বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারি: হাইকোর্ট বললেন ‘আমরা নাটক দেখছি’

বেসিক ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ এবং গত ৭ বছরে দায়ের করা ৫৬টি মামলার কোনোটিরও অভিযোগপত্র জমা দিতে না পারায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ব্যর্থতায় চমর হতাশা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
২১ আগস্ট, গ্রেনেড হামলা
ফাইল ছবি

বেসিক ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ এবং গত ৭ বছরে দায়ের করা ৫৬টি মামলার কোনোটিরও অভিযোগপত্র জমা দিতে না পারায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ব্যর্থতায় চমর হতাশা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।

আজ সোমবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াত লিজুর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ হতাশা প্রকাশ করেন।

বেঞ্চ বলেন, কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। কিন্তু, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং এতো বিচারক ও আইনজীবী থাকা সত্ত্বেও কোনো কাজ হচ্ছে না। তারা (দুদক) নীরব কেন? এটা অনেকটা নাটকের মতো। আমরা নাটক দেখছি। এটা মেনে নেওয়া যায় না।

দুদকের দায়ের করা ৩টি দুর্নীতির মামলায় বেসিক ব্যাংকের শান্তিনগর শাখার সাবেক মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আলীর ৩টি জামিন আবেদনের ওপর শুনানি চলছিল এই বেঞ্চে।

জামিন আবেদনের পরবর্তী শুনানি ও রায় ঘোষণার জন্য আগামীকাল দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট।

আজ শুনানির সময় হাইকোর্ট বেঞ্চ দুদকের পেশ করা কমপ্লায়েন্স রিপোর্টের কিছু বক্তব্য আপত্তিকর বলেও মন্তব্য করেন। কারণ দুদক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের চিহ্নিত করা এবং তাদের বক্তব্য রেকর্ড করা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে।

দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মামলার প্রধান সাক্ষীদের চিহ্নিত করা এবং তাদের জবানবন্দি নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে, সব সাক্ষীই প্রত্যাশা মতো সাড়া দিচ্ছেন। মামলাগুলোর অনেক প্রমাণ আছে এবং ব্যাংক নথি থেকে প্রকৃত প্রমাণ সনাক্ত করা সময়সাপেক্ষ। এছাড়া প্রকৃত আসামিদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়াও অত্যন্ত জটিল।

দুদক এক প্রতিবেদনে বলেছে, ঋণ কেলেঙ্কারির মামলার তদন্ত শেষ করতে দেরি হওয়ার অন্যতম কারণ, সম্পূর্ণ নগদে টাকা তুলে মামলায় উল্লেখ করা আত্মসাৎকৃত অর্থের অবস্থান গোপন করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে কমিশন বলেছে, তারা মামলার প্রয়োজনীয় প্রমাণ চেয়ে মালয়েশিয়ার কাছে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট (এমএলএআর) পাঠিয়েছে।

৬টি মামলায় বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুর বক্তব্য নেওয়া হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

আজ শুনানির একপর্যায়ে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, যারা জনগণের টাকা পাচার করে, তারা খুবই চালক। তারা পাচার করা অর্থ গোপন করতে অত্যাধুনিক কৌশল ব্যবহার করে।

অভিযুক্ত মোহাম্মদ আলীর আইনজীবী এস এম আবুল হোসেন হাইকোর্টকে বলেন, বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির মামলা নিয়ে দুদক নাটক করছে।

তিনি বলেন, দুদক নিজেই দুর্নীতিবাজ, কারণ তারা আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে ১২টি মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করেছে। কিন্তু, কোনো মামলার অভিযোগপত্র জমা দিতে পারেনি।

২০১৯ সালের ৯ জুন থেকে দীর্ঘ সময় কারাগারে থাকার কথা জানিয়ে মোহাম্মদ আলীর জামিন মঞ্জুরের জন্য হাইকোর্টের কাছে আবেদন করেন আবুল হোসেন।

তবে, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে তছরুপের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আছে বলে জামিনের বিরোধিতা করেন।

তিনি বলেন, মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে ৪২৪ কোটি টাকার মোট ১২টি মামলা আছে।

দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান মঙ্গলবার হাইকোর্ট বেঞ্চে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবেন বলে জানা গেছে।

Comments

The Daily Star  | English

Beyond Dollar: Bangladesh to seek over 36b yuan in Chinese loans

Bangladesh is going to seek more than 36 billion yuan, equivalent to $5 billion, as soft loans from China to reduce pressure on its dollar reserves.

4h ago