নারায়ণগঞ্জে আধিপত্য নিয়ে দ্বন্দ্ব, প্রতিপক্ষের হামলায় যুবক নিহত

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের বন্দর অঞ্চলের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের রূপালী আবাসিক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে
মো. মেরাজুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের বন্দরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় মো. মেরাজুল ইসলাম (২৮) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আলামিন (২৭) নামে আরেকজন।

সোমবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের বন্দর অঞ্চলের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের রূপালী আবাসিক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

হতাহত ২ জনই ২০ দিন আগে ২ বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলার আসামি ছিলেন। গত ১৩ মার্চ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বন্দরের নূরবাগ এলাকার রাজু আহমেদ ওরফে স্ট্যান্ড রাজু এবং চিনারদী এলাকার আকিব হাসান রাজু ওরফে চুইল্লা রাজু বাহিনীর মধ্যে ওই সংঘর্ষে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের স্বজনরা জানান, সোমবার সন্ধ্যায় ইফতারের সময় রূপালী আবাসিক এলাকায় মেরাজের ওয়ার্কশপে ধারালো অস্ত্রসহ একদল সন্ত্রাসী ঢুকে তাকে ও তার বন্ধুকে কুপিয়ে জখম করে। গুরুতর জখম অবস্থায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে মেরাজ সেখানে মারা যায়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মেরাজুল। আল আমিন নামে অপরজন চিকিৎসাধীন আছেন।

নিহত মেরাজুল বন্দরের ছালেহনগর এলাকার আজহারুল ইসলামের ছেলে। আহত আল আমিন রুপালী আবাসিক এলাকার জাভেদ মিয়ার ছেলে।

স্থানীয় সোয়েব ও রবিনের নেতৃত্বে মানিক, রানা ও নাদিমসহ কয়েকজন মিলে ধারালো অস্ত্রসহ মেরাজুল ও আলামিনের উপর হামলা চালায় হয় বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের স্বজনরা।

অভিযুক্তদের মধ্যে সোয়েব ও রবিন স্থানীয় কাউন্সিলর শাহীন মিয়ার চাচাতো ভাই। অভিযুক্ত যে কয়জনের নাম এসেছে তারা সবাই চিনারদীর রাজুর অনুসারী বলে জানান স্থানীয়রা।

নিহতের ভাই মো. সম্রাট বলেন, 'হামলাকারীদের মধ্যে কাউন্সিলরের আত্মীয়-স্বজনও আছে। ওদের সঙ্গে ড্রেজার ব্যবসা নিয়া আমার ভাইয়ের ঝগড়া ছিল।'

তিনি আরও জানান, হামলা ঘটনা যারা দেখেছে, তারা জানিয়েছে হামলাকারীদের মুখ বাঁধা ছিল।

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, বন্দরের নূরবাগের রাজু আহমেদ ও চিনারদীর আকিব হাসান রাজুর উভয় বাহিনীকে বন্দরের যুবলীগ নেতা খান মাসুদ নিয়ন্ত্রণ করেন। গত ১৩ মার্চ সংঘর্ষের পর উভয়পক্ষ দু'টি মামলা করে থানায়৷ আকিব হাসান রাজুর পক্ষের মামলায় নিহত মেরাজ সাত নম্বর এবং আহত আলামিন পাঁচ নম্বর আসামি ছিলেন৷ সম্প্রতি হাইকোর্ট থেকে জামিন নেবার পর এলাকায় ফিরলে সোমবার সন্ধ্যায় তাদের উপর হামলার ঘটনা ঘটলো৷

নিহত মেরাজ ও আহত আলামিন দু'জনই রাজু আহমেদ ওরফে স্ট্যান্ড রাজুর অনুসারী৷ গত ১৩ মার্চের ওই সংঘর্ষের জেরেই এ হামলা হয়েছে বলে ধারণা স্থানীয়দের৷

এদিকে মেরাজের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে রাতে তার পক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষের উপর হামলা ও স্থানীয় কাউন্সিলরের বাড়ি ও কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে৷

রাত সাড়ে ১১টায় বন্দর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আবু বক্কর সিদ্দিক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এলাকায় পুলিশ আছে। ঠিক কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে সে বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করছে। হতাহতের ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি।'
 

Comments