‘হত্যা মামলার আসামি’র ডাকে সাকিবের দুবাই যাওয়া ‘অনৈতিক-বেআইনি’

‘আর সাকিব যদি বলেন যে, তিনি বিষয়টি জানেন না, একজন ব্যবসায়ী তাকে ডেকেছেন তাই তিনি গেছেন, তাহলে সেটি তাকে প্রমাণ করতে হবে। অবশ্যই এখানে সাকিবের দায় আছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে।’
পলাতক আসামি আরাভ ওরফে রবিউল (বামে) ও সাকিব আল হাসান (ডানে)। ছবি: সংগৃহীত

আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম যে হত্যা মামলার পলাতক আসামি, সেই বিষয়টি সাকিব আল হাসানকে আগেই জানানো হয়েছিল বলে দাবি করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বিষয়টি জানার পরও সাকিবের যাওয়াটা 'দুঃখজনক' বলে মন্তব্য করেছে পুলিশ।

জানার পরও হত্যা মামলার এক পলাতক আসামির স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করতে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে দ্য ডেইলি স্টার কথা বলেছে বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ নুরুল হুদা, জাতীয় সংসদের হুইপ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস এবং সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়ার সঙ্গে।

তারা প্রত্যেকেই মনে করছেন, জানার পরও হত্যা মামলার এক পলাতক আসামির স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করতে যাওয়াটা সাকিবের ঠিক হয়নি। বিষয়টি সম্পূর্ণ অনৈতিক এবং সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার নেওয়ার সুযোগ আছে বলেও অনেকে মনে করছেন।

মোহাম্মদ নুরুল হুদা, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, রোবায়েত ফেরদৌস ও জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। (বাম দিক থেকে)

সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, 'সামাজিকভাবে যদি বলি তাহলে, সাকিব আল হাসানের দুবাই গিয়ে আরাভ খানের স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করাটা উচিত হয়নি। তবে সাকিবকে তা জানানো হয়েছিল কি না সেটিও দেখার বিষয়। সাকিবকে কি জানানো হয়েছিল যে, আরাভ খান খুনের মামলার আসামি নাকি অভিযুক্ত সেই বিষয়গুলোও ভাবতে হবে।'

আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, 'সাকিব আল হাসান আমাদের জাতীয় সম্পদ। নিশ্চয় তিনি বিষয়টি সম্পর্কে সম্যক অবহিত হলে এ ধরনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে সাবধান হবেন।'

অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, 'সাকিব আল হাসান তরুণদের কাছে রোল মডেল। বিষয়টি জানার পরও দুবাই গিয়ে আরাভ খানের স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করাটা অনৈতিক। তিনি এর আগেও এমন অনেক অনৈতিক কাজ করেছেন, যা তার কাছে আশা করা যায় না।'

আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, 'জানার পরও জ্ঞাতসারে কেউ চুরির মাল রাখলে চুরির সহযোগী হিসেবে যেমন সমান অপরাধে অভিযুক্ত হবেন, তেমনি সাকিব আল হাসান যদি জানেন যে, আরাভ খান খুনের মামলার পলাতক আসামি এবং তা জেনেও যদি তিনি গিয়ে থাকেন তাহলে তাকে সেই মামলায় সহযোগী হিসেবে গ্রেপ্তার করা সম্ভব।'

'আর সাকিব যদি বলেন যে, তিনি বিষয়টি জানেন না, একজন ব্যবসায়ী তাকে ডেকেছেন তাই তিনি গেছেন, তাহলে সেটি তাকে প্রমাণ করতে হবে। অবশ্যই এখানে সাকিবের দায় আছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে,' যোগ করেন তিনি।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানিয়েছেন, সাকিব আল হাসানদের আরাভ খানের বিষয়টি অবগত করার পরও তারা 'আরাভ' নামের স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করেছেন, সেটা দুঃখজনক। তদন্তের স্বার্থে যদি প্রয়োজন মনে করি, তাহলে সাকিব, হিরো আলমদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।

Comments