রমজানে ১ কোটি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেওয়ার পরিকল্পনা

আসন্ন রমজানে মানুষ চাল নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়বে না বলে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, রমজানে বিশেষ প্রোগ্রাম হিসেবে ভিজিএফের আওতায় ১ কোটির বেশি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার।

তিনি বলেন, রমজানে বিশেষ প্রোগ্রাম হিসেবে ভিজিএফের আওতায় ১ কোটির বেশি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে, আশা করছি বোরোতে বাম্পার ফলন হবে। ফলে দেশে চাল আমদানির আর প্রয়োজন হবে না বলে আমি মনে করি। 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, 'সামনে রমজান মাস, খাদ্য মন্ত্রণালয় মূলত রেশনিং, কাবিখা, টিআর, ওএমএস কর্মসূচির চাল বিতরণ করে থাকি। বিতরণের ক্ষেত্রে স্বাধীনতার পর থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে সর্ববৃহৎ বিতরণ ব্যবস্থা চলছে। ২৫০০ ডিলারের মাধ্যমে চাল ও আটা প্রতিনিয়তই বিতরণ চলছে। হিসাব অনুযায়ী এ সময় ওএমএস বন্ধ থাকে। শুধু সিটিতে কিছু থাকে। বর্তমানে আমাদের সিটি, জেলা উপজেলা ও পৌরসভাগুলোতে চলছে। ওএমএসের আওতায় যারা নিম্ন আয়ের লোক তারা ৩০ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি চাল ও ২৪ টাকা কেজি দরে ৩ কেজি আটা পাচ্ছে।'

তিনি বলেন, 'আগামী ১ মার্চ থেকে ৫০ লাখ পরিবারকে ১৫ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া শুরু হবে। এটা বছরে ৫ মাস চলে, মার্চ, এপ্রিল, মে, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে দেওয়া হয়। আমাদের ওএমএসে ১ কোটির ওপরে পরিবার বছর জুড়েই ৫ কেজি চাল ও ৩ কেজি আটা পাবে।'

এছাড়া, রমজানে বিশেষ প্রোগ্রাম হিসেবে ভিজিএফের আওতায় ১ কোটির বেশি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। সেখানে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা আতপ চাল দেওয়া হবে।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের বেসরকারি আমদানি খোলা রয়েছে। তবে কম আসছে। কারণ দেশে এখন প্রচুর চাল আছে। সরকারি মজুতও প্রচুর রয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে আমাদের বিতরণ যেমন অনেক বেশি পাশাপাশি মজুতও সবচেয়ে বেশি রয়েছে। বর্তমানে আমাদের ২০ লাখ ৩৩ হাজার ৯২৮ মেট্রিক টন মজুদ রয়েছে। আমাদের যেমন বিতরণ হচ্ছে তেমনি সংগ্রহও হচ্ছে। প্রতিদিন ৪-৫ হাজার টন চাল সংগ্রহ হচ্ছে। যদিও আমাদের ৫ লাখ মেট্রিক টন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল সেখানে আমাদের ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৩০ মেট্রিকটন চাল সংগ্রহ হয়েছে। চুক্তি হয়েছিল ৪ লাখ ৬২ হাজার ৪৭৩ মেট্রিক টন। ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আমরা আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারব। আমাদের অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ ও মজুদ ভালো।

তাহলে ধান সংগ্রহ হয়নি কেন জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ধান সংগ্রহের জন্য সরকার যে রেট নির্ধারণ করে দেয়। কারণ কৃষকরা যেন মিলার, মজুদদার বা খরিদদারের কাছে প্রতারিত না হয়। বাজারে যদি দাম কম থাকে তাহলে কৃষকরা সরকারের কাছে বিক্রি করে লাভবান হতে পারে। এ বছর সরকারি মূল্য থেকে বাজারে মূল্য বেশি থাকায় কৃষকদের সরকারের কাছে ধান দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা নেই। কারণ কৃষকরা তাদের কাঙ্ক্ষিত মূল্য বাজারেই পাচ্ছে। অতএব প্রসার দিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে ধান নিতে চাই না। আমি মনে করি কৃষকরা খুব ভালো আছে, সুখে আছে। 

বৈশ্বিক সংকটের চ্যালেঞ্জগুলো কোথায় জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দেশনার কারণে আমাদের দেশে বৈশ্বিক সংকটের তেমন কোনো প্রভাব ফেলেনি এবং ফেলতে পারবে না। আমনে বাম্পার ফলন হয়েছে, কোনো দুর্বিপাক না হলে বোরোতেও বাম্পার ফলন হবে। ফলে আমদানির আর প্রয়োজন হবে না বলে আমি মনে করি।

চালের দাম কমছে না কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজারে সব কিছু যদি বিচার বিশ্লেষণ করেন যেমন,-ডলারের দাম, উৎপাদন খরচ সব কিছু বিবেচনা করলে আমি মনে করি বৈশ্বিক এই সংকটে চালে দাম স্থিতিশীল আছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরে যে হাহাকার নেই, এটাই আমাদের জন্য অনেক বড় পাওনা। 

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সাধারণ মানুষের জন্য তো ওএমএস, কাবিখা আছে। আর অসাধারণের জন্য অ্যারোমেটিক, প্যাকেট, সিলকি আছে। তাহলে মধ্যবিত্তরা কোথায় যাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওএমএস কি শুধু সাধারণ মানুষ যায়, সেখানে অনেক মধ্যবিত্তও যাচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English

Dengue testing fees to remain Tk 50 in govt hospitals

DGHS issues circular extending the fixed charges for dengue tests till Dec 31

26m ago