আগামী জানুয়ারিতে ফাইনাল খেলা হবে: কাদের

ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

নেতাকর্মীদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'আগামী জানুয়ারিতে ফাইনাল খেলা হবে।'

তিনি বলেন, 'আন্দোলনেও খেলা হবে, নির্বাচনেও হবে।'

আজ রোববার রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির (জেপি) সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।

রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পারিক সম্পর্কের দূরত্ব নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'রাজনৈতিক কর্মসম্পর্কটা আমাদের থাকা উচিত ছিল। তা না হলে গণতন্ত্র বাঁচতে পারে না। গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হলে শক্তিশালী বিরোধী দলও দরকার। আমাদের দেশে এখানেই সবচেয়ে বড় দুর্ভাগ্য যে, আমরা নষ্ট রাজনীতির কাছে অনেকে বারেবারে আত্মসমর্পণ করেছি।'

'নষ্ট রাজনীতি নষ্ট মানুষ-নষ্ট রাজনীতিকের জন্ম দেয়। নষ্ট রাজনীতিকরা নষ্ট রাজনীতিকে বাঁচিয়ে রাখে। বাংলাদেশের অবস্থা হয়েছে ঠিক তাই। এত বিভেদ আমাদের রাজনীতিতে! এ জন্য তো আমরা মুক্তিযুদ্ধ করিনি! মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ছিল যে বাংলাদেশ, আজকে সেই বাংলাদেশ কি আমরা রাখতে পেরেছি? কোথায় পাব,' প্রশ্ন রাখেন তিনি। 

কাদের বলেন, 'আজকে রাজনীতিতে ভালো মানুষ আসতে চায় না। আমরা রাজনীতিকরা রাজনীতিকে ভালো মানুষদের জন্য আকর্ষণীয় করে তুলতে পারিনি। যে কারণে আজকে ভালো, শিক্ষিত, সৎ, যোগ্য মানুষ রাজনীতির ধারের কাছেও নেই। আসতে চান না। আমরা যারা রাজনীতি করি, এ ব্যর্থতার দায় স্বীকার করতেই হবে।'

তিনি বলেন, 'একই অবস্থা আমাদের ছাত্র রাজনীতিতে। ছাত্র রাজনীতি সুনামের ধারায় আসতে পারেনি, যে সুনামের ধারায় আমাদের নেতারা ছাত্র রাজনীতি করেছেন। সেই ধারাটি আজ কোথায় হারিয়ে গেছে। খারাপ লোকের হাতে রাজনীতি থাকলে দেশ খারাপ হয়ে যাবে; খারাপ লোকেরা মন্ত্রী, এমপি হবে, দেশ চালাবে। এতে দেশের ভালো হবে না।'

ভালো লোকদের রাজনীতিতে আনতে হবে বলেও এ সময় মন্তব্য করেন তিনি।

শরিক দলকে মান-অভিমান ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, 'বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হবে। নেপোলিয়ন বলেছিলেন, আমরা বিজয়ী হয়েছি কিন্তু বিজয়কে সংহত করতে পারিনি। আমাদের বিজয়ও সুসংহত নয়। বিজয়কে সুসংহত করতে হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ভুল-ত্রুটি আমাদের সবার আছে কিন্তু তারপরও এ দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্র, উন্নয়ন-অর্জনকে বাঁচাতে হলে ক্ষমতার মঞ্চে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। এটা হলো বাস্তবতা।'

খেলা হবে প্রসঙ্গে যা বললেন ওবায়দুল কাদের

খেলা হবে একটি পলিটিক্যাল হিউমার মন্তব্য করে কাদের বলেন, 'অনেকে বাঁকাভাবে দেখে। আমি যেখানেই যাই, ছোট ছোট বাচ্চারা ফুল বিক্রি করে তারা গাড়ি দেখলেই বলে খেলা হবে। এটা আসলে একটি পলিটিক্যাল হিউমার। উইকিপিডিয়াতেও এটা অন্তর্ভুক্ত আছে। এটা খারাপভাবে নিলে খারাপ।

'পশ্চিমবঙ্গে গত নির্বাচনের পুরোটায় একটা স্লোগান ছিল। যে স্লোগান মমতা ব্যানার্জী শুরু করেছিলেন, একই স্লোগান নরেন্দ্র মোদি কাউন্টার করেছিলেন। ১৩০ কোটি লোকের দেশ ভারত। সেখানে এত পত্রিকা, মিডিয়া, কেউ কিন্তু এটাকে নিয়ে কটাক্ষ করেনি। যাক, আমাদের দেশে হয়তো অনেকে ভুল বুঝেছেন। আমি জনগণকে আকৃষ্ট করতে স্লোগান দিচ্ছি। জনগণ গ্রহণ করেছে, সেই স্লোগান দিতে আমার অসুবিধা কোথায়! খেলা হবে। আন্দোলনেও হবে, নির্বাচনেও হবে,' বলেন কাদের।

নেতাকর্মীদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'খেলা হবে ভোট চুরির বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে। আগামী জানুয়ারিতে ফাইনাল খেলা হবে।'

ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশনে জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, ওয়ার্কাস পাটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দীলিপ বড়ুয়া, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম, গণতান্ত্রিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খানসহ ১৪ দলের নেতারা বক্তব্য রাখেন।

জাতীয় পার্টি (জেপি) সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, 'আমরা যাদের প্রতিহত করতে চাচ্ছি, তাদের সন্তানরা আমাদের দলের অনেক জায়গায় বসে আছেন। আর আমরা এখানে বসে তাদের প্রতিরোধ করার কথা বলছি। এই আমাদের দ্বন্দ্ব।'

Comments

The Daily Star  | English

22 sectors still pay wages below poverty line

At least 22 sectors in Bangladesh continue to pay their workers much less than what is needed to meet basic human needs.

6h ago