সীতাকুণ্ডে অক্সিজেন প্ল্যান্ট বিস্ফোরণ

‘হঠাৎ আকাশ কাঁপানো শব্দে চারপাশ অন্ধকার হয়ে যায়’

বিস্ফোরণে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কদমরসুলে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্ট। ছবি: রাজীব রায়হান

'তখন বিকেল ৪টা ২০ মিনিট। আমার দোকানে অক্সিজেন প্ল্যান্টের চার জন শ্রমিক এবং আশপাশের এলাকার আরও কয়েকজন ক্রেতা ছিল। হঠাৎ আকাশ কাঁপানো শব্দ। মুহূর্তেই চারপাশ অন্ধকার হয়ে যায়। দোকানের কাঁচ ভেঙে যায় আর লোহার বিশাল পাত দোকানের সামনে এসে পড়ে। কানে হাত দিয়ে শুধু মা মা বলে চিৎকার করেছি।'

কথাগুলো বলছিলেন সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকায় সীমা রি-রোলিং মিলের অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণে আহত ২৪ বছরের নাইম পারভেজ। ঘটনার সময় ফ্যাক্টরির ফটকের বিপরীত দিকে দোকানের ভেতরে বসে ছিলেন তিনি। বিস্ফোরণস্থল থেকে তার দোকানের দূরত্ব বড়জোর ৩০ হাত।

বিস্ফোরণের বিভীষিকা বর্ণনা করে পারভেজ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিস্ফোরণ এত ভয়াবহ ছিল যে মুহূর্তেই চারপাশ অন্ধকার হয়ে যায়। আমি চোখে কিছু দেখছিলাম না। ছিটকে কোথায় পড়েছি তাও মনে নেই। শুধু কানে হাত দিয়ে বাঁচার জন্য মা মা বলে চিৎকার করছিলাম।'

নাইম পারভেজ

'ঘোর কাটলে দেখি একজন আমার দোকানের সামনে পড়ে আছে। পরে তাকে তুলে উদ্ধার করি। আমি কানে কিছু শুনছি না। কানের পর্দা ফেটে গেছে কিনা তাও বুঝছি না,' বলেন নাঈম পারভেজ। ভাঙা কাঁচের আঘাতে তার পা কেটে গেছে।

পারভেজের বাবা কবির হোসেন আট হাজার টাকা ভাড়ায় এই দোকান চালান। ওই এলাকায় ১৭ বছর ধরে ব্যবসা করছেন তারা।

দোকান পরিষ্কার করতে করতে কবির বলেন, এই ফ্যাক্টরিতে পালা করে কাজ চলে। পাঁচটি প্ল্যান্টের মধ্যে চারটি নষ্ট। একটিতে সিলিন্ডার ফিলিং কাজ চলে। প্ল্যান্টের নিজস্ব কর্মচারী ছাড়াও সিলিন্ডার ওঠানো-নামানোর জন্য ড্রাইভার এবং অন্যান্য শ্রমিক কাজ করেন।

বিস্ফোরণের ভয়াবহতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, 'দোকানের সামনে রাস্তার ওপর বড় বড় লোহার অ্যাঙ্গেল পড়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি হেলে গেছে। চা নাস্তা খেতে শ্রমিকরা আমাদের দোকানেই মূলত আসে। আমার ছেলে যে বেঁচে আছে এতেই আমি খুশি', বলেন কবির।

Comments

The Daily Star  | English

Why was July 2025 wetter in Bangladesh?

Bangladesh experienced three low-pressure systems on July 7, July 14 and July 24 which led to heavy rain

25m ago