ডব্লিউএফপি

অর্থ সংকটে রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা কমছে

রোহিঙ্গা ক্যাম্প
রোহিঙ্গা ক্যাম্প। স্টার ফাইল ফটো

রোহিঙ্গা সংকটের প্রায় ৬ বছর পর প্রথমবারের মতো কক্সবাজারে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তার পরিমাণ কমিয়ে আনতে বাধ্য হচ্ছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)।

আজ শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, অনুদানে ১২ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার কম থাকায় আগামী ১ মার্চ থেকে প্রত্যেক রোহিঙ্গার জন্য ডব্লিউএফপির ১২ ডলারের খাদ্য সহায়তার পরিমাণ কমিয়ে ১০ ডলার করা হবে।

বাংলাদেশে ডব্লিউএফপির কান্ট্রি ডিরেক্টর ডম স্কালপেল্লি বলেন, 'এটি একটি বড় ধরনের বিপর্যয়। অন্যান্য অতি জরুরি সেবাগুলো সংকুচিত হয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে খাদ্য সহায়তায় এই পরিবর্তনের (মাত্র ২ ডলার হলেও) প্রভাব হবে মারাত্মক।'

ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ খুবই সীমিত। খাদ্য ও অন্যান্য জরুরি প্রয়োজন মেটাতে রোহিঙ্গারা মানবিক সহায়তার ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল বলে জানিয়েছে ডব্লিউএফপি।

সংস্থাটি জানায়, ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসা শুরু করলে ডব্লিউএফপি দাতাগোষ্ঠী ও অংশীদার সংস্থাগুলোর সহায়তায় তাদের জন্য খাদ্য ও পুষ্টিসহ অন্যান্য অতি জরুরি সহায়তা দিয়ে আসছে।

বর্তমানে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার প্রত্যেককে ভাউচারের মাধ্যমে প্রতিমাসে ১২ মার্কিন ডলার সমমূল্যের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এই ভাউচার ব্যবহার করে রোহিঙ্গা পরিবারগুলো সবগুলো ক্যাম্পে অবস্থিত ডব্লিউএফপির আউটলেট থেকে খাবার বেছে নিতে পারে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৯৫ শতাংশ রোহিঙ্গা পরিবার পর্যাপ্ত খাবার খেতে পারে না এবং এ কারণে ক্যাম্পগুলোতে ব্যাপকভাবে অপুষ্টি দেখা যায়। শিশুদের ক্ষেত্রে ক্যাম্পে গ্লোবাল অ্যাকিউট ম্যালনিউট্রিশনের হার ১২ শতাংশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশে জরুরি হার '১৫ শতাংশের' কম হলেও, এটিও বিপজ্জনক হিসেবে ধরা হয়। প্রায় ৪০ শতাংশের মতো শিশুর সঠিক শারীরিক বিকাশ ও বৃদ্ধি হয় না। অন্তঃসত্ত্বা ও সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন এমন নারীদের ৪০ শতাংশই রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন। আর এটি সহায়তার পরিমাণ কমানোর আগের অবস্থা।

কান্ট্রি ডিরেক্টর স্কালপেল্লি বলেন, 'প্রতিবার খাদ্য সহায়তা কমানোর সঙ্গে সঙ্গে অনিবার্যভাবে অপুষ্টির পরিমাণ বাড়বে। খাদ্য সহায়তা কমানোর সঙ্গে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পরিবারগুলো বিপজ্জনক পথ বেছে নিতে থাকবে। এর সবচেয়ে খারাপ প্রভাব পড়বে নারী, কিশোরী ও শিশুদের ওপর।'

'গুরুত্বপূর্ণ যে মানবিক সহায়তার ওপর তারা নির্ভরশীল, আমাদেরকে অবশ্যই তা অক্ষুণ্ণ রাখতে সাধ্যের সবটুকু করে যেতে হবে,' বলেন তিনি।

দ্রুত অনুদান না পেলে এ বছর খাদ্য সহায়তার পরিমাণে এমন আরও কাটছাঁট হতে পারে বলেও জানিয়েছে ডব্লিউএফপি।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus meets Chinese ambassador to review China visit, outline next steps

Both sides expressed a shared commitment to transforming discussions into actionable projects across a range of sectors

5h ago