক সমস্যা হঠাৎ করে হয়েছে। তবে, সেই হঠাৎ আসা সমস্যাটি তৈরি হয়েছে কিছু স্ট্রাকচারাল ইস্যুর কারণে। স্ট্রাকচারাল ইস্যুর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে দুর্নীতি। অসৎ আমলা, অসৎ ব্যবসায়ী এবং অসৎ রাজনীতিবিদরা পরস্পরকে সহযোগিতা করে দুর্নীতি করছে। ফলে, তাদের বিচার হয় না এবং এর ধারা অব্যাহত রয়েছে।'
তিনি বলেন, 'দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে খাদ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। আমি মনে করি না যে বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ হওয়ার সুযোগ আছে। জয়নুল আবেদিনের চিত্রের মতো মানুষ না খেয়ে মরে পথে-ঘাটে পড়ে থাকবে, সেটা হবে না। কিন্তু বাংলাদেশে মানুষ না খেয়ে থাকে এটা সত্য। আয়ের ঘাটতি, কাজের অভাব, খুবই কম আয় বা খাদ্যদ্রব্যে অত্যধিক দামের মতো কারণে মানুষ না খেয়ে থাকার পরিস্থিতি তৈরি হতেই পারে। যারা দারিদ্রসীমার নিচে আছে তাদেরই এই সমস্যা হবে। এই মানুষগুলোর জন্য কাজের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক হিসাবও রয়েছে। কাজেই তাদের জন্য প্রয়োজনে ভর্তুকি দিতে হবে, প্রয়োজনে বিনামূল্যে খাবার দিতে হবে। আর অবশ্যই সর্বোচ্চ পরিমাণ খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। আইএমএফ ভর্তুকি তুলে দিতে বললেই আমরা তা পারব না। তবে, কোথায় ভর্তুকি দিতেই হবে আর কোথায় দেওয়া যাবে না, তা বুঝে নির্ধারণ করতে হবে। যেটা ভালো ভর্তুকি সেটা দিতেই হবে।'
'কিছু দিনের মধ্যেই কয়েকবার জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে। এখন চাইলেই সরকার জ্বালানি তেলের দাম কি বাড়াতে পারবে? সুশাসন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের বৈঠক ডেকে সেটা করতে হবে। এর সঙ্গে সমন্বয় করে গ্যাস, বিদ্যুতের দামও ঠিক করতে হবে। সুশাসনের কথা বলতে গেলে, আমরা সবচেয়ে বড় খারাপ যে কাজটি করেছি তা হলো, বিদ্যুতের জন্য দায় মুক্তি আইন করেছি। সেখানেই আমাদের সুশাসন শেষ হয়ে গেছে', যোগ করেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সায়েমা হক বিদিশা বলেন, 'আমাদের প্রথম চ্যালেঞ্জ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, দ্বিতীয় ম্যাক্রো ইকোনমিতে স্থিতিশীলতা আনা, তৃতীয়ত দারিদ্রতা নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং চতুর্থ জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও কাজের সুযোগ তৈরি।'
তিনি বলেন, 'দেশের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে নিঃসন্দেহে আমাদের জোর দিতে হবে কৃষিতে। প্রয়োজনে সেখানে ভর্তুকি ও অন্যান্য সহযোগিতা আরও বাড়াতে হবে। পরোক্ষ করের জায়গায় আমাদের প্রত্যক্ষ করের বিষয়ে নজর দিতে হবে। দেশের শিল্পোন্নয়নে সরকারকে প্রণোদনা দিতে হবে এবং সেখানে অবশ্যই শর্ত থাকতে হবে যে প্রণোদনা থেকে শ্রমিকরা সহযোগিতা পাবে। সামাজিক সুরক্ষা খাতে যথাযথভাবে কাজ করতে হবে। যাদের এই সহযোগিতা পাওয়ার কথা তারাই যেন সেটি পায় এবং এই সহযোগিতার পরিমাণ বাড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। মধ্যবিত্তদের জীবনযাত্রা সহজ করতেও সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে।'
বিটপী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সহ-সভাপতি মিরান আলী বলেন, 'এই সংকটকালীন সময়ে পোশাক ব্যবসাকে লাভজনক করতে ডলারের বিনিময় হার উন্মুক্ত করতে হবে।'
তিনি বলেন, 'পোশাক রপ্তানিকারকরা প্রতি ডলারে বিনিময় হার পাচ্ছেন ৯৭ টাকা। কিন্তু মূলধনী যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য শিল্পের কাঁচামাল আমদানির সময় ব্যাংক থেকে ডলার কিনতে হচ্ছে ১১৫ টাকায়।'
ব্যবসা বৃদ্ধির পরিপন্থী কিছু অপ্রয়োজনীয় আইন থেকে ব্যবসাকে মুক্ত করার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন মিরান।
Comments