বিলিভ ইট অর নট

ফিলিপাইনে ঝুলন্ত কবরস্থান

ফিলিপাইনে ঝুলন্ত কবরস্থান
ছবি: সংগৃহীত

সমাধি বললে আপনার চোখে কী ভেসে ওঠে? মাটিতে সমাহিত কোনো একজন মানুষ, তার কবরের পাশে একটি ফলক বা সাইনবোর্ড, কখনো কখনো হয়তো দেখা যায় কবরটি বাঁধানো হয়েছে সুন্দরভাবে। কিন্তু যদি জানতে পারেন এমন কোনো গোরস্থানের কথা, যেটি পাহাড়ের খাঁজজুড়ে রয়েছে! 

অবাক হবেন না। সত্যই এমন সমাধিক্ষেত্র আছে। ফিলিপাইনের সাগাদায় পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে আছে এমন অনেক কফিন। ঝুলন্ত এই কফিনগুলোয় শুয়ে আছেন সেখানকার এক আদিবাসী গোষ্ঠীর মানুষেরা। এমনভাবে সমাধি তৈরির পেছনে রয়েছে অদ্ভুত এক বিশ্বাস। 

বহু প্রাচীন কাল থেকেই সেখানকার আদিবাসীদের বিশ্বাস ছিল মৃতরা ভূমি  থেকে যতটা ওপরে থাকবেন কিংবা থাকবেন আকাশের যতটা কাছাকাছি; ততই সদগতিপ্রাপ্ত হবে তাদের আত্মা। আর তাই তাদের মৃতদেহ বহন করা কফিনগুলোকে পাহাড়ি খাঁজের এমন উঁচু বিন্দুগুলোয় যুক্ত করে রাখা হয়েছে, যেখানে পৌঁছনো মানুষের পক্ষে কার্যত অসম্ভব। আর এ কারণেই এই অদ্ভুত সমাধিক্ষেত্রটি হয়েছে পর্যটকদের কাছে চমকপ্রদ এক আকর্ষণের কারণ। 

উঁচু..... কতটা উঁচু?

হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসছে এই রীতির অনুশীলন। বর্তমানে এই প্রথার প্রচলন নেই বললেই চলে। তবে কয়েক বছর পর পর হয়তো পাহাড়ি খাঁজে দেখা যায় নতুন কোনো কবর! 

এটি যখন করা হয়, লাশটিকে খুব শক্তভাবে ফেব্রিক দিয়ে বাঁধা হয়। এরপর পাহাড়ের খাঁজে যুক্ত কফিনে চিরনিদ্রায় শায়িত করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। 

লক্ষ্য করলে দেখা যায়, কিছু কিছু কফিন অপেক্ষাকৃত ছোট। না, এটি শিশুদের জন্যই তা নয়। এর পেছনেও ছিলো অদ্ভুত আরেক বিশ্বাস। তারা মনে করতেন, জন্মের সময় মানুষ যেমন ছোট থাকে, মৃত্যুর পরও তার দেহের আকৃতি তেমন হলেই ভালো হয়। তাই হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে শরীরের হাড় ভেঙে দিয়ে লাশের আকৃতি সংক্ষিপ্ত করে ফেলা হতো। 

সব কফিনই চিহ্নিত 

প্রায় সব কফিনেই উল্লেখ করা আছে এর ভেতর শায়িত ব্যক্তিটির নাম। সময় বয়ে যাবার সঙ্গে সঙ্গে, অনেক কফিনে ঘুন বা পচন ধরে, এক সময় বিভিন্ন অংশ ভেঙে পড়তে পড়তে পুরো কফিনটিই নিচের ভূমিতে ধপ করে পড়ে যায়। তবে উপরে টিকে থাকা কফিনগুলোর ভেতর অনেকগুলো এক শতাব্দী বা তার বেশি প্রাচীন! 

যখন থেকে এই অদ্ভুত সমাধিক্ষেত্রের কথা ছড়িয়েছে, তখন থেকেই নানা জায়গা থেকে পর্যটকরা এখানে আসছেন। তবে তাদের খুব একটা বেগ পেতে হয় না। স্থানীয় মানুষেরাই তাদের সহায়তা করেন পাহাড়ে উঠতে ও কফিনগুলো দেখতে। আর এই দেখার মাধ্যমে আপনারাও ধারণা পেতে পারেন তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে। 

 

তথ্যসূত্র: রিপলিস বিলিভ ইট অর নট
গ্রন্থনা: মাহমুদ নেওয়াজ জয় 

 

Comments

The Daily Star  | English
remittance earning of Bangladesh

Bangladesh’s forex reserves cross $25b again

However, as per BB’s calculation, the figure stands at $30.07 billion

3h ago